পরিষেবা সংস্থাগুলির অভিযোগের মুখে এ বার মোবাইলের মাসুল নীতি শোধরাতে চলেছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাই।
নিজেদের খারাপ আর্থিক অবস্থার জন্য ট্রাইয়ের নীতির দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলে বিভিন্ন টেলি পরিষেবা সংস্থা। তাদের মতে, এর ফলেই মুনাফা কুড়োচ্ছে রিলায়্যান্স জিও। লাভ কমছে অন্যান্য সংস্থার। এই অবস্থায় ট্রাই চেয়ারম্যান আর এস শর্মা জানান, আগামী সপ্তাহেই মাসুল নীতিকে স্বচ্ছ এবং বৈষম্যহীন করতে নির্দেশিকা জারি হবে।
সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর— এই তিন মাসে রিলায়্যান্স জিও-র নিট মুনাফা ৫০৪ কোটি টাকা। অথচ একই সময়ে এয়ারটেলের নিট মুনাফা কমেছে ৩৯%। টানা ৭টি ত্রৈমাসিকে লাভের অঙ্ক কমেছে। টেলিকম ক্ষেত্রের শীর্ষকর্তারা এর জন্য ট্রাইয়ের নীতিকেই দায়ী করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স জিও ‘ফ্রি কল’, ‘ফ্রি ডেটা’-র মতো নিখরচায় কথা বলা, ইন্টারনেট সংযোগের চমক দিয়ে মাঠে নামে। প্রথমে তিন মাস, তার পর ছ’মাসের জন্য এই সুযোগ দেওয়া হয়। এয়ারটেল, ভোডাফোন, আইডিয়ার মতো সংস্থার অভিযোগ ছিল, জিও সরকারি নিয়ম ভাঙছে। নিয়ম অনুযায়ী, ৯০ দিনের বেশি এই ধরনের অফার দেওয়া মানা। অন্যদের ব্যবসা বেআইনি ভাবে দখল করতেই এই ধরনের মাসুল নির্ধারিত হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন সুনীল ভারতী মিত্তলরা। যুক্তি ছিল, খরচের থেকেও কম মাসুল নিচ্ছে জিও। তবে জিও-র পাল্টা দবি ছিল, কম খরচে সকলের নাগালে ডিজিটাল পরিষেবা পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ।
এরপর অক্টোবরে মোবাইল পরিষেবায় একে অপরের সংযোগে ব্যবহারের খরচ বা ‘ইন্টারকানেকশন ইউসেজ চার্জ’ কমিয়ে দেয় ট্রাই। সে সময়েও ট্রাই-এর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল ওঠে। কারণ রিলায়্যান্স জিও এই আইইউসি তুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিল। বাকিরা ছিল তার বিরুদ্ধে। জিও-র দাবি ছিল, পুরনো সংস্থাগুলি এর থেকে বিপুল আয় করে। ট্রাই-এর সিদ্ধান্ত জিও-র পক্ষেই যায়।
ট্রাই সূত্রের খবর, মাসুল নীতিতে কিছু ত্রুটি থাকার জন্য জিও-র সঙ্গে অন্যদের যে-লড়াই শুরু হয়েছে, তা এ বার শোধরানো হবে। আন্তর্জাতিক নীতিতে কী রয়েছে, নির্দেশিকা তৈরির আগে তা-ও খতিয়ে দেখা হয়েছে।