রাজ্যের ঐতিহ্যশালী ওয়াগন নির্মাণ সংস্থা বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের ঝাঁপ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল রেল মন্ত্রক।
গত জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে চিঠি দিয়ে সংস্থাটি বন্ধ না-করার আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কান না দিয়ে রেল মন্ত্রক সংস্থা গোটানোর কথা বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছে। মমতা রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বার্ন স্ট্যান্ডার্ড অধিগ্রহণ করেছিল রেল। হাওড়া এবং বার্নপুরে চালু থাকা দু’টি কারখানা এবং কলকাতার সদর দফতর মিলে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডে বর্তমানে ৫০০ কর্মী আছেন। তাঁদের সকলকে স্বেচ্ছাবসর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
দেউলিয়া আইন মোতাবেক বার্ন স্ট্যান্ডার্ড জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনালে (এনসিএলটি) রয়েছে। তার পরিচালনার ভার আছে এনসিএলটি নিযুক্ত রেজোলিউশন প্রফেশনালের (আরপি) হাতে। সংস্থা গুটিয়ে নেওয়ার আগে পাওনাদারদের টাকা মেটাতে ৪১৭ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে বলে রেল জানিয়েছে। ওই টাকার সংস্থান রেল তাদের অভ্যন্তরীণ বাজেটেই করে রেখেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এমন একটা সময়ে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডকে গুটিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত হল, যখন সংস্থাটিকে চাঙ্গা করার জন্য কর্তৃপক্ষ আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। সংস্থাটি ঘুরে দাঁড়াতে শুরুও করেছিল। ২০১৬-’১৭ সালে ১১ কোটি টাকা লোকসান হলেও ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের শেষে ৪৯.৫ কোটি টাকা মোট মুনাফা করেছিল সংস্থাটি। হাতে ওয়াগন তৈরির বরাতও যথেষ্ট রয়েছে বলে ওই সূত্রের দাবি। তা ছাড়া, আরপি-র যে মূল্যায়ন অনুসারে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের মোট সম্পত্তির মূল্য ৮০০ কোটি টাকা। সংস্থাকে চাঙ্গা করার জন্য যে ৪০০ কোটি টাকার প্রয়োজন, তা উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করে জোগাড় করার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল।
ফলে প্রশ্ন উঠেছে, সংস্থার নিজের টাকাতেই যখন পুনরুজ্জীবনের সুযোগ ছিল, তখন তাকে গুটিয়ে ফেলার যৌক্তিকতা কোথায়!