ছেদ পড়ল শেয়ার বাজারের পতনে। তবে তা সাময়িক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। টানা তিন দিন পতনের পরে মঙ্গলবার সেনসেক্স বাড়ল ২১৯.৩৯ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময় সূচক থিতু হয় ২৭,৩৯৬.৩৮ অঙ্কে।
শেয়ারের পাশাপাশি এ দিন বেড়েছে টাকার দামও। ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম ৩৩ পয়সা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে এ দিন বৈদেশিক মুদ্রার বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬৩.১৫ টাকা।
এ দিন চলতি অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির সম্ভাব্য হার নিয়ে বিশ্বব্যাঙ্কের ইতিবাচক মন্তব্য লগ্নিকারীদের উৎসাহিত করেছে। বিশ্বব্যাঙ্ক এ দেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে ইঙ্গিত দিতে গিয়ে বলে যে, ভারত দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে আর্থিক উন্নতির পথে রয়েছে। ভারতের উন্নয়ন নিয়ে মঙ্গলবার প্রকাশিত সমীক্ষা ‘ইন্ডিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট রিপোর্ট’-এ বিশ্বব্যাঙ্ক পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭.৫% ছোঁবে। ২০১৬-’১৭-য় তা দাঁড়াবে ৭.৯%, তার পরের বছরে ৮%। বিশ্বব্যাঙ্ক অবশ্য জানিয়েছে শিল্পে লগ্নি ১১% হারে বাড়বে ধরে নিয়ে তারা এই হিসেব কষেছে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রতি তাদের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে বলেও বিশ্বব্যাঙ্ক জানিয়েছে। এই খবরে এ দিন বেশ কিছুটা প্রাণ ফিরে পায় ভারতের শেয়ার বাজার।
তবে সূচক মূলত পড়তি বাজারে শেয়ার কেনার হিড়িকেই উঠেছে বলে লগ্নিকারীদের সূত্রে খবর। উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, বিদেশি লগ্নিকারীদের টানা শেয়ার বিক্রিকে উপেক্ষা করেই উত্থান হয়েছে সূচকের। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, এই সব বিদেশি বিনিয়োগকারী সংস্থা গত সোমবারই ১৭৪৯.৩৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। তবে এর পাশাপাশি ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি ওই দিনই প্রায় সমপরিমাণ শেয়ার কেনার ফলে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার শেয়ার বিক্রিবাজারে বিশেষ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি।ওই দিন ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলি১৬৬৭.৫৪ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে।
তবে এ দিন সূচক উঠলেও বাজার এখনই ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা, বাজার আরও কিছুটা পড়ার পরে সূচকের গতি ঊর্ধ্বমুখী হবে। যেমন ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিক সম্প্রতি জানিয়েছেন, তাঁর ধারণা, সেনসেক্স আরও দিন সাতেক পড়ার পরে ঘুরে দাঁড়াবে।
অবশ্য ভারতের আর্থিক অবস্থা নিয়ে বিশ্বব্যাঙ্কের মন্তব্যের ইতিবাচক প্রভাবে সূচক আরও কিছুটা উপরে উঠতে পারে বলেও মনে করছেন বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ। আগামী কাল বৃহস্পতিবার চলতি সপ্তাহের ডেরিভেটিভ লেনদেনের সেট্লমেন্টের দিন। তাই আপাতত দু’দিন বাজার বেশ অনিশ্চিত থাকবে বলেও মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।