আগের দিন বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (বিএসই) ৪টি সংস্থার শেয়ার লেনদেন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। মঙ্গলবার এলজিএস গ্লোবাল নামে আরও এক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ৭ জনকে শেয়ার বাজারে লেনদেন না-করার নির্দেশ জারি করল তারা।
নির্দেশ অনুযায়ী, ছ’বছর তাঁরা শেয়ার বাজারে লেনদেন করতে পারবেন না। সেবির অভিযোগ, এলজিএসের শেয়ার দর কৃত্রিম ভাবে বাড়ানোয় যুক্ত ছিলেন ওই সব ব্যক্তি। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা অন্য চার সংস্থার বিরুদ্ধেও অভিযোগ একই। সবক’টিই ক্ষুদ্র ও মাঝারি সংস্থা (এসএমই)।
ছোট সংস্থাগুলিও যাতে বাজারে শেয়ার ছেড়ে মূলধন তুলতে পারে, সে জন্য তাদের নথিভুক্তি, নতুন শেয়ার ছাড়া ও তার পর তা নিয়মিত লেনদেনের ব্যবস্থা করতে বিশেষ একটি পরিকাঠামো গড়েছে বিএসই। যে-সব সংস্থার বিরুদ্ধে সেবি তদন্ত চালিয়েছে, তার সবগুলিই ওই লেনদেন ব্যবস্থায় নথিভুক্ত।
শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীরা টাকা ঢালেন মুনাফার আশায়। কিন্তু শেয়ার কেনাবেচা থেকে মুনাফা না-করে ভুয়ো মুনাফা দেখানোর উদ্দেশ্যেও যে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি লেনদেন চালায়, ওই সব সংস্থার বিরুদ্ধে সেবির সাম্প্রতিক তদন্তে সেটাই উঠে এসেছে। বাজার সূত্রের খবর, কর ফাঁকি দেওয়া ও কালো টাকা সাদা করার কৌশল হিসেবেই এক দল শেয়ার ব্যবসায়ী এ ভাবে ভুয়ো মুনাফা দেখায়।
কৌশলটি কী? শেয়ার লেনদেনে মুনাফা করলে যে-কর দিতে হয়, তা মূলধনী লাভকর। কিন্তু কোনও শেয়ার কেনার পরে অন্তত এক বছর ধরে রেখে বিক্রি করলে যে-মুনাফা (দীর্ঘমেয়াদি মুলধনী লাভ) হয়, তাতে ওই কর বসে না। অসাধু ব্যবসায়ীরা এই আইনের সুবিধা নিতেই বেআইনি ভাবে ভুয়ো মুনাফা দেখায়। এই কৌশলে মুনাফা না-করেও তা দেখিয়ে কালো টাকা সাদা করে তারা। পাশাপাশি শেয়ার কেনার এক বছর পরে বিক্রি দেখিয়ে মূলধনী লাভকরে ছাড়ের সুবিধা নেয়। আবার বছর শেষে শেয়ার লেনদেনে বেআইনি ভাবে লোকসান দেখিয়ে করছাড়ের সুযোগ নেওয়ার ঘটনাও অতীতে ঘটেছে।
এই লেনদেন একাধিক ব্যক্তির মধ্যে যোগসাজশে চলে। সেবির তদন্তে প্রকাশ, অনামী কিছু ছোট-মাঝারি সংস্থার শেয়ার দর এক থেকে দেড় বছরে ১৭৮২%-৬২৬৫% বেড়েছে। অভিযোগ, এতে বেআইনি ভাবে ২৩৯ জন ব্যক্তি বা ব্যবসায়ী ৬১৪ কোটি টাকা কামিয়েছে।