শেয়ারে ধস, দেনায় ডুবে সেতু নির্মাতা

চব্বিশ জনের প্রাণ কেড়ে রাস্তায় ভেঙে পড়েছে উড়ালপুল। আর তার পর থেকে দু’দিনে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে ওই সেতু নির্মাতা আইভিআরসিএল-এর শেয়ার দর। বৃহস্পতি ও শুক্রবার— দু’দিনে ধসের জেরে তা নেমেছে এক বছরের মধ্যে সব থেকে নীচে (বিএসই-তে ৫.৭৭ টাকা)।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:০৬
Share:

চব্বিশ জনের প্রাণ কেড়ে রাস্তায় ভেঙে পড়েছে উড়ালপুল। আর তার পর থেকে দু’দিনে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে ওই সেতু নির্মাতা আইভিআরসিএল-এর শেয়ার দর। বৃহস্পতি ও শুক্রবার— দু’দিনে ধসের জেরে তা নেমেছে এক বছরের মধ্যে সব থেকে নীচে (বিএসই-তে ৫.৭৭ টাকা)।

Advertisement

বিবৃতিতে হায়দরাবাদের সংস্থাটি দাবি করেছে, এমন দুর্ঘটনা তাদের ইতিহাসে প্রথম। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তাদের বেহাল আর্থিক দশা অন্তত একেবারেই নতুন নয়। বছর তিনেক ধরেই গ্রহণ লেগেছে আর্থিক ফলাফলে। লোকসানের অঙ্ক মোটা। আয় কমছে। ঘাড়ে চেপে রয়েছে বিপুল দেনার বোঝা। পরিস্থিতি এমনই যে, ঋণ ঢেলে সাজতে শাখা সংস্থার মালিকানা হাতছাড়া হতে পারে ই সুধীর রেড্ডির।

সংস্থার ওয়েবসাইট খুললে, সেখানে এখনও জ্বলজ্বল করছে কোনও প্রকল্পের গুণমানের সঙ্গে আপোস না করার দাবি। যাদের বরাতে সংস্থাটি এত দিন দেশ-বিদেশে কাজ করেছে, সেই তালিকাও বেশ লম্বা। ভারী সেখানকার অনেক নামই। ইসরো, ভেল, গেইল, এয়ারপোর্ট অথরিটি, বেঙ্গালুরু মেট্রো, কেএমডিএ, কেইআইপি-র মতো সরকারি সংস্থা বা প্রকল্পের নাম সেখানে রয়েছে। বেসরকারি সংস্থার মধ্যে উপস্থিত রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ, টাটা পাওয়ার, জিন্দল স্টিল, সিমেন্স, বেঙ্গল অম্বুজা হাউসিং ইত্যাদি। কিন্তু এই সমস্ত দাবির সঙ্গে তাদের আর্থিক ফলাফল যেন কিছুটা বেমানান।

Advertisement

ডিসেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে সংস্থার লোকসান ছিল ৩০৩.৮৪ কোটি টাকা। সঙ্গে কমেছে আয়ও। ২০১৩-’১৪ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আয় যেখানে ৬৪৪.৮৬ কোটি টাকা ছিল, সেখানে ২০১৪-’১৫ সালে তা ৪৪৮.১২ কোটি।

গোদের উপর বিষফোঁড়া বিপুল ঋণের বোঝা। সব মিলিয়ে প্রায় ৮,৫০০ কোটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, দেনা সামলাতে শাখা সংস্থার মালিকানা হাতবদলের কথা ভাবতে হচ্ছে আইভিআরসিএল-কে। ভাবতে হচ্ছে জমি বিক্রির কথাও।

জানুয়ারিতে সংস্থার ঋণ পুনর্গঠনের প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন শেয়ারহোল্ডাররা। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঋণের অঙ্ক সমতুল্য শেয়ারে বদলে নেওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে ৫১% শেয়ারের মালিকানা যাবে ঋণদাতা ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলির ঘরে। স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ ২০টি ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ওই সিংহভাগ অংশীদারি পাবে। ওয়েবসাইটে সংস্থার দাবি, তিন হাজারের বেশি ইঞ্জিনিয়ার ও প্রযুক্তিবিদ কাজ করেন সেখানে। তাদের দক্ষতা পরিকাঠামো নির্মাণ ও জল শোধনে। কিন্তু বেশ কিছু দিন আগে থেকেই সংস্থাটি রেল এবং বেশ কিছু রাজ্যের কালো তালিকাভুক্ত। তার জেরেই আর্থিক স্বাস্থ্য দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ছিল কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন