বাজার কিন্তু সেই চাঙ্গা, ভরসা ফান্ডই

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বাজার এখন অনেক সময়ই চাঙ্গা থাকে অর্থনীতির ঝড় সামলে। সৌজন্যে মিউচুয়াল ফান্ড সমেত দেশীয় আর্থিক সংস্থার লগ্নি।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৫
Share:

বৃদ্ধির পূর্বাভাস চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে নামার দিনেও রেকর্ড গড়ল শেয়ার বাজার। ফের ৩৪ হাজারের গণ্ডি টপকে শুক্রবার নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে সেনসেক্স। আবার ১০,৫০০ টপকেছে নিফ্‌টিও। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বাজার এখন অনেক সময়ই চাঙ্গা থাকে অর্থনীতির ঝড় সামলে। সৌজন্যে মিউচুয়াল ফান্ড সমেত দেশীয় আর্থিক সংস্থার লগ্নি।

Advertisement

২০১৬ সালে অর্থনীতির হাল তুলনায় ভাল ছিল। নোটবন্দি ঘটেছিল একেবারে শেষে। ছিল না জিএসটির ধাক্কা। কিন্তু সে বছর সেনসেক্স উঠেছিল মাত্র ৫০৮.৯২ পয়েন্ট। সেখানে ২০১৭ সালে সেনসেক্সের উত্থান ৭,৪৩০ পয়েন্ট! যে বছর কি না দেশের অর্থনীতর উপর ঝড় গিয়েছে বিস্তর। মুখ থুবড়ে পড়েছে বৃদ্ধির হার।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনীতির ভাল-মন্দে বাজারে নিঃসন্দেহে প্রভাব পড়ে। কিন্তু খারাপ খবরে চট করে ধস নামে না। কিছুটা নামলেও ফের তা ঘুরে দাঁড়ায়। কারণ মূলত দু’টি। এক, বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নির উপর নির্ভরতা কমা। দুই, মিউচুয়াল ফান্ড সহ দেশীয় আর্থিক সংস্থাগুলির নাগাড়ে বিপুল বিনিয়োগ।

Advertisement

এ দেশে ফান্ডে লগ্নির অঙ্ক প্রথম দশ লক্ষ কোটি টাকা ছুঁতে যেখানে ৫১ বছর সময় লেগেছিল, সেখানে পরের ১০ লক্ষ কোটি এসেছে তিন বছরে। ২০১৪ সালের মে পর্যন্ত ফান্ডে লগ্নি ছিল ১০ লক্ষ কোটি টাকা। সেখানে গত নভেম্বরে তা দাঁড়িয়েছে ২২.৭৯ লক্ষ কোটি। এই বিপুল অঙ্কের একটা বড় অংশ খাটে ইকুইটি ফান্ডে। সেই টাকা বাজারে আসছে নিয়মিত। ব্যাঙ্কে ও ডাকঘরের স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদের হার কমা, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়া রিটার্ন পেতে মানুষের উৎসাহ, শেয়ার বাজার, ফান্ড সম্পর্কে ‘ভয়’ কমা ইত্যাদি কারণে আগামী দিনেও ফান্ডে লগ্নিতে টান পড়ার সম্ভাবনা সে ভাবে নেই। তাই বাজারও চাঙ্গা থাকার কথা বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তা ছাড়া ইপিএফে নতুন লগ্নির একটি অংশ সেখানে আসা তো আছেই।

কারণ রয়েছে এ ছাড়াও। ব্রোকিং সংস্থা শেয়ারখানের সিইও জয়দীপ অরোরা বলেন, ‘‘কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার বাজারকে চাঙ্গা রাখার বড় কারণ।’’ মিরে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের সিইও স্বরূপ মহান্তি বলেন, ‘‘প্রাথমিক সমস্যা মেটার পরে জিএসটির সদর্থক প্রভাবও বাজারে পড়বে।’’ ইউকো ব্যাঙ্কের প্রাক্তন এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর বি কে দত্তের মতে, অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা কমা ইন্ধন জোগাবে উত্থানে। বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, ‘‘পরিকাঠামোয় কেন্দ্রের লগ্নি বাজারে জ্বালানি জোগাবে।’’ তবে ফান্ডের ভরসায় বাজার ওঠা কতটা ঝুঁকিহীন, তা নিয়ে সন্দিহান স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন