প্রতীকী ছবি।
উৎসবের মরসুমে স্টকে লগ্নিকারীদের জন্য সুখবর। অক্টোবরে শেয়ার বাজারে আসছে দু’টি বড় সংস্থা। এর জন্য নিয়ম মেনে ‘ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং’ বা আইপিও আনছে তারা। ফলে তালিকাভুক্তির দিনে মোটা মুনাফার স্বপ্ন এখন থেকে দেখতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। জোড়া আইপিও আকার প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার কোটি হতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
ব্রোকারেজ ফার্মগুলির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে বম্বে এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে পা রাখবে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী দক্ষিণ কোরীয় সংস্থা এলজি ইলেকট্রনিক্স। আইপিওর মাধ্যমে বাজার থেকে ১৮ কোটি ডলার তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। ভারতীয় মুদ্রায় যেটা প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় এ দেশে ১৫ শতাংশ অংশীদারী কমিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এলজি ইলেকট্রনিক্স।
আইপিও আনতে গত বছরের ডিসেম্বরে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী ‘সিকিউরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া’ বা সেবির কাছে খসড়া নথি জমা করে ওই দক্ষিণ কোরীয় সংস্থা। পরে এ ব্যাপারে তাদের অনুমতি দেয় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সংস্থা। খসড়া নথি অনুযায়ী, আইপিওতে আবেদনের ৩৫ শতাংশ খুচরো বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত রেখেছে এলজি ইলেকট্রনিক্স।
এ ছাড়া যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক লগ্নিকারীরা ৫০ শতাংশ এবং অ-প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ১৫ শতাংশে আবেদন করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট দক্ষিণ কোরিয়ার বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম নির্মাণকারী সংস্থার অফার ফর সেল বা ওএফএসের মাধ্যমে মোট ১০ কোটি ২০ লক্ষ শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে।
গত বছর ২৭ হাজার ৮৭০ কোটি টাকার আইপিও এনে সবাইকে চমকে দেয় বহুজাতিক গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা হুন্ডাই মোটর। ২০২১ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বিমা সংস্থা এলআইসি (লাইফ ইনসিওর্যান্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া) এবং ফিনটেক সংস্থা পেটিএম যথাক্রমে ২১ হাজার কোটি ও ১৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকার আইপিও এনেছিল। বলা বাহুল্য এই হিসাবে অক্টোবরে চতুর্থ বৃহত্তম আইপিওর মাধ্যমে শেয়ার বাজারে পা রাখবে এলজি ইলেকট্রনিক্স। আর তাই লগ্নিকারীদের মধ্যে চড়ছে প্রত্যাশার পারদ।
অন্য দিকে অক্টোবরে আইপিও আনার কথা রয়েছে টাটা গোষ্ঠীর ব্যাঙ্ক বহির্ভূত আর্থিক সংস্থা বা এনবিএফসি (নন-ব্যাঙ্কিং ফিন্যান্সশিয়াল কর্পোরেশন) টাটা ক্যাপিটালের। এর আনুমানিক আকার ২০০ কোটি ডলার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় মুদ্রায় টাকার অঙ্ক ১৭ হাজার ২০০ কোটি ছা়ড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টাটা ক্যাপিটালের তালিকাভুক্তি হবে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু, সেই সময়সীমা যে পিছোচ্ছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
সূত্রের খবর, আইপিওর মাধ্যমে ৪৭ কোটি ৫৮ লক্ষ শেয়ার লেনদেন করতে পারে টাটা ক্যাপিটাল। এর মধ্যে ২১ কোটি নতুন স্টক থাকবে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া অফার ফর সেলে ২৬ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকার শেয়ার বিক্রি করবে টাটা গোষ্ঠীর এই সংস্থা। বর্তমানে টাটা ক্যাপিটালের ৮৮.৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মূল সংস্থা টাটা সন্সের হাতে। অন্য দিকে১.৮ শতাংশ স্টকের মালিকানা রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশনের হাতে। আইপিওর মাধ্যমে প্রথম সংস্থাটি ২৩ কোটি এবং দ্বিতীয়টি ৩ কোটি ৫৮ লক্ষ শেয়ার বিক্রি করবে বলে সূত্র মারফত মিলেছে খবর।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টক বা আইপিওতে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার ডট কম কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)