আগামী সপ্তাহে ‘গ্রাহক স্বার্থে’ পোর্টাল চালুর কথা ভাবছে ট্রাই।
হয় টিভির পর্দা। নয়তো টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাইয়ের ওয়েবসাইট। কেব্ল টিভি, ডিটিএইচের মতো পরিষেবায় নতুন নিয়ম জানতে ভরসা এখনও এটুকুই। প্রথম দফায় সময়সীমা মানা যায়নি। নতুন ব্যবস্থা চালু করতে সময় বাড়ানোর পরেও কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহ। কিন্তু গ্রাহকের দরজায় নতুন ব্যবস্থা বোঝাতে, চ্যানেল বাছাইয়ের সুযোগ দিতে কিংবা তার দাম বলার জন্য এখনও সে ভাবে পৌঁছতেই পারেননি অধিকাংশ মাল্টি সিস্টেম অপারেটর (এমএসও), লোকাল কেব্ল অপারেটররা (এলসিও)। কার্যত দিশাহীন অবস্থা। এই অবস্থায় আগামী সপ্তাহে ‘গ্রাহক স্বার্থে’ পোর্টাল চালুর কথা ভাবছে ট্রাই। কিন্তু সেখানেও প্রশ্ন, ইংরেজি ভাষার ওয়েবসাইটেই যেখানে বেশির ভাগ মানুষ সড়গড় নন, তখন পোর্টাল সেই তথ্যের আঁধার মুছবে কী ভাবে?
গ্রাহকদের অভিযোগ, ট্রাই এলসিওদের বাড়ি পৌঁছনোর নির্দেশ দিলেও বেশির ভাগ জায়গাতেই তা হয়নি। ফলে বিভ্রান্তি বাড়ছে। অনেক জায়গায় অপারেটররা সর্বোচ্চ ১৩০ টাকায় দূরদর্শন-সহ প্রথম ১০০টি চ্যানেলে শুধু ফ্রি টু এয়ার (এফটিএ) চ্যানেল নিতে ‘বাধ্য করলেও’ সব ক্ষেত্রে কড়া অবস্থান নিচ্ছে না ট্রাই।
ট্রাইয়ের এক কর্তার অবশ্য দাবি, আগের চেয়ে বিষয়টি স্বচ্ছ হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে ধোঁয়াশা আরও কাটবে। পোর্টাল চালুর ভাবনাও সেই কারণে। যাতে গ্রাহকেরা সেখানে পছন্দের চ্যানেল বা প্যাকেজ বেছে তার তালিকা এলসিওদের জানাতে পারেন। কিন্তু সেখানেও প্রশ্ন, সেই তালিকা এলসিওরা মানবেন তো?
ট্রাইয়ের নির্দেশ
• নতুন নিয়ম ও চ্যানেলের জানাতে ৭ জানুয়ারির মধ্যে অন্তত ৩০% গ্রাহকের
দরজায় পৌঁছতে হবে সংশ্লিষ্ট শিল্পকে। দিতে হবে চ্যানেল বাছাইয়ের সুযোগও।
• আরও এক সপ্তাহের মধ্যে (১৪ জানুয়ারি) পৌঁছতে হবে ৬০ শতাংশের দরজায়। ২১% জানুয়ারির মধ্যে ১০০%।
• ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুরনো ব্যবস্থাতেও সব চ্যানেল চালু।
• নতুন করে সময়সীমা না বাড়লে পুরনো ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ার কথা ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই।
এক ট্রাই কর্তার অবশ্য দাবি, পরে পোর্টাল থেকে অনলাইনে সরাসরি এমএসওর কাছে তালিকা পাঠানোর সুযোগ মিলবে। ফলে এলসিওদের আপত্তির সুযোগ থাকবে না। কিন্তু প্রশ্ন, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তা সম্ভব?
গ্রাহকের অভিযোগ
• বাড়িতে এসে জানানো তো দূর অস্ত্, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রশ্নের জবাব মিলছে না দোকানে গিয়েও।
• এমএসও-র ওয়েবসাইট এখনও ততটা তৈরি নয়। বাড়ি-বাড়ি সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে অন্তত এখনও পর্যন্ত যথেষ্ট নয় ট্রাইয়ের প্রচারও।
• আঞ্চলিক ভাষায় তথ্যে খামতি। ফলে বিষয়টি বুঝে উঠতে গিয়েই বিপাকে গ্রাম, মফসস্ল এমনকি শহরের লোকের একাংশ।
নতুন দাওয়াই
• শুধু তথ্য দিতেই নতুন পোর্টাল তৈরির ভাবনা। যেখানে বিভিন্ন চ্যানেলের দাম দেখে নিজের পছন্দ অনুসারে তা বাছতে
পারবেন গ্রাহক।
• সম্ভাব্য প্রশ্নের (এফএকিউ) উত্তর আঞ্চলিক ভাষাতেও।
কিন্তু প্রশ্ন
• ট্রাইয়ের ওয়েবসাইটে তো মাসুল-তথ্য রয়েছে। সেখানে তা দেখছেন ক’জন? সেখানে ঢুঁ মারা লোকের সংখ্যা কম হলে, পোর্টাল চালুর পরিকল্পনা কাদের জন্য?
• সেই পোর্টালে চ্যানেল বেছে তালিকা শেষমেশ জমা দিতে হবে কেব্ল অপারেটরদের কাছেই। সেই তালিকা অপারেটররা মানবেন তো?
একই ভাবে ওয়েবসাইটে ‘এফএকিউ’ অংশেও সব ব্যাখ্যা থাকার কথা বলছে ট্রাই। কিন্তু ইংরেজি ভাষা সবাই বুঝতে পারছেন কি? বেগতিক বুঝে তা আঞ্চলিক ভাষায় প্রকাশে উদ্যোগী হচ্ছে ট্রাই।