Share Market

পড়ছে শেয়ার, চড়ছে সোনা

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:০৭
Share:

বিয়ের মরসুমে গয়না কিনতে গিয়ে মাথায় হাত পড়েছে সাধারণ মানুষের। প্রতীকী ছবি

ইউক্রেন-রাশিয়ার সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা কাঁপুনি ধরাচ্ছে ভারতের অর্থনীতিতেও। উদ্বেগের আঁচে এক দিকে নাগাড়ে পড়ছে শেয়ার বাজার, অন্য দিকে বেড়ে চলেছে সোনার দাম। মঙ্গলবার কলকাতায় পাকা সোনা (১০ গ্রাম) পৌঁছে গিয়েছে ৫১,১৫০ টাকায়। জিএসটি ধরে যা প্রায় ৫২,৬৮৪ টাকা। আর সেনসেক্স টানা পাঁচ দিনে মোট ৮৪১ পয়েন্ট পড়েছে। মঙ্গলবার বাজার খুলতেই প্রায় ১৩০০ নেমে গিয়েছিল সূচক। দুপুর পর্যন্ত ৫৬ হাজারের ঘরেই ছিল। অস্থির বাজারে পেন্ডুলামের মতো ওঠানামার পরে ৫৭,৩০০ অঙ্কে থামে। আগের দিনের থেকে ৩৮৩ নীচে। অশান্তি বহাল থাকলে শেয়ার বাজার আরও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলের।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের দাবি, যে কোনও অশান্তির পরিবেশে শেয়ারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ লগ্নি থেকে সরে আসেন বহু বিনিয়োগকারী। তুলনায় অনেক বেশি সুরক্ষিত লগ্নি সোনাকে পুঁজি ঢালার জন্য আঁকড়ে ধরেন। এই মুহূর্তে অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও সেটাই হচ্ছে। শেয়ার বাজারে ক্ষুদ্র এবং সাধারণ লগ্নিকারীদের যেমন লোকসান গুনতে হচ্ছে, তেমনই সোনার দাম বাড়ায় ভুগতে শুরু করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। সংশ্লিষ্ট পক্ষের দাবি, এতে চলতি বিয়ের মরসুমে গয়না কিনতে গিয়ে মাথায় হাত পড়েছে সাধারণ মানুষের। ব্যবসা হারানোর আশঙ্কায় প্রমাদ গুনছে বিশেষত ছোট দোকানগুলি।

বুলিয়ন ডিলার (সোনা বিক্রেতা) জেজে গোল্ডের ডিরেক্টর হর্ষদ আজমেরার দাবি, “দাম বাড়লেও, তা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কায় এখনও সোনায় লগ্নি করছেন এক শ্রেণির মানুষ। তবে গয়নার বাজার খারাপ হতে শুরু করেছে। হাতে হাতে কেনা সোনার চাহিদা দ্রুত কমছে। আমার দোকানেই বিক্রি কমেছে প্রায় ৮০%।’’ অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড ফেডারেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাছরাজ বামালুয়া বলেন, “আমার ধারণা, সোনার দাম আরও অনেক উপরে উঠবে। রাশিয়া-ইউক্রেন সামরিক উত্তেজনা বিশ্ব জুড়েই আর্থিক বাজারকে অস্থির করেছে। এমন অবস্থায় সোনা তো দামি হবেই। তবে ব্যক্তিগত ভাবে সোনা কেনা কমলেও, সার্বিক ভাবে এখনও বাড়ছে।’’

Advertisement

আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের মতে, তেল উৎপাদনে রাশিয়া তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাঁধলে বহু দেশ জড়িয়ে যাবে। তেলের জোগান তলানি ছোঁবে। তার দাম আরও চড়বে। তখন তেলে ভারতের মতো আমদানি নির্ভর দেশ তো সমস্যায় পড়বেই। চাপে পড়বে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার। দেশে জ্বালানির দাম বাড়ায় মূল্যবৃদ্ধি বেলাগাম হবে। সব মিলিয়ে অর্থনীতির অবস্থা করুণ হতে পারে। এই দুর্দিন আঁচ করেই পড়ছে শেয়ার বাজার। লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো মিউচুয়াল ফান্ডের প্রাক্তন আঞ্চলিক কর্তা প্রবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, শেয়ার বাজার আরও পড়লে শিল্পের মূলধন সংগ্রহের একটা পথও আটকে যাবে। বহু সংস্থাই বাজারে শেয়ার ছেড়ে লগ্নির টাকা জোগাড় করে। তাঁর দাবি, শিল্প বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে না। আবার ধার নিয়ে লগ্নি করার জন্য আরও কম সুদ চেয়েও পাচ্ছে না। কারণ, দেশে-বিদেশে মূল্যবৃদ্ধির জেরে তা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। উল্টে স্বস্তি কাড়ছে সুদ
বৃদ্ধির আশঙ্কা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন