উৎপাদন শুল্ক ছাঁটার দাবি জোরদার

তেলের দর আগুন, পুড়ছে ‘অচ্ছে দিন’

রাজনীতির আকচাআকচি যা-ই থাক, তেলের দাম এ ভাবে নাগাড়ে বাড়তে থাকায় প্রমাদ গুনছেন দেশসুদ্ধ মানুষ। বাড়ছে সমালোচনা। দামে কিছুটা অন্তত সুরাহা দেওয়ার জন্য উৎপাদন শুল্ক কমানোর দাবিও উঠেছে সব মহলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৬
Share:

সাধারণ মানুষের অস্বস্তি বাড়িয়ে শুক্রবারই পুরনো সব নজির ভেঙে ফেলেছিল ডিজেলের দাম। পৌঁছে গিয়েছিল এমন উচ্চতায়, যেখানে আগে কখনও তা পৌঁছয়নি। পিছিয়ে ছিল না পেট্রলও। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরের পরে তার দর সব চেয়ে বেশি চড়েছিল সে দিনই। শনিবার দুই জ্বালানিরই দাম বেড়েছে আরও। ডিজেল ১৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮.১৬ টাকা। আর পেট্রল ১৩ পয়সা বেড়ে ৭৬.৯১ টাকা। ফলে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এই কি তবে ‘অচ্ছে দিন’? মনমোহন জমানায় তেলের দাম বাড়লে প্রবল আক্রমণ শানাতেন নরেন্দ্র মোদী। প্রশ্ন তুলতেন, আমজনতার ভোগান্তি নিয়ে। এখন সেই প্রশ্নই তাঁর দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছে বিরোধী কংগ্রেসও।

Advertisement

রাজনীতির আকচাআকচি যা-ই থাক, তেলের দাম এ ভাবে নাগাড়ে বাড়তে থাকায় প্রমাদ গুনছেন দেশসুদ্ধ মানুষ। বাড়ছে সমালোচনা। দামে কিছুটা অন্তত সুরাহা দেওয়ার জন্য উৎপাদন শুল্ক কমানোর দাবিও উঠেছে সব মহলে।

এই পরিস্থিতিতে পেট্রলিয়াম মন্ত্রকের দাবি, দেশে পেট্রল, ডিজেলের দাম এখন আর সরকার নিয়ন্ত্রণ করে না। বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই তা মাথা তুলেছে। তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় চার বছরে সর্বোচ্চ অঙ্কে পৌঁছেছে অশোধিত তেল। ফলে ভারতে তার প্রভাব পড়ছে।’’

Advertisement

কিন্তু প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের প্রশ্ন, ‘‘চার বছর আগে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ছিল ব্যারেল প্রতি ১০৫ ডলার। আর এখন তা ৭৪ ডলার। তা হলে দেশে এখন পেট্রল-ডিজেলের দর ২০১৪ সালের মে মাসের তুলনায় বেশি কেন?’’ তাঁর কটাক্ষ, বিজেপি সরকারের নীতিই হল ক্রেতাদের উপর কর চাপানো।

বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী জমানায় শুরুর দিকে যখন অশোধিত তেলের দাম কম ছিল, সেই সময় উৎপাদন শুল্ক, সেস বাড়িয়ে জ্বালানির দর একই রেখেছিল কেন্দ্র। সেই খাতে মোটা আয় ঘরে তুলেছে তারা। চিদম্বরমের কথায়, ‘‘চার বছর ধরে বিজেপি সরকার তেলের দামের উপহারে ভরসা করে বেঁচেছে।’’ এখন তাই দাবি উঠছে সেই শুল্ক কমানোর।

বিশ্ব বাজারে চাহিদার তুলনায় বেশি জোগান যাতে দাম তলানিতে নিয়ে না যায়, তাই তেল সরবরাহ ছাঁটাইয়ের পথেই অনড় ওপেক। ফলে দর বাড়ছে। সৌদি আরবের মতো অন্যতম প্রধান তেল রফতানিকারী দেশ চাইছে, তা আগামী দিনে ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলারে পৌঁছক।

আবার এর আগে তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দাবি তুলেছিলেন, রাজ্যগুলি ভ্যাট ছেঁটে তেলের দাম কমাক। পেট্রপণ্যকে জিএসটি-র আওতায় আনা হোক। এ দিনও তেলকে জিএসটিতে সামিলের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। বলেন, ‘‘দাম নিয়ে চিন্তিত সরকার। আমাদের পেট্রপণ্যকে জিএসটির আওতায় আনতেই হবে। কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি ধীরে ধীরে সেই দিকেই এগোচ্ছে।’’

পাল্টা যুক্তিতে চিদম্বরম অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘বিজেপি ২২টি রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার বড়াই করে। তা হলে সরকারই কেন সেগুলিকে জিএসটির আওতায় আনছে না?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন