রাজ্য সরকারকে ধান বেচলে, দাম তুলনায় কিছুটা বেশি মিলছে ঠিকই। কিন্তু সেই টাকা জমা পড়ছে ব্যাঙ্কে। নোট-বন্দির এই জমানায় ইচ্ছেমাফিক তা তোলার জো এখন নেই। ফলে কিছুটা কম দামে হলেও খোলা বাজারে ধান বিক্রি করছেন চাষিরা। ফলে ধাক্কা খাচ্ছে ধান কিনতে রাজ্যের উদ্যোগ। সেই সমস্যার সমাধান খুঁজতে এ বার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
রাজ্যের আর্জি, যাঁরা সরকারকে ধান বেচবেন, ব্যাঙ্ক থেকে তাঁদের সপ্তাহে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত তুলতে দেওয়া হোক। এখন ওই সীমা ২৪ হাজার। বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তা ছাড়া, এখানে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের যে ১৭৭টি শাখায় বেশিরভাগ চাষির সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তার তালিকা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে দেবে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের দাবি, ওই সমস্ত শাখায় বেশি টাকা জোগানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। শুধু তা- ই নয়, পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এখন জেলা খাদ্য নিয়ামকদের ধান কেনার লক্ষ্য বা কোটা বেঁধে দিচ্ছে খাদ্য দফতর।
রাজ্যের লক্ষ্য, এ বার ৫২ লক্ষ টন ধান কেনা। সেখানে এখনও পর্যন্ত কেনা গিয়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টন। অথচ অন্য বছর এই সময়ের মধ্যে ১৫ লক্ষ টন মতো ধান সংগ্রহ করার কাজ সারা হয়ে যায়। মঙ্গলবার এ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ধান কেনার সবচেয়ে ভাল সময় ডিসেম্বর থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ। কিন্তু নোট-কাণ্ডের জেরে এ বার তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাঁর অভিযোগ, ধান কেনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য পুরো দাম চাষির অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু বিধিনিষেধের জেরে তাঁরা তা প্রয়োজন মতো তুলতে পারছেন না। এই সমস্যা মেটাতেই এ দিন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কলকাতা শাখার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রদীপবাবু এবং অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা কিছুটা শিথিল করার নিয়ে কথা হয়েছে সেখানেই।
আর জেলা খাদ্য নিয়ামকদের কোটা বেঁধে দেওয়ার বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গে তা দিনে ২,০০০ টন আর বর্ধমানে ২৫ হাজার টন। একই সঙ্গে নিয়ামকদের বলা হয়েছে চাষিদের বাড়ি গিয়ে বোঝাতে, যাতে তাঁরা সরকারকে ধান বিক্রি করেন।