Car Industry

Car Industry: চাপে গাড়ি শিল্প, মন্ত্রীর চোখ তবু জৈব জ্বালানিতে

করোনার আগে থেকেই গাড়ি ব্যবসা কার্যত তলানিতে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

দ্রুত পুরোদস্তুর বৈদ্যুতিক গাড়ি আনতে উদ্যোগী না-হলে, প্রয়োজনে ‘বুলডোজ়ার’ চালিয়ে সংস্থাগুলিকে তাতে বাধ্য করা হবে বলে অতীতে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। আর মঙ্গলবার তাঁর বার্তা, ছ’মাসের মধ্যে বাধ্যতামূলক ভাবে পুরোপুরি বায়ো-ফুয়েল বা জৈব জ্বালানিতে চলতে পারে এমন ফ্লেক্স ইঞ্জিন চালিত গাড়ি আনার জন্য সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হবে। কারণ, যেখানে পেট্রলের দাম লিটারে প্রায় ১১০ টাকা, সেখানে বায়ো-ইথানলের দর ৬৫ টাকা। ফলে এতে সুরাহা হবে গাড়ির মালিকের।

Advertisement

মন্ত্রীর এই বক্তব্যে বিস্মিত সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। তাদের একাংশের মতে, করোনার আগে থেকেই গাড়ি ব্যবসা কার্যত তলানিতে। সেখানে গত বছর ভারত স্টেজ-৬ গাড়িতে প্রায় ৭৫,০০০ কোটি টাকা লগ্নির পরে এত দ্রুত কী ভাবে নতুন বিনিয়োগের পথে হাঁটবে তারা? বিশেষত যখন কাঁচামালের চড়া দর এবং সেমিকন্ডাকটরের মতো যন্ত্রাংশের অভাবে উৎপাদনই ধাক্কা খাচ্ছে। তাদের প্রশ্ন, এর সমাধানের বদলে কেন ‘জোর করে’ নতুন প্রযুক্তির পথে তাদের হাঁটতে বাধ্য করার কথা বলছেন গডকড়ী? তা ছাড়া মোদী জমানায় তেলে বিপুল বাড়ানো শুল্ক ছেঁটে মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার বদলে, সেই দায় কোন যুক্তিতে সংস্থাগুলির উপরে চাপাতে চাইছেন তাঁরা!

সম্প্রতি গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম এবং যন্ত্রাংশ নির্মাতাদের বার্ষিক সাধারণ সভাতেও শিল্পের বক্তব্য ছিল, চড়া কর, তেলের রেকর্ড দর, গাড়ি কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বৃদ্ধির জেরে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন ক্রেতা। এই অবস্থায় গত ক’বছরে তাদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা মেটাতে অবিলম্বে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা দরকার। এ জন্য শিল্পমহল কেন্দ্রকে কথা কম বলে কাজ করে দেখানোর দাবি জানালেও, মন্ত্রী অবশ্য আজও স্পষ্ট দিশা দেননি। শুধু বলেছেন, পাঁচ বছরে ভারতকে গাড়ি শিল্পে হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চান তাঁরা। যেখানে বায়ো ফুয়েল এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়বে। এ জন্য তিনি সওয়াল করেছেন, যে সব ক্রেতা পুরনো প্রথাগত জ্বালানির গাড়ি বাতিল করে বৈদ্যুতিক গাড়ি কিনবেন, তাদেরকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির দামে যথেষ্ট ছাড় দেওয়া এবং রাজ্যের করে ছাড়ের পক্ষেও।

Advertisement

শিল্পের একাংশের মতে, কেন্দ্র সরাসরি নিজেরা করে ছাড় না-দিয়ে এই দায় ঠেলছে গাড়ি সংস্থা এবং রাজ্যের ঘাড়ে। কিন্তু, বৈদ্যুতিক বা বায়ো ফুয়েল গাড়ি আনা অথবা ভারতকে এই শিল্পের হাব করে তোলা— এ সবই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অঙ্গ। আগে দ্রুত ব্যবসার চাকা ঘোরানোর পদক্ষেপ জরুরি। গাড়ির দাম বাড়ানোর কথা ঘোষণা করার এক দিনের মাথায় আজই উৎপাদনে ধাক্কা খাওয়ার কথা জানিয়েছে মারুতি-সুজ়ুকি। মঙ্গলবার তারা বলেছে, সেমিকন্ডাকটরের অভাবে কারণে সেপ্টেম্বরে গুজরাত এবং হরিয়ানার কারখানায় সাধারণ উৎপাদনের ৪০% গাড়ি তৈরি করা যাবে। আর্থিক পরিষেবা সংস্থা জেফ্রিসেরও মতে, সেমিকন্ডাকটরের অভাবে ধাক্কা খাবে গাড়ি উৎপাদন। ইতিমধ্যেই সেই প্রভাব স্পষ্ট। যার জের পড়তে পারে বিক্রিতে। তাই কেন্দ্র কেন সেই সব সমস্যা সমাধানে জোর দিচ্ছে না, সে প্রশ্নও তুলছে শিল্প।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন