বাজারের রাশ ছোট গাড়ির হাতে

এখনও দেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া গাড়ি মারুতি অল্টো (৮০০ ও ১০০০ সিসির ইঞ্জিন ধরে)। সংস্থা জানিয়েছে, বিক্রি হওয়া অল্টোর ৭০ থেকে ৭৫% ৮০০ সিসির। সোসাইটি অব ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্সের হিসেবে, গত জুনেও দেশের যাত্রী গাড়ির (ইউভি বা ভ্যান বাদে) ২৭.৪ শতাংশের বেশি ৮০০-১০০০ সিসি ইঞ্জিনের দখলে ছিল।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৭ ০৯:১০
Share:

ছবি: সংগৃহীত

ভারতের গাড়ি বাজারে এখনও রাজত্ব ছোট গাড়ির।

Advertisement

আশির দশকে এ দেশে গাড়ি বাজারের ছবি আমূল বদলে দেয় ‘মারুতি-৮০০’। তবে ৮০০ সিসি ইঞ্জিনের এই গাড়ি আসার পর থেকে প্রায় প্রতি বছরই নতুন বড় ও দামি গাড়ির চাকা গড়াচ্ছে রাস্তায়। কিন্তু ছোট গাড়ির বাজারকে উপেক্ষা করতে পারছে না দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলি। বরং আধুনিক জীবনযাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে শক্তিশালী (১০০০ সিসি) ইঞ্জিনের ছোট গাড়ি তৈরির প্রতিযোগিতা বাড়ছে। সেই দৌড়ে মারুতি, রেনোর সঙ্গে যোগ দিয়েছে জাপানি বহুজাতিক নিসানের শাখা ডাটসন ইন্ডিয়াও।

এখনও দেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া গাড়ি মারুতি অল্টো (৮০০ ও ১০০০ সিসির ইঞ্জিন ধরে)। সংস্থা জানিয়েছে, বিক্রি হওয়া অল্টোর ৭০ থেকে ৭৫% ৮০০ সিসির। সোসাইটি অব ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্সের হিসেবে, গত জুনেও দেশের যাত্রী গাড়ির (ইউভি বা ভ্যান বাদে) ২৭.৪ শতাংশের বেশি ৮০০-১০০০ সিসি ইঞ্জিনের দখলে ছিল। অল্টো-র মতো দু’ধরনের ইঞ্জিনের ছোট গাড়ি ‘কুইড’, এনেছে রেনো। ৮০০ সিসির পরে এ বার ১০০০ সিসির ইঞ্জিনের ‘রেডি-গো’ আনল ডাটসনও। উল্লেখ্য, নিসানের কম দামি গাড়ির ব্র্যান্ড ডাটসন।

Advertisement

কিন্তু যখন আধুনিক ও বড় গাড়ির চাহিদা বাড়ছে, তখন কেন ছোটর উপর ভরসা সংস্থাগুলির? রেনোর বক্তব্য, ভারতের মতো বড় দেশে ক্রেতাদের চাহিদাও ভিন্ন। কিন্তু প্রথম ক্রেতাদের বেশির ভাগই ৮০০ সিসির দিকে ঝোঁকেন। একই সুরে মারুতি ও ডাটসনের বক্তব্য, আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জীবনযাত্রায় বদল আসছে। তাই ছোট গাড়ি কিনলেও শক্তিশালী ইঞ্জিন, বিনোদনের মতো স্বাচ্ছন্দ্যের চাহিদা বাড়ছে ক্রেতাদের একাংশের মধ্যে। নিছক কাজের জন্য যাতায়াতের বাইরে গাড়ি চালানোর মজা ছোট গাড়িতেও চাইছেন তাঁরা।

রেনোর দাবি, শহরে তাদের ১০০০ সিসির কুইডের চাহিদা বেশি, গ্রামে ৮০০ সিসির। ডাটসন ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরম সাইগট বলছেন, ‘‘আমরা কম দামি ছোট গাড়ির বাজারে প্রথাগত ভাবনায় বদল আনতে তৈরি।’’ মারুতি ও রেনো-ও জানাচ্ছে, চাহিদা বদলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গাড়ি আনতে তৈরি তারাও।

আগে গাড়ি ব্যবসার রাশ ছিল অ্যাম্বাস্যাডরের হাতে। সঙ্গে ফিয়াটও ছিল। কিন্তু মারুতি-৮০০ পরে হয়ে উঠেছিল মধ্যবিত্তের গাড়ি কেনার সাধ ও সাধ্যের মেলবন্ধনের মূল সূত্র। তবে সে সময়ে শুধু গন্তব্যে পৌঁছনোর উপায় হিসেবেই দেখা হত গাড়িকে। সংস্কারের খোলা হাওয়ায় একে একে বহুজাতিক সংস্থা এ দেশে পা রাখার পরে চাহিদার সীমাও ছড়াতে থাকে। তবে বড় গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধির হার বেশি হলেও মোট সংখ্যার বিচারে এখনও দেশের গাড়ি ব্যবসার মূল রাশ ছোট গাড়ির হাতেই। তাই আমজনতার বাজার ধরতে ছোটকে উপেক্ষা করতে পারছে না মারুতির পরে এ দেশে পা রাখা রেনো, ডাটসনের মতো সংস্থাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন