Reserve Bank of India (RBI)

তোপের মুখে খেলাপিদের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে ব্যাখ্যা

ঋণখেলাপিদের সঙ্গে এমন চুক্তির নিয়ম ১৫ বছর ধরে চালু আছে। বরং সাধারণ ঋণখেলাপিরা যাতে ধার মেটানোর পরে ১২ মাস ব্যাঙ্কের ঋণ না পায় (কুলিং পিরিয়ড), তার ব্যবস্থা করা হয়েছে এখন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৩ ০৬:১৪
Share:

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। —ফাইল চিত্র।

স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপি বা ঋণ নিয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন, এমন ব্যক্তি বা সংস্থার সঙ্গে বকেয়া আদায় নিয়ে আপস চুক্তি করা যাবে বলে গত ৮ জুন ঋণনীতি প্রকাশের সময়ে নির্দেশিকা জারির কথা জানিয়েছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। যার বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং ব্যাঙ্কের কর্মী-অফিসারদের কিছু ইউনিয়ন মোদী সরকারের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের একাংশকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল। সে নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও, মঙ্গলবার প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে গোটা বিষয়টি স্পষ্ট করল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। সেখানে তারা দাবি করল, ওই নিয়ম আদতে দীর্ঘ দিন ধরেই চালু রয়েছে। এখন সেগুলিই আরও বাস্তবসম্মত করা হয়েছে। কিছু বিষয় আরও আঁটোসাঁটো করে আনা হয়েছে বাড়তি স্বচ্ছতা। যেমন, চুক্তি করলেও জালিয়াত বা স্বেচ্ছা খেলাপিদের বিরুদ্ধে চলা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হবে না। এমনকি তারা চটজলদি নতুন ঋণ পাবে না। যদিও ইউনিয়নগুলি এখনও এই নির্দেশের বিরোধিতায় অটল।

Advertisement

এ দিন আরবিআই জানিয়েছে, নির্দেশিকায় তেমন নতুন কিছু বলা হয়নি। ঋণখেলাপিদের সঙ্গে এমন চুক্তির নিয়ম ১৫ বছর ধরে চালু আছে। বরং সাধারণ ঋণখেলাপিরা যাতে ধার মেটানোর পরে ১২ মাস ব্যাঙ্কের ঋণ না পায় (কুলিং পিরিয়ড), তার ব্যবস্থা করা হয়েছে এখন। তবে ওই সুবিধা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি এবং ঋণ প্রতারকেরা পাবে না। ইচ্ছাকৃতদের ক্ষেত্রে তালিকা থেকে নাম মোছার পরে ৫ বছর বাদে নতুন প্রকল্পের জন্য ঋণ পেতে পারে। প্রতারকেরা পুরো টাকা মেটানোর ৫ বছর পরে ধার পেতে পারবে।

পাশাপাশি, এদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা থাকলে, তা-ও আগের মতোই চলবে। স্বেচ্ছা খেলাপি এবং প্রতারকদের ঋণ ঢেলে সাজার চুক্তির বিষয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নৈতিকতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক।

Advertisement

তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বক্তব্যে সন্তুষ্ট নয় ব্যাঙ্কের কর্মী-অফিসারদের সংগঠনগুলি। অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের সভাপতি রাজেন নাগর এ দিন বলেন, “ইচ্ছাকৃত ভাবে ঋণখেলাপি বা ঋণ নিয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতারণায় অভিযুক্তদের কোনও সুবিধা দেওয়ার আমরা বিরোধী। কারণ আমজনতার জমা রাখা টাকা তারা কার্যত লুট করেছে। সরকার তাদের প্রতি কেন দয়া দেখাতেউদ্যোগী হবে?’’

অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের রাজ্য সম্পাদক শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, অল ইন্ডিয়া ন্যাশনালাইজ়ড ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাসও বলেন, “ওই সব ঋণখেলাপিরা যা করেছে, তা দেশের অর্থনীতির উপরে আঘাত। তাদের কোনও সুবিধা দেওয়া চলবে না। এতে উল্টে ঋণ শোধ না করার প্রবণতা আরও বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন