প্রতীকী ছবি।
একটানা লাফিয়ে প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনার (২৪ ক্যারাট) দাম যে ভাবে এক সময় ৫৬ হাজার পেরিয়ে গিয়েছিল, ঠিক তেমন ভাবেই এখন পড়ছে। মাত্র মাস সাতেকের তফাতে কলকাতায় ১১,৮৬০ টাকা কমে শুক্রবার তা ফিরেছে ৪৫,১০০ টাকায়। জুলাইয়ে ৫০ হাজার টাকা পার হওয়া ১০ গ্রাম গয়নার সোনাও (২২ ক্যারাট) নেমেছে ৪২,৮০০ টাকায়। যদিও স্বর্ণ শিল্পমহলের দাবি, এখনও গয়নার বাজারে ক্রেতার তেমন দেখা মেলেনি।
সোনার কারবারিদের ধারণা, দাম আরও কমার আশাতেই অপেক্ষা করে আছেন অনেকে। একাংশ দায়ী করছেন অতিমারির জেরে চোট খাওয়া রুজি-রোজগারকে। তাঁদের দাবি, বিয়ে-থার প্রয়োজন বাদ দিলে অনেকের হাতেই বাড়তি টাকা নেই। থাকলেও খরচ করতে সাহস পাচ্ছেন না। ফলে শখের ক্রেতাদের বড় অংশই এখন উধাও।
বিশেষজ্ঞদের অবশ্য দাবি, করোনায় আর্থিক বাজার অনিশ্চিত ছিল বলে বহু লগ্নিকারী শুধু সুরক্ষিত সোনাকেই আঁকড়ে ধরেছিলেন। চাহিদা বাড়ায় সারা বিশ্বে তা দামি হয়। এখন অনিশ্চয়তা কাটছে। লগ্নি ভাগ হচ্ছে শেয়ার, বন্ড, বিদেশি মুদ্রাতেও। ফলে দাম কমায় পাকা সোনা হোক বা গয়না, কেনার সুযোগ আবার ফিরেছে। মূলধনী বাজার নিয়ে গবেষণাকারী ভিস্তা ইনটেলিজেন্সের এমডি অরিন্দম সাহা বলেন, ‘‘আমেরিকায় বন্ডের দাম কমে তার আয় (ইল্ড) বাড়ায় লগ্নিকারীরা বন্ড বাজারে ঝুঁকেছেন। বিশ্ব অর্থনীতি ঘুড়ে দাঁড়াতে শুরু করার পরে ডলারের দর বাড়ায় বিদেশি মুদ্রায় লগ্নির টানও বেড়েছে। ফলে সোনার চাহিদা স্তিমিত।’’ তবে তাঁর মতে, দাম আর বেশি পড়ার সম্ভাবনা কম।
বাজেটে সোনা আমদানিতে নিট হিসেবে ২.১০% শুল্ক কমেছে। জেজে গোল্ডের ডিরেক্টর এবং অল ইন্ডিয়া গোল্ড রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি হর্ষদ আজমেঢ়া বলছেন, এতে ১০ গ্রাম পাকা সোনা ১১০০ টাকা সস্তা হয়েছে। তার উপরে বিশ্ব জুড়ে সোনার খনিগুলি খুলে যাওয়ায় জোগানের ঘাটতিও দূর হয়েছে।
ভারতে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের এমডি সোমসুন্দরম পিআর-এর বার্তা, সোনায় লগ্নিতে ঝুঁকি কম। ফলে তা কেনার এটাই উপযুক্ত সময়।