কয়লায় টান, সঙ্কট মেটাতে চিঠি কেন্দ্রকে

নবান্ন সূত্রে খবর, সম্প্রতি মুখ্যসচিব মলয় দে কয়লাসচিব সুশীল কুমারকে এই চিঠি লিখেছেন। দিল্লি গিয়ে বৈঠক সেরে এসেছেন। মন্ত্রক বিষয়টি বিবেচনারও আশ্বাস দিয়েছে মুখ্যসচিবকে।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:২২
Share:

এক দিকে সব সময়ে চাহিদা মতো কয়লা জোগাতে পারছে না কোল ইন্ডিয়া। অন্য দিকে বিভিন্ন কারণে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের পাঁচটি খনি আপাতত বন্ধ। এই জোড়া কারণে বেশ কয়েক মাস ধরেই কয়লা-সঙ্কটে ভুগছে রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই অন্তত কিছু দিনের জন্য আপৎকালীন ভিত্তিতে বাড়তি জোগানের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিল রাজ্য। যাতে নিগমের খনি থেকে ফের সরবরাহ শুরু না-হওয়া পর্যন্ত জ্বালানির অভাব সামলানো যায়।

Advertisement

নবান্ন সূত্রে খবর, সম্প্রতি মুখ্যসচিব মলয় দে কয়লাসচিব সুশীল কুমারকে এই চিঠি লিখেছেন। দিল্লি গিয়ে বৈঠক সেরে এসেছেন। মন্ত্রক বিষয়টি বিবেচনারও আশ্বাস দিয়েছে মুখ্যসচিবকে।

রাজ্যের ব্যাখ্যা, এই দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কয়লা নীতি মেনেই। সেখানে বলা আছে, কোনও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে-কয়লা আসে, তা সাময়িক ভাবে অমিল হলে, কেন্দ্রের কাছে আপৎকালীন ভিত্তিতে বাড়তি জ্বালানি চেয়ে আবেদন করা যাবে। মন্ত্রকের কমিটি তা খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়।

Advertisement

রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, কোল ইন্ডিয়ার থেকে রাজ্যের দিনে ১০ রেক করে কয়লা পাওয়ার কথা। কিন্তু সব সময়ে পুরোটা পাওয়া যাচ্ছে না। আবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াটের নতুন ইউনিটের জন্যও বাড়তি কয়লা প্রয়োজন। তাঁর দাবি, এই সমস্ত কারণেই কেন্দ্রকে ওই চিঠি।

নিগমের খনি

নিগমের খনিগুলি থেকে মিলত প্রায় ২০ লক্ষ টন। যা এখন বন্ধ বাড়তি বন্দোবস্ত

এর আওতায় রাজ্য আর্জি জানালে, কয়লা মন্ত্রক বিষয়টি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়

পরে নিজের খনি থেকে কয়লা পাওয়া শুরু হলে, ধাপে ধাপে সরবরাহ কমায় কেন্দ্র

অন্য বিদ্যুতের উৎপাদন কম হওয়ায় গত পুজোর আগে আচমকাই দেশ জুড়ে তাপবিদ্যুতের চাহিদা চড়তে থাকে। সব রাজ্যেই দানা বাঁধে কয়লা-সঙ্কট। পশ্চিমবঙ্গে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয় নিগমের নিজস্ব পাঁচটি খনি বন্ধ হওয়ায়। কারণ, এ রাজ্যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি চালাতে যতটা কয়লা লাগে, তার কম-বেশি ৮০% জোগায় কোল ইন্ডিয়া। বাকিটা ওই খনিগুলি। সেগুলি থেকে সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় পুরো দায়িত্ব পড়ে কোল ইন্ডিয়ার ঘাড়ে। যা মেটানো তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র-সহ কিছু আইনি জটিলতার কারণেই নিগমের খনিগুলি থেকে কয়লা তোলা যাচ্ছে না বলে জানান রাজ্যের এক বিদ্যুৎ-কর্তা। তবে তিনি বলেন, শীত চলে আসায় আপাতত বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা কম। কিন্তু সঙ্কট পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তাঁর কথায়, ‘‘নিজস্ব খনির কয়লা পাওয়া যাচ্ছে না বলে শুধু কোল ইন্ডিয়ার উপরে নির্ভর করতে হচ্ছে।’’ আর ঠিক এই কারণেই ঘাটতি আরও গভীর হওয়ার আগে বাড়তি কয়লার জোগানের জন্য রাজ্যের ওই দরবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন