জিএসটি নিয়ে চিন্তা বহাল ছোট ব্যবসার

সোমবার ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটি দিল্লিতে প্রশ্ন তুলেছে, ৬০% ব্যবসায়ীর কাছেই কম্পিউটার নেই। তাঁরা জিএসটিতে কেনা-বেচার হিসেব রাখবেন কী করে? কী ভাবেই বা ফাইল করবেন রিটার্ন? সংগঠনের মহাসচিব প্রবীণ খাণ্ডেলওয়ালের অভিযোগ, তাঁরা সরকারের কাছে দাবি করেছেন বাজারে কম্পিউটার কিয়স্ক খোলার। প্রয়োজনে সংগঠনের অফিসকে রিটার্ন ফাইলের জন্য ব্যবহার করারও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৭ ০৩:০০
Share:

চর্চায়: আমদাবাদে রথযাত্রাতেও জিএসটি! ভক্তের পিঠে প্রশ্ন, নতুন এই কর আশীর্বাদ নাকি দীর্ঘ মেয়াদের ধাক্কা? রয়টার্স

মাঝে আর মাত্র তিন দিন। কিন্তু জিএসটি চালুর মুখেও তা নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের। রাজধানী দিল্লি থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদীর খাসতালুক আমদাবাদ— জিএসটি নিয়ে সোমবারও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক ব্যবসায়ী।

Advertisement

গুজরাতে বস্ত্র ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। তিন দিন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন দিল্লির আসবাব ব্যবসায়ীরা। চড়া করের হার নিয়ে চিন্তিত বাজি প্রস্তুতকারকরা। ব্যবসায়ীদের কোনও সংগঠন প্রতিবাদে ধর্মঘটের কথা বলছে, তো আর একটি সংগঠন বলছে মসৃণ ভাবে জিএসটি চালু করতে সহায়তার জন্য প্রশিক্ষণ শিবির চালুর কথা। এমনকী আরএসএস-এর শাখা সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ অভিযোগ তুলেছে, পণ্য-পরিষেবা কর এ ভাবে চালু হলে, ছোট ব্যবসায়ীরা মার
খাবেন। সেই সুযোগে আরও বাড়বে চিনা পণ্যের আমদানি।

সোমবার ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটি দিল্লিতে প্রশ্ন তুলেছে, ৬০% ব্যবসায়ীর কাছেই কম্পিউটার নেই। তাঁরা জিএসটিতে কেনা-বেচার হিসেব রাখবেন কী করে? কী ভাবেই বা ফাইল করবেন রিটার্ন? সংগঠনের মহাসচিব প্রবীণ খাণ্ডেলওয়ালের অভিযোগ, তাঁরা সরকারের কাছে দাবি করেছেন বাজারে কম্পিউটার কিয়স্ক খোলার। প্রয়োজনে সংগঠনের অফিসকে রিটার্ন ফাইলের জন্য ব্যবহার করারও। কিন্তু এখনও সাড়া মেলেনি। কিয়স্ক করলেও কতটা সুরাহা হবে, সে বিষয়ে সংশয়ী তিনি।

Advertisement

তা ছাড়া, করের হার নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ব্যবসায়ী মহলে। আমদাবাদ-সুরাতের বস্ত্র ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলেছেন, কাপড়ের উপর জিএসটি বসানো নিয়ে। তাঁদের দাবি, তাঁরা এ জন্য তৈরি নন। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ১ জুলাই থেকে ধর্মঘটেরও।

প্রবীণের প্রশ্ন, জিএসটি পরিষদে ঠিক হয়েছিল ২৮% কর বসবে শুধু ভোগ্যপণ্য ও পরিবেশ বা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক পণ্যে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তা বসেছে স্কুটারের যন্ত্রাংশেও। কিছু ক্ষেত্রে আবার একসঙ্গে যে সব পণ্য বিক্রি হয়, তার একেকটির উপর এক-এক রকম কর বসেছে। যেমন, মোবাইল সেটে এক রকম, তো চার্জারে আর এক। ইয়ার-ফোনে আবার তা আলাদা। ফলে এই তিন পণ্য যখন একসঙ্গে বাক্সবন্দি হয়ে বিক্রি হবে, তখন কত হারে কর বসবে, তা স্পষ্ট নয়।

খাদ্যশস্য নিয়ে অনেকের প্রশ্ন, খোলা চাল-ডালে জিএসটি-র হার শূন্য। কিন্তু ব্র্যান্ডেড হলে, তা ৫%। এদিকে ফুড সেফটি স্ট্যান্ডার্ডস অনুযায়ী, চাল-ডালের বস্তায় তা কবে বন্দি হয়েছে, কোন সংস্থা বিক্রি করছে, এই সমস্ত তথ্য ছাপতেই হয়। তখন আবার তা ব্র্যান্ডেড হিসেবে গণ্য হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি, জিএসটি সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ জানাতে একটি নিরপেক্ষ ব্যবস্থা তৈরি করা হোক। অনেকটা লোকপাল কিংবা ওম্বাডসম্যানের ধাঁচে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন