বিহারের রায়ে ৬০০ পয়েন্ট পড়েও উঠে দাঁড়াল সূচক

বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাবে ম্যাজিক দেখাল শেয়ার বাজার। সোমবার লেনদেন শুরুর ঠিক পরেই সেনসেক্স এক ধাক্কায় ৬০০ পয়েন্টেরও বেশি পড়ে গেলেও দিনের শেষে পতনকে বেঁধে রাখল ১৪৩.৮৪ পয়েন্টে। এ দিন লেনদেনের শেষে সূচক থিতু হয় ২৬,১২১.৪০ অঙ্কে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:২০
Share:

বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের প্রভাবে ম্যাজিক দেখাল শেয়ার বাজার। সোমবার লেনদেন শুরুর ঠিক পরেই সেনসেক্স এক ধাক্কায় ৬০০ পয়েন্টেরও বেশি পড়ে গেলেও দিনের শেষে পতনকে বেঁধে রাখল ১৪৩.৮৪ পয়েন্টে। এ দিন লেনদেনের শেষে সূচক থিতু হয় ২৬,১২১.৪০ অঙ্কে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের মতে, যে-রাজনৈতিক দলটির দিকে আর্থিক সংস্কারের জন্য তাকিয়ে আছে সারা দেশ, বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাদেরই ভরাডুবিতে প্রাথমিক ভাবে দিশাহারা হয়ে গিয়েছিল শেয়ার বাজার। কিন্তু এই পরাজয় আর্থিক সংস্কারের আশা নির্মূল করে দেব, এ ধারণা যে ঠিক নয়, তা ক্রমশ উপলব্ধি করার সঙ্গে সঙ্গেই ঘুরে দাঁড়াতে থাকে শেয়ার বাজার।

তবে আগামী দিনে বাজার কেমন থাকবে, তা নিয়ে অবশ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। অনেকে মনে করেন, শেয়ার বাজার তেজী হবে, না কি মন্দায় প়ড়বে, সে ব্যাপারে শেষ কথা বলবে দেশের অর্থনীতির অবস্থা। আবার অনেকের মতে, এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে আর্থিক সংস্কার কর্মসূচি ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। যা আগামী দিনে আরও অনিশ্চয়তায় ফেলবে শেয়ার বাজারকে।

Advertisement

অন্য দিকে, বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে যাঁরা বিশেষ আশাবাদী, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি এবং স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ। কমলবাবুর বক্তব্য, এ দিন সকালের দিকে শেয়ার বাজারে যা প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হয়েছে, তা অস্বাভাবিক নয়। তবে পুরো বিষয়টি না-বুঝেই লগ্নিকারীদের মধ্যে ওই আচরণ দেখা গিয়েছিল। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরে কোনও রাজ্যের নির্বাচনে এত বড় হার এর আগে বিজেপি-র হয়নি। তাই অনেকেই মুষড়ে পড়েছিলেন।

কমলবাবুর মতে, তলিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, ভারতের যা বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি, তাতে শেয়ার বাজার চাঙ্গা হওয়ারই কথা। কারণ, দেশের অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়ার জন্য দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মূল্যবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম। দু’টিই এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। এটা ঠিক যে, রফতানির অবস্থা ভাল নয়। তবে, সম্প্রতি আমেরিকার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আশা, এর ফলে ভারতের রফতানি বাণিজ্যও বাড়বে। আমার ধারণা, এই সব বিষয় শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা হতে সাহায্য করবে। তাঁর কথায়, ‘‘আর্থিক সংস্কারের চাকা যে বিহার ভোটের ফলাফলের জেরে থেমে যাবে, এটা আমার মনে হয় না।’’

শেয়ার বাজার নিয়ে অবশ্য তেমন আশাবাদী নন, ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিক। তিনি বলেন, ‘‘বিহারে ভোটে হারার ফলে সাধারণ মানুষের অপছন্দের কিছু আর্থিক সংস্কারকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ বার কতটা অগ্রাধিকার দেবেন, তা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। এই হার রাজ্যসভায় আর্থিক সংস্কার সংক্রান্ত বিলগুলিকে আটকে দেওয়ায় বিরোধী দলগুলিকে আরও উৎসাহিত করবে, এতে সন্দেহ নেই।’’ তা ছাড়া কৌশিকের মতে, বাজারের হাল ফেরাতে পণ্য-পরিষেবা কর চালু করা বিশেষ জরুরি। নির্বাচনের পরে বিহার সেটা কতটা হতে দেবে, তা নিয়ে তাঁর সংশয় রয়েছে। বিহারের সঙ্গে অন্য কিছু রাজ্যও যে তাল মেলাবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই তাঁর মনে হয়, শেয়ার বাজার এখন দ্রুত পড়বে। তাঁর কথায়, ‘‘নিফ্‌টি ৭৯০০ থেকে ৭৫০০ পয়েন্টে নেমে গেলেও আমি অবাক হব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন