প্রতীকী ছবি।
করোনার ধাক্কা সামলে ছন্দে ফিরেছে আবাসন ক্ষেত্র। চাহিদার পালে হাওয়া লাগায় দাম বাড়ছে বাড়ি-ফ্ল্যাটের। উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের সমীক্ষা বলছে, ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৫০টি শহরের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে আবাসনের দাম গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বছরে বেড়েছে। সব মিলয়ে গড়ে দাম বৃদ্ধির হার ১০.৬%। ২০০৫ সালের পরে সর্বোচ্চ।
করোনায় আর পাঁচটা ব্যবসার মতো থমকে গিয়েছিল আবাসন ক্ষেত্রও। মাথা নামিয়েছিল চাহিদা। এর পরে বাড়ি থেকে কাজের পরিধি বৃদ্ধির জেরে চাহিদা বাড়লেও আর্থিক পরিস্থিতির জেরে চাহিদার পুরোটা কেনাকাটায় পরিণত হয়নি। পরবর্তী পর্যায়ে ধীরে হলেও চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। চাহিদার পাশাপাশি, আরও কয়েকটি বিষয় সেই গতি বাড়িয়েছে। যেমন, ভারতে সুদের হার নেমেছিল সর্বকালীন নীচে। ঋণ নিতে উৎসাহও দেওয়া হচ্ছিল। আবার পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র-সহ কয়েকটি রাজ্য স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় দেওয়ায় সেই আর্থিক সুবিধা নিতে অনেক ক্রেতাই এগিয়ে আসেন। ভবিষ্যতেও এই সুবিধা বহাল থাকবে বলে শিল্পের আশা।
নাইট ফ্র্যাঙ্ক জানিয়েছে, ভারতে গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের নিরিখে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে হায়দরাবাদে, ২.৫%। ১৫০টি দেশের তালিকায় তার স্থান ১২৮তম। তালিকায় কলকাতার স্থান ১৩৫। দাম বৃদ্ধির হার ১.৫%। চেন্নাইয়ে দাম বেড়েছে ২.২%। বিশ্বের মধ্যে আবাসন সবচেয়ে বেশি দামি হয়েছিল তুরস্কের ইজ়মির শহরে, ৩৪.৮%। পক্ষান্তরে কুয়ালালামপুরে দাম কমেছে ৫.৭%।
যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, এই দাম বৃদ্ধির হিসাব কষা হয়েছে গত বছরের নিচু ভিতের নিরিখে। ফলে তা বাস্তবে আবাসন শিল্পের ক্ষেত্রে কতটা আশার আলো, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এ নিয়ে সমীক্ষায় কিছু বলা না হলেও শিল্পমহল আগেই জানিয়েছিল, দীর্ঘ দিন ধরে আবাসনের দাম কার্যত এক জায়গায় আটকে ছিল। বস্তুত, করোনার আগেই ভারতে অর্থনীতির ঝিমুনির জেরে চাহিদা ধাক্কা খায়। সেই অবস্থায় দাম বাড়িয়ে ব্যবসা আরও খোয়ানোর ঝুঁকি নিতে চায়নি শিল্পমহল।
নাইট ফ্রাঙ্ক ইন্ডিয়ার সিএমডি শিশির বৈজল জানান, গত টানা ছ’টি ত্রৈমাসিক ধরে আকর্ষণীয় ছিল আবাসনের বাজার। সেই চাহিদা বৃদ্ধির হাত ধরে তার দামও বেড়েছে। আপাতত তা হয় স্থিতিশীল থাকবে নয়তো আরও বাড়বে। তবে তাঁর বক্তব্য, সেই বিষয়টি নির্ভর করবে ভবিষ্যৎ চাহিদা, সুদের হার, মূল্যবৃদ্ধির চাপ, সরকারের ভূমিকার উপরে।