Rice

রফতানি বন্ধে ক্ষতি, ভারতকে বার্তা আইএমএফের

সরকারি মহলের দাবি, দেশে চালের দামকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই বিদেশে বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশেষত সামনে যেহেতু উৎসবের মরসুম। এ কথা বিবৃতিতে স্পষ্ট বলাও হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ০৭:৫৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

আনাজ আগুন। ক্রমশ চড়ছে চালের দর। তাতে রাশ টানতে দেশীয় জোগান বাড়ানোর জন্য সম্প্রতি বাসমতি বাদে অন্য সমস্ত সাদা চালের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা বসিয়েছে কেন্দ্র। তবে ভারতের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দাম বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করল আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)। সর্বত্র চড়া মূল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে নয়াদিল্লিকে এই নিষেধাজ্ঞা তুলতে উৎসাহ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে তারা। বুধবার প্রতিষ্ঠানের মুখ্য অর্থনীতিবিদ পিয়ের-অলিভিয়ের গৌরিঞ্চাস বলেন, রফতানি বন্ধের মতো সিদ্ধান্ত বিশ্ব অর্থনীতির পক্ষে ক্ষতিকর। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দামকে ঠেলে তুলতে পারে। গোটা বিশ্বই ধাক্কা খাবে তখন।

Advertisement

সরকারি মহলের দাবি, দেশে চালের দামকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই বিদেশে বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশেষত সামনে যেহেতু উৎসবের মরসুম। এ কথা বিবৃতিতে স্পষ্ট বলাও হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, ২০২৪ সালে লোকসভা ভোট। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কড়া নির্দেশ, তার আগে কোনও ভাবেই দামকে বাড়তে দেওয়া চলবে না। এমনকি সে ক্ষেত্রে দামে রাশ টানার জন্য যা যা করা প্রয়োজন, তার সব কিছু নির্দ্বিধায় করতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে। কারণ মোদী সরকারের আশঙ্কা, গত বছর গমের দাম সরকারের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। এ বছর একই ভাবে ঘুম ছোটাতে পারে চাল। আরও উদ্বেগের বিষয় হল, গমের তুলনায় দেশে চাল বেশি খাওয়া হয়। ফলে তার দর চড়লে মানুষের পকেটে চাপ পড়ে বেশি। ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেডের তথ্যও বলছে, গত এক বছরে দেশে চালের দাম ১১% বেড়েছে। এক মাসে বেড়েছে ৩%। গত সেপ্টেম্বরে পণ্যটিতে ২০% রফতানি শুল্ক চাপিয়ে লাভ হয়নি। রফতানি উল্টে বেড়েছে।

এ দিন লোকসভায় তৃণমূল প্রশ্ন করে দেশে খাদ্যশস্যের মজুত নিয়ে। উদ্বেগ বাড়িয়ে কেন্দ্র লিখিত ভাবে জানিয়েছে, ১ জুলাইয়ের হিসেবে চাল রয়েছে ২৫৩.৫৯ লক্ষ টন। যা গত বছরের ৩১৭.০৭ লক্ষ টনের থেকে কম। গমের মজুত অবশ্য এ বার বেশি, ৩০১.৪৫ লক্ষ টন। চালকলে যায়নি এমন ধান রয়েছে ১৫৬.১০ লক্ষ টন।

Advertisement

মঙ্গলবার আইএমএফ-এর গবেষণা বিভাগের প্রধান ড্যানিয়েল লেহ বলেছিলেন, বহু দেশেই পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে, যা সুদ আরও বাড়ার আশঙ্কা কমাচ্ছে। সেই প্রেক্ষিতে দেখলে ভারতের চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত দেশে তার দাম কমাতে সাহায্য করবে। কিন্তু অন্যান্য দেশও সেই পথে হাঁটলে তা জিনিসের দাম বাড়াতে পারে। তাই রফতানিতে যে কোনও নিষেধাজ্ঞা দ্রুত ধাপে ধাপে তুলে নেওয়া উচিত।

এ দিকে, জুন থেকে বিভিন্ন রাজ্যকে খোলা বাজারে বিক্রির প্রকল্পের অধীনে গম, চাল বিক্রি বন্ধ করেছে কেন্দ্র। যা চালুর আর্জি জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ,কর্নাটক, তামিলনাড়ু। বুধবার লোকসভায় লিখিত জবাবে খাদ্য ও ক্রেতা সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি বলেন, বৃষ্টি কম হওয়ার আশঙ্কা থাকায় খরিফ মরসুমে খাদ্যপণ্যগুলির মজুত ভান্ডার বাড়াতে এবং দামে রাশ টানতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন