Indian Economy

অর্থনীতির ভিত পোক্ত, তবে আছে উদ্বেগও

সম্প্রতি আমেরিকার দীর্ঘ মেয়াদের ক্রেডিট রেটিং ‘AAA’ থেকে এক ধাপ কমিয়ে ‘AA+’ করেছে ফিচ রেটিংস। তাতেই কেঁপে উঠেছে বিশ্ব বাজার।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৩ ০৬:৩৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

গত বুধ এবং বৃহস্পতিবার মিলিয়ে সেনসেক্স নেমেছিল ১২১৯ পয়েন্ট। মূল কারণ দীর্ঘ মেয়াদে আমেরিকার ক্রেডিট রেটিংয়ের অবনমন। আমেরিকা এমন একটি দেশ, যার অর্থনীতিতে মৃদু ধাক্কা লাগলেও তার প্রভাব পড়ে বিশ্ব অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে। ফলে কিছুটা আঁচ ভারতীয় শেয়ার বাজারেও লেগেছে। অথচ এই পতনের সঙ্গে ভারতীয় অর্থনীতির তেমন কোনও যোগ নেই। ফলে পতন স্থায়ী হয়নি। শুক্রবারই বাজার ঘুরে দাঁড়ায়। সেনসেক্স মাথা তোলে ৪৮১ পয়েন্ট। এই ধরনের পতন সব সময়ে সুযোগ সন্ধানী লগ্নিকারীদের কম দামে ভাল শেয়ার কেনার সুযোগ করে দেয়। এই সমস্ত ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে হয় দ্রুত। কৌশলীরা আগে থেকে ভাল শেয়ার বাছাই করে দামের পতনের অপেক্ষা করেন।

সম্প্রতি আমেরিকার দীর্ঘ মেয়াদের ক্রেডিট রেটিং ‘AAA’ থেকে এক ধাপ কমিয়ে ‘AA+’ করেছে ফিচ রেটিংস। তাতেই কেঁপে উঠেছে বিশ্ব বাজার। কিন্তু ভারতীয় অর্থনীতি সুঠাম থাকায় এখানে তার তেমন প্রভাব পড়বে না বলে মত প্রকাশ করেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। ফলে শুক্রবার বাজার ঘুরে দাঁড়ায়। বস্তুত, আমেরিকার রেটিং প্রকাশিত হওয়ার পরে ভারতের রেটিং এক ধাপ বাড়ায় গোল্ডম্যান স্যাক্স।

এ বার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ভারতীয় অর্থনীতি এখন কোথায় দাঁড়িয়ে। জুলাইয়ে জিএসটি বাবদ সরকারের কোষাগারে জমা পড়েছে ১.৬৫ লক্ষ কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১% বেশি। সামনের মাসগুলিতে এই সংগ্রহ আরও বাড়বে বলে আশা। জিএসটি সংগ্রহ বৃদ্ধি ব্যবসা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। ভারতের পরিষেবা ক্ষেত্রের এসঅ্যান্ডপি পিএমআই সূচক জুনের ৫৮.৫ থেকে এক লাফে বেড়ে জুলাইয়ে ৬২.৩ অঙ্কে পৌঁছেছে। শিল্পোৎপাদন সূচক অবশ্য যৎসামান্য কমে ৫৭.৮ থেকে হয়েছে ৫৭.৭। এই দুই সূচক ৫০-এর বেশি থাকার অর্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বৃদ্ধি। জুনে দেশের আটটি প্রধান শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ছিল ৮.২%। যা পাঁচ মাসের সর্বোচ্চ। ওই মাসে ইস্পাতের উৎপাদন বেড়েছে ২১.৯%। কয়লা এবং সিমেন্টের উৎপাদনও বেড়েছে ভালই।

গত সপ্তাহে যে সমস্ত সংস্থার ফলাফল আমাদের হাতে এসেছে, তাদের বেশিরভাগই আগের তুলনায় ভাল মুনাফা করেছে। অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) স্টেট ব্যাঙ্ক ঘরে তুলেছে রেকর্ড মুনাফা (১৬,৮৮৪ কোটি টাকা)। ১৪% লাভ বেড়েছে ভারতী এয়ারটেলের। পৌঁছেছে ১৬১২ কোটি টাকায়। সিইএসসির লাভ বেড়েছে ২৪%। ব্রিটানিয়ার মুনাফা ৩৬% বেড়ে ৪৫৫ কোটিতে পৌঁছেছে। ব্যাঙ্ক অব বরোদার মুনাফা ৮৮% বেড়ে হয়েছে ৪০৭০ কোটি। ইন্ডিয়ান অয়েল এবং বিপিসিএলের পরে নজর কাড়া ফলাফল করেছে এইচপিসিএল। গত বছরের প্রথম তিন মাসে ১০,১৯৬ কোটি টাকা লোকসানের জায়গায় এ বারে লাভ হয়েছে ৬২৩০ কোটি। সবকটি তেল সংস্থার মুনাফা এতটা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমার অবশ্য কোনও লক্ষণ নেই। ঘড়ি, গয়না, চশমা প্রস্তুতকারী টাইটানের লাভ অবশ্য ৪% কমেছে।

তবে উদ্বেগের দিকও কিছু আছে:

  • বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ফের বৃদ্ধি। গত সপ্তাহে ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুড ৮৫ ডলার ছাড়িয়েছে।
  • খামখেয়ালি আবহাওয়ায় কৃষি উৎপাদনে ক্ষতি। মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা।
  • ৮-১০ অগস্ট রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির বৈঠক। নজর থাকবে সুদ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের দিকে।
  • জুলাইয়ের খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার জানা যাবে সেই বৈঠকের দিন কয়েকের মধ্যে। তা জুনের ৪.৮১% থেকে আরও কিছুটা বাড়তে পারে বলেই মনে করছে সকলে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন