— ফাইল চিত্র
বিদ্যুৎ আইন সংশোধনে কেন্দ্রের খসড়া প্রস্তাব আগেই বিতর্ক তৈরি করেছে। নিয়মবিরুদ্ধ হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছে রাজ্য। বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনগুলিকে নিয়ে গঠিত ফোরাম অব রেগুলেটর্স-ও দেশে একটি বিদ্যুৎ আইন চালুর ভাবনায় সহমত হয়নি। কিন্তু বিষয়টির মীমাংসা হওয়ার আগেই কেন্দ্র নতুন বিদ্যুৎ বিধি আনায় যুগপৎ বিস্মিত ও সংশয়ী বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ-সহ সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। তাদের অভিযোগ, গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত। কেন্দ্র সেই বিধি এনে কার্যত কমিশন ও রাজ্যগুলির অধিকার খর্ব করে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের ক্ষমতা হাতে পেতে চাইছে।
সোমবার কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহের দাবি ছিল, নয়া বিধিতে গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন ও উন্নত মানের বিদ্যুৎ পাওয়ার অধিকার রক্ষা করা হয়েছে। যা খর্ব করলে শাস্তি হবে বণ্টন সংস্থার। তাঁর আরও বক্তব্য, রাজ্য-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে বিধি তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি জারির পরেই তা বাস্তবায়িত হবে।
মঙ্গলবার রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখনও এ নিয়ে কেউ কিছু জানায়নি। বিজ্ঞপ্তিও বার হয়নি। তবে কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানলে ও ক্ষমতা হাতে নিতে চাইলে প্রতিবাদ করব।’’ তিনি জানান, এর আগে খসড়া আইনে রাজ্য ৩৮টি সংশোধনী দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ তথা রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার প্রাক্তন ডিরেক্টর অনির্বাণ গুহ-র দাবি, ‘‘বিধির বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু পদ্ধতিগত ত্রুটি আছে। আইনে গ্রাহকদের দায়িত্ব মূলত কমিশনের। কেন্দ্র সেই ক্ষমতা পেতে চাইছে। এই প্রবণতা ঠিক নয়। তা হলে আগে আইন বদলাতে হবে।’’
ফোরামের সূত্রেরও দাবি, কেন্দ্র বড়জোড় নীতি আনতে পারে। নিয়ম স্থির করার কথা কমিশনেরই। একাংশের দাবি, আইনে আছে, আবেদনের এক মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ মিলবে। বিধিতে এলাকাভেদে সেই সময় বেঁধেছে কেন্দ্র, যা তাদের করার কথা নয়। তাদের আশঙ্কা, গ্রাহকদের অধিকারের নামে পরোক্ষে হস্তক্ষেপ করে গোটা বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা এটা। ফলে এতে আগামী দিনে সব ধরনের গ্রাহকের স্বার্থ কতটা সুরক্ষিত থাকবে, তা নিয়ে ধন্দ থাকছেই।