থাবা নোটবন্দি, ই-কমার্সেরও

জিএসটিতে জৌলুসহীন পুজো-বাজার

পাল্লা দেওয়া কঠিন হয়েছে নেট বাজারের দেদার ছাড়ের সঙ্গেও। আর এই ত্র্যহস্পর্শেই এ বার রাজ্যে মার খেয়েছে পুজোর বাজার।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০৯
Share:

ফাইল চিত্র।

নোট বাতিলের জেরে ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি আগেই থাবা বসিয়েছিল চাহিদায়। তার উপর সমস্যা বাড়িয়েছে তড়িঘড়ি চালু হওয়া জিএসটি। পাল্লা দেওয়া কঠিন হয়েছে নেট বাজারের দেদার ছাড়ের সঙ্গেও। আর এই ত্র্যহস্পর্শেই এ বার রাজ্যে মার খেয়েছে পুজোর বাজার। শপিং মল থেকে শুরু করে গড়িয়াহাট, হাতিবাগান কিংবা নিউ মার্কেটের বিপণি— পুজোয় চুটিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পরে এরা প্রায় সকলেই এখন তাকিয়ে আলোর উৎসবের দিকে। তবে সেখানেও বিক্রিবাটা অন্য বছরের মতো জমজমাট হবে কি না, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দিহান তারা।

Advertisement

ব্যবসায়ী মহলের দাবি, সাধারণত সারা বছরের ব্যবসার প্রায় ৪০ শতাংশই হয় উৎসবের মরসুমে। এ রাজ্যে যেমন বড় অংশের উৎস পুজো। কিন্তু এ বছর মল, বড় বিপণি কিংবা ছোট দোকানে বিক্রি তেমন জমেনি। তা ছাড়া, গড়পড়তা মাসের থেকে সাধারণত অন্তত ২০% ব্যবসা বেশি হয় উৎসবের মাসগুলিতে। সে খানে এ বছর তা টেনেটুনে ১০%।

নোট নাকচের জেরে চাহিদায় টান তো ছিলই। সেই সঙ্গে ‘খলনায়ক’ হিসেবে নেট-বাজারের দেদার ছাড়ের দিকে আঙুল তুলছেন ব্যবসায়ীরা। রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (আরএআই) দাবি, এ বার পুজোয় জামা-কাপড় বিক্রি গত বছরের তুলনায় কম হয়েছে। বিশেষত চোখে পড়ার মতো চাহিদা কম ছিল তুলনায় বেশি দামের পোশাকের।

Advertisement

আরএআইয়ের কর্তা কুমার গোপালনের মতে, নেট-বাজার যা ছাড় দিয়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া ইঁট-কাঠের দোকানের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। তা ছাড়া, জিএসটি চালুর পরে দাম বাড়লে তার জেরে ক্রেতারা মুখ ফেরানোর আশঙ্কায় মোটা ছাড় দিতে বাধ্য হয়েছে অনেক নামী ব্র্যান্ডও। সংগঠনটির মতে, এখন উৎসবের কেনাকাটা তুঙ্গে থাকে মেরেকেটে দু’সপ্তাহ। এ বার সেই সময়টুকুতে ব্যবসা প্রত্যাশিত রকম না-হওয়া হতাশ করেছে তাদের।

একই ছবি ছোট-মাঝারি পোশাকের দোকানেও। রাসবিহারী এভিনিউয়ের দোকান-মালিক সুদীপ্ত সাহা জানান, ভিড় দেখে ব্যবসা বোঝা যাবে না। মানুষ এ বার ঝুঁকেছেন মূলত কম দামি জিনিসের দিকে। নিউ মার্কেটে ছোটদের পোশাকের দোকান-মালিক হায়দর আলিও জানান, উৎসবের সময়ে দামি পোশাক কেনার চেনা ছবি এ বছর বিশেষ দেখা যায়নি।

সংগঠিত ও অসংগঠিত খুচরো ব্যবসায়ীদের অভিযোগ রয়েছে জিএসটি-র বিরুদ্ধেও। গোপালনের দাবি, জিএসটি চালু হওয়ায় জিনিস সরবরাহে টান ছিল। আগাম কর গুনে বেশি ‘স্টক’ রাখতে চাননি ছোট-মাঝারি দোকানিরা। তাঁর কথায়, ‘‘যে সব বিপণির নিজেদের ব্র্যান্ড আছে, শুধু তারাই সরবরাহ ঠিক রাখতে পেরেছে।’’ যে অসুবিধা নেট বাজারকে পোহাতে হয়নি বলে তাঁর দাবি। যে কারণে এই বাজারেও ৯,৭০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন