রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর হিসেবে তাঁর তিন বছরের কাজের মেয়াদ শেষ আগামী ৪ সেপ্টেম্বর। তার ঠিক আগেই নিজের চলে যাওয়া নিয়ে ফের মুখ খুললেন রঘুরাম রাজন।
কেন তিনি নিজে থেকেই গভর্নর পদে আর থাকতে চাননি, তার কারণ জানাতে গিয়ে সরাসরি কেন্দ্রের সঙ্গে মতের মিল না-হওয়াকেই দায়ী করলেন রাজন। বৃহস্পতিবার রাজন বলেন, ‘‘অসমাপ্ত কিছু কাজের জন্য থাকতেই চেয়েছিলাম। সরকারের সঙ্গে কথাবার্তাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু ঠিক জায়গায় আমাদের একমত হওয়া দরকার ছিল। আমরা তা পারিনি। আর, সেখানেই সব থমকে যায়। বুঝতে পারি, আলোচনা চালানোর জায়গায় আমরা নেই। তাই আর তা টেনে নিয়ে যাওয়া অর্থহীন।’’
এ দিন এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, এ ব্যাপারে তিনি হতাশ কি না। স্পষ্টবাদী রাজনের জবাব, ‘‘কাজ অসম্পূর্ণ থাকলে যাওয়ার আগে তা শেষ করে যেতে পারলেই ভাল লাগার কথা। তবে একটা সময়ের পরে আর পিছনে তাকানো যায় না। তখন যেতেই হয়। এখন আমিও আর কোনও হিসেব মেলাতে চাই না।’’
দেশ জুড়ে অসহিষ্ণুতা নিয়ে তাঁর ভাষণই কেন্দ্রের সঙ্গে মতবিরোধ ডেকে এনেছিল কি না, সে ব্যাপারেও প্রশ্ন করা হয় রাজনকে। গত নভেম্বরে নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিল্লি আইআইটি-র ওই ভাষণ প্রসঙ্গে তাঁর সাফ জবাব, সেটি আদৌ ‘বিতর্কিত’ ছিল না। তিনি শুধু বলতে চেয়েছিলেন, সহিষ্ণুতাই ভারতের ঐতিহ্য। সেটাই মেনে চলা উচিত। নবীন প্রজন্মকে সে কথা মনে করিয়ে দেওয়াটা তাঁর ‘নৈতিক দায়িত্ব’ বলেই মনে করেন রাজন। ওই ভাষণেও তিনি সেটাই করেছিলেন।
উত্তরসূরি উর্জিত পটেল সম্পর্কে এই মুহূর্তে আর নতুন কোনও উপদেশ দেওয়া প্রয়োজন নেই বলেও মন্তব্য করেন রাজন। তাঁর মতে, পটেল জানেন, কী ভাবে সব সামলাতে হয়। সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের দিকটিও তিনি বেশ কিছু দিন ধরেই নজরে রাখছেন। রাজনের কথায়, ‘‘তাঁর উপর আস্থা আছে। পটেল নিশ্চয়ই সব দিক বজায় রেখে এগোবেন।’’
প্রসঙ্গত, রাজনের আগে বেশ কিছু গভর্নরই ৫ বছর এই পদে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সি রঙ্গরাজন, ওয়াই ভি রেড্ডি, বিমল জালান, ডি সুব্বারাও।