—প্রতীকী ছবি।
পর্যটন বয়কটের পর এ বার ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’। পছন্দের জায়গায় গিয়ে বিয়ে করার ক্ষেত্রে তুরস্ককে ছেঁটে ফেলছেন চার হাত এক করতে চলা ভারতীয় তরুণ-তরুণীরা। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তাকে কেন্দ্র করে ‘যুদ্ধে’ পাকিস্তানকে সমর্থনের জেরে এ ভাবেই পূর্ব ইউরোপের দেশটিকে ‘সাজা’ দিতে আসরে নেমেছেন তাঁরা। অন্য দিকে একের পর এক ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’ বাতিল হওয়ায় আঙ্কারার যে কয়েক কোটি টাকা লোকসান হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।
সূত্রের খবর, তুরস্কের পর্যটন অর্থনীতিতে ভারতীয়দের গন্তব্য-বিবাহের বড় অবদান রয়েছে। এর থেকে ফি বছর গড়ে ১৪ থেকে ১৫ কোটি ডলারের বেশি আয় করে আঙ্কারা। চলতি বছরে সেই অঙ্ক অর্ধেকে নেমে যেতে পারে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। কারণ, তুরস্কে ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’ বাতিলের প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এত দিন পর্যন্ত গন্তব্য-বিবাহের ক্ষেত্রে পূর্ব ইউরোপের বেশ কয়েকটি জায়গাকে ভারতীয়রা সর্বাধিক পছন্দ করে এসেছেন। সেগুলি হল, ইস্তানবুলের প্রাসাদ ও বোড্রাম উপকূলীয় আবাসস্থল। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ভারতীয়দের মোট ৫০টি জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আয়োজন করে তুরস্ক। সেগুলি থেকে আয়ের পরিমাণ ছিল ৮০ লক্ষ ডলার। লম্বা সময় ধরে ওই বিয়ের উৎসব চলেছিল। ৫০০-র বেশি অতিথি সেখানে অংশগ্রহণ করেন বলে জানা গিয়েছে।
তুরস্কের ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’য়ের বেশ কয়েকটি আর্থিক প্যাকেজ রয়েছে। দেশটির পর্যটন দফতর জানিয়েছে, ১০০ জন অতিথির ভারতীয় বিবাহের ক্ষেত্রে ৩ লক্ষ ৮৫ হাজার ডলার নিয়ে থাকে তারা। ২০১৮ সালে মাত্র ১৩টি ভারতীয় বিয়ের আসর বসেছিল পূর্ব ইউরোপের ওই দেশে। গত বছর সেটা বেড়ে ৫০-এ পৌঁছোয়। অর্থাৎ, এই খাতে ৩০০ শতাংশ বৃদ্ধি দেখেছে আঙ্কারা।
কিন্তু, চলতি বছরের মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে ইসলামাবাদকে খোলাখুলি ভাবে সমর্থন করতে থাকে আঙ্কারা। শুধু তা-ই নয়, পাক প্রধানমন্ত্রীর শাহবাজ় শরিফকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেন সেখানকার প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভারতীয়েরা। শুরু হয় তুরস্ক-ভ্রমণের বুকিং বাতিল।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই দু’হাজারের বেশি ভারতীয় পর্যটক সাবেক অটোমান রাষ্ট্রে (তুরস্কের আগের নাম) না-যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। পাশাপাশি, ৫০-র মধ্যে বাতিল হয়েছে ৩০টি গন্তব্য-বিবাহ। বিশ্লেষকদের অনুমান, এর জন্য আনুমানিক ন’কোটি ডলার লোকসান হবে আঙ্কারার।