ভর্তুকি ওঠার জের

চলতি অর্থবর্ষেই রিলায়্যান্সের সব পেট্রোল পাম্প খুলছে

পেট্রোল-ডিজেলে ভর্তুকি উঠে যাওয়ার হাত ধরে নতুন করে এই দুই জ্বালানি বিক্রির বাজারে ফিরছে বেসরকারি রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ। সংস্থা সূত্রের খবর, এই অর্থবর্ষেই দেশ জুড়ে খুলে যাবে তাদের ১,৪০০ পেট্রোল পাম্প। মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (আরআইএল) তার ওয়েবসাইটে ত্রৈমাসিক ফলাফল জানাতে গিয়ে এই ঘোষণা করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৫২
Share:

আবার ছন্দে ফেরার অপেক্ষায়। ছবি: রয়টার্স।

পেট্রোল-ডিজেলে ভর্তুকি উঠে যাওয়ার হাত ধরে নতুন করে এই দুই জ্বালানি বিক্রির বাজারে ফিরছে বেসরকারি রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ। সংস্থা সূত্রের খবর, এই অর্থবর্ষেই দেশ জুড়ে খুলে যাবে তাদের ১,৪০০ পেট্রোল পাম্প। মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (আরআইএল) তার ওয়েবসাইটে ত্রৈমাসিক ফলাফল জানাতে গিয়ে এই ঘোষণা করেছে।

Advertisement

২০০৮-এ এই সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ করতে বাধ্য হয় রিলায়্যান্স। কারণ, তখন বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম পৌঁছে গিয়েছিল ব্যারেলে ১৫০ ডলারে। পেট্রোল-ডিজেল বিক্রির দরে পুরোপুরি সরকারি নিয়ন্ত্রণের সেই জমানায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি ভর্তুকিতে এগুলি বিক্রি করত। সেই সুবিধা পেত না বেসরকারি সংস্থা রিলায়্যান্স। ফলে আমদানির চড়া দাম মিটিয়ে তাদের পক্ষে বাজারে টিকে থাকা সম্ভব ছিল না। কারণ ভর্তুকিহীন বাড়তি দরে পেট্রোল-ডিজেল কিনতে রাজি ছিলেন না বেশির ভাগ গ্রাহকও।

বাজার ধরে রাখার মরিয়া চেষ্টায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছাকাছি দরেই জ্বালানি বিক্রি শুরু করে বিপুল লোকসানের বোঝা চাপে রিলায়্যান্সের ঘাড়ে। ফলে পাততাড়ি গুটোনো ছাড়া আর কোনও বিকল্প তাদের সামনে খোলা ছিল না। অথচ, ২০০৬-এ দেশে এই বাজারের অনেকটাই দখল করেছিল দুই বেসরকারি সংস্থা রিলায়্যান্স ও এসার অয়েল, পেট্রোলের ক্ষেত্রে ১৭%, ডিজেলে ১০%। দেশের মোট পেট্রোল পাম্পের মাত্র ৪% ছিল রিলায়্যান্সের হাতে। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির ৫১,৮৭০টি পাম্প রয়েছে।

Advertisement

ভর্তুকির জমানায় ইতি টানার ইঙ্গিত দিয়ে দিন বদলের শুরু ২০১০ সালের জুনে। সে সময়ে তদানীন্তন ইউপিএ সরকার পেট্রোলের দামে নিয়ন্ত্রণ তুলে নিয়ে তা বাজারের হাতেই ছেড়ে দেয়। এর পরেই বাজারে নতুন করে ফিরে আসে এসার, শুরু করে শুধু পেট্রোল বিক্রি।

এর পরের দফায় নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় এসে ডিজেলে ভর্তুকি তুলে নেয় ২০১৪ সালের অক্টোবরে। এসারও জোরকদমে শুরু করে দেয় ডিজেল বিক্রি। এ বার নিয়ন্ত্রণমুক্ত বাজারে পুরোদমে ফেরার পালা রিলায়্যান্সের। ইতিমধ্যেই অবশ্য খুলেছে তাদের ৩২০টি পেট্রোল পাম্প। সংস্থা তার ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, ‘‘এ বার লক্ষ্য ১৪০০ বিক্রয় কেন্দ্রের সবগুলিই ২০১৫-’১৬ সালে নতুন করে চালু করা। বিশেষ করে যারা এক লপ্তে বেশি পরিমাণে ডিজেল কেনে, সেই সব ক্রেতাকেই নজরে রাখছে সংস্থা।’’

এই লক্ষ্যে ক্রেতা টানতে কিছু সুবিধা দিতে চায় রিলায়্যান্স। পেট্রোল পাম্পগুলিতে দক্ষ কর্মী ও উন্নত প্রযুক্তির মেলবন্ধনের মাধ্যমে তা করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থা। সুযোগগুলির মধ্যে রয়েছে: ট্রাক মালিকদের মতো বড় ক্রেতাদের স্মার্ট কার্ড দেওয়া। তাঁদের চালকেরা ওই কার্ড ব্যবহার করে নগদ ছাড়াই ডিজেল কিনতে পারবেন। এ ধরনের কেনাবেচার উপর অনলাইনে নজরদারিও করতে পারবে রিলায়্যান্স। ফলে চুরি ঠেকানো কিছুটা সহজ হবে বলে দাবি সংস্থার। অন্য ক্রেতাদের জন্যও বিশেষ ছাড় দেওয়ার প্রকল্প আনার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রিলায়্যান্স। উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে ৯০০টি পেট্রোল পাম্প রয়েছে সরাসরি রিলায়্যান্সের মালিকানায়, বাকিগুলি ডিলারদের হাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন