যাওয়া ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা

গুরুমূর্তি সেখানেই থামেননি। বিরলের বিরুদ্ধে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছিলেন।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০৩:১৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

গত বছর নভেম্বরের ঘটনা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদের বৈঠক। কড়া আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য। তাঁর ‘অপরাধ’, তিনি শীর্ষ ব্যাঙ্কের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রক তথা মোদী সরকারের সংঘাত নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। সে দিন বিরলের বিরুদ্ধে সব থেকে সরব ছিলেন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের নেতা, পর্ষদের ‘সঙ্ঘ পরিবারের প্রতিনিধি’ সদস্য স্বামীনাথন গুরুমূর্তি।

Advertisement

গুরুমূর্তি সেখানেই থামেননি। বিরলের বিরুদ্ধে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছিলেন। কারণ, বিরল প্রকাশ্যে বলেছিলেন, যে সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতাকে সম্মান করে না, তাদের আর্থিক বাজারের রোষের মুখে পড়তে হয়। সরকারি সূত্রের খবর, বিরলের ওই মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরও ভাল চোখে দেখেনি। যার জন্য বিরলকে দিল্লিতে এসে তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হয়েছিল। বিরলের মন্তব্যের দু’সপ্তাহ পরে তাঁকে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেছিলেন আর্থিক বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ। বর্তমান অর্থসচিব গর্গ ডলারের তুলনায় টাকার দাম, শেয়ার বাজারের সূচক, সরকারি বন্ডের সুদের হার নিয়ে বড়াই করে প্রশ্ন করেছিলেন, কোথায় আর্থিক বাজারের রোষ! কিছুটা নরম ভাষায় মুখ খুলতে হয়েছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকেও। তাঁর বক্তব্য, ভারতের অর্থনীতি যেহেতু দ্রুত বদলাচ্ছে, তা যে কোনও নিয়ন্ত্রণই নমনীয় হওয়া জরুরি। বাস্তবের কথা মাথায় রেখেই নিয়ন্ত্রণ নীতিতে বদল করতে হবে।

অনেকের বক্তব্য, সেই সময় থেকেই দেওয়াল লিখন স্পষ্ট হচ্ছিল। মুম্বইয়ের মিন্ট স্ট্রিটে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সদর দফতরের অন্দরে সংঘাতও বাড়ছিল। তাতে যে পেশাদার অর্থনীতিবিদ হালে বিশেষ পানি পাবেন না, তা-ও মালুম হচ্ছিল পরিষ্কার। যথারীতি হল সেটাই।

Advertisement

এতে যে সঙ্ঘ পরিবারের সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ দুঃখিত, মোটেই তা নয়। উল্টে মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজনের মন্তব্য, ‘‘উদারবাদী বা লুটিয়ান্স দিল্লির লোকেরা দয়া করে বলবেন না যে প্রতিভারা মোদীকে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আচার্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ছেড়ে নিউ ইয়র্কে পড়াতে যাচ্ছেন। কারণ তাঁকে যে কাজ দিয়ে পাঠানো হয়েছিল, তা তিনি করতে পারেননি।’’ স্বদেশি জাগরণ, আরএসএসের নেতারা বরাবরই বিশ্বাস করেন, আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানে কাজ করা অর্থনীতিবিদদের এ দেশের সরকারে নিয়োগ করাটাই ভুল। কারণ তাঁরা আমেরিকার স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করেন। আজ মহাজনের মন্তব্যে সেই ভাবনারই প্রতিফলন ঘটেছে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন