বাজার হাতছাড়া দার্জিলিং চায়ের

যে ‘সেকেন্ড-ফ্লাশ’ দার্জিলিং চায়ের দুনিয়া জোড়া খ্যাতি, গত বছর খারাপ আবহাওয়ার জন্য তার দাম ততটা ওঠেনি। এ বার ভাল দাম পাওয়ার ইঙ্গিত মিলছিল এই সময়েই। কিন্তু পাহাড়ের আন্দোলন তাতে ইতি টেনে দিল বলে দাবি চা শিল্পের।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ০২:৫০
Share:

গত বছরের ভরা মরসুমে পাঁচ দফার নিলামের মাত্র অর্ধেক চা এ বার মিলল এখনও পর্যন্ত হওয়া চার পর্বের নিলামে। শিল্পমহলের অভিযোগের তির এ ক্ষেত্রে পাহাড়ে আন্দোলন ও একটানা বন্‌ধের দিকেই। সেখানকার বাগানগুলি থেকে নতুন চা না-এলে এ বার পঞ্চম দফায় নিলাম কেন্দ্রগুলিতে আর কোনও দার্জিলিং চা-ই মিলবে না বলে আশঙ্কা শিল্পমহলের।

Advertisement

যে ‘সেকেন্ড-ফ্লাশ’ দার্জিলিং চায়ের দুনিয়া জোড়া খ্যাতি, গত বছর খারাপ আবহাওয়ার জন্য তার দাম ততটা ওঠেনি। এ বার ভাল দাম পাওয়ার ইঙ্গিত মিলছিল এই সময়েই। কিন্তু পাহাড়ের আন্দোলন তাতে ইতি টেনে দিল বলে দাবি চা শিল্পের।

ভরা মরসুমে ‘ফার্স্ট-ফ্লাশ’ (মার্চ থেকে মে-র শেষ) ও ‘সেকেন্ড-ফ্লাশ’ (মে-র শেষ থেকে জুলাইয়ের গোড়া) এই দু’ধরনের চায়ের কদরই সবচেয়ে বেশি। দার্জিলিং চায়ের ক্ষেত্রে এগুলি বছরের উৎপাদনের ৪০-৪৫% হলেও মোট ব্যবসার ৭০-৭৫%। কারণ সেগুলির চড়া দাম। দেশ-বিদেশের বাজারে এই দু’ধরনের চায়ের সিংহভাগ সরাসরি বিক্রি হয়। তবে কিছুটা বিক্রি হয় শুধু কলকাতার নিলাম কেন্দ্রে। সেখান থেকেই দেশ-বিদেশের বাজারে পাড়ি দেয় ওই চা।

Advertisement

কিন্তু ৯ জুনের পর থেকে দার্জিলিঙের সব বাগানই বন্ধ। তার আগে তৈরি হওয়া যে-চা কলকাতায় নিলামের জন্য এসেছে, তার মধ্যে কিছু ফার্স্ট-ফ্লাশ ও কিছু সেকেন্ড-ফ্লাশ। ক্যালকাটা টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (সিসিটিএ) সূত্রের খবর, গত জুনের শেষ থেকে জুলাইয়ের মধ্যে পাঁচ পর্বের নিলামে মোট ৪.৭৭ লক্ষ কেজি চা কলকাতার কেন্দ্রে এলেও এ বার তারা পেয়েছে ২ লক্ষ কেজির সামান্য বেশি। আগামী দু’টি নিলামের জন্য পড়ে রয়েছে ৯০ হাজার কেজি চা, যা এই সময়ের জোগানের তুলনায় নগণ্য বলেই দাবি চা শিল্পের।

এই মরসুমে চায়ের উৎপাদন ও নিলামের পরিমাণও বেড়ে যায়। বস্তুত, সেই প্রবণতা স্পষ্ট গত বছরে হিসেবে। ২৬ নম্বর নিলামের পর থেকেই লাফিয়ে বেড়েছিল পরিমাণ। তুলনায় এ বছর এই সময়ে দার্জিলিং চায়ের দর উঠছিল। শনিবার শেষ হওয়া ২৭ নম্বর নিলামে গড় দাম ওঠে ৫৮৪ টাকা। সেখানে দার্জিলিং চায়ের সর্বোচ্চ দর কেজিতে ৩২০১ টাকা।

চড়া দামে বেশি বিক্রি হলে আয় বাড়ত বাগানগুলির। পরিকাঠামো থেকে রাজনৈতিক আন্দোলন, নানা কারণে জেরবার দার্জিলিঙের চা শিল্প যখন চাকা ঘোরার আশায়, আন্দোলন ঠিক সে সময়েই তাতে ঘা দিয়েছে।

অশান্তির জের

২০১৭

নিলাম নং মোট পরিমাণ* গড় দাম**


২৬ ৫৮,৯০০ ৪২৯.৯৭


২৭ ৬৭,৩১০ ৫৮৩.৮৪


২৮ ৫৮,৮০০ --


২৯ ২০,০০০ --

২০১৬


২৬ ৫৩,৩৮৭ ৪২৯


২৭ ৭৭,০০০ ৪৯৯.৫


২৮ ৯৪,০০০ ৪৯১


২৯ ১.২০ লক্ষ ৪১১


৩০ ১.৩৩ লক্ষ ৩৯১

* কেজি, ** টাকা, তথ্যসূত্র: সিসিটিএ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন