আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। তার পরেই শুরু নতুন বছর। এখন পুরনোটি কেমন গেল তার হিসেব-নিকেশের সঙ্গে নতুনের আশা-আশঙ্কার আলোচনায় ব্যস্ত বাজার।
পশ্চিমি দুনিয়া ক্যালেন্ডার ইয়ার (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) মেনে চললেও, ভারতে অবশ্য অর্থকড়ির দিক থেকে অর্থবর্ষই বেশি গুরুত্ব পায়। যা শুরু হয় এপ্রিলে, চলে পরের মার্চ পর্যন্ত। বরং বলা ভাল এ দেশে ডিসেম্বরে শেষ হল তৃতীয় ত্রৈমাসিক। জানুয়ারির মাঝামাঝি শুরু হবে সংস্থাগুলির তিন মাসের ফল প্রকাশ। উৎসবের মরসুমের একটি অংশ পড়েছে এর মধ্যে। ফলে এ বারের আর্থিক ফল খুব খারাপ হওয়ার কথা নয়।
উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে বছরের শেষ সপ্তাহে সেনসেক্স ফের ঢুকেছে ৩৬ হাজারের ঘরে। শুক্রবার তা ছিল ৩৬,০৭৭ অঙ্কে। সূচকের অবস্থান ভাল জায়গায় থাকলেও, বাজারের অস্থিরতা কিন্তু কাটেনি। মাঝারি থেকে বড় মাপের ওঠানামা চলছেই। আশঙ্কা, দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এবং বিশ্ব অর্থনীতির ওঠাপড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন বছরেও অনিশ্চয়তা জারি থাকবে।
শুক্রবার ভাল রকম বেড়েছে টাকার দাম। বহু দিন পর টাকায় ডলারের দাম নেমেছে ৭০-এর নীচে। সরকার এবং আমদানি নির্ভর শিল্পের কাছে যা সুখবর। সপ্তাহ শেষে ১০ বছর মেয়াদি সরকারি ঋণপত্রের প্রকৃত আয় (ইল্ড) দাঁড়িয়েছে ৭.৩৯%। কয়েক মাস আগে তা পৌঁছেছিল ৮.১৫ শতাংশের আশেপাশে। যে কারণে সুদ বাড়ানো হয়েছিল বিভিন্ন স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে। ইল্ড এতটা কমায় বন্ড ফান্ডগুলির ন্যাভ বাড়ছে। কিন্তু আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে স্বল্প সঞ্চয়ে ফের সুদ কমার। পাকা সোনাও পৌঁছেছে ৩২,০০০ টাকার উপরে। হলমার্ক গয়নার সোনা ৩১,০০০ ছুঁইছুঁই। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০১৯ সালে বিশ্ব বাজারে সোনার দর ১০% পর্যন্ত বাড়তে পারে।
সুদ নির্ভর মানুষের মন্দ কাটেনি ২০১৮। ব্যাঙ্কে সুদ বেড়েছে। বন্ডেও সুদ মিলছে ৮.৫ থেকে ১০% পর্যন্ত। তবে মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে আসায় শিল্প মহলের ধারণা, আগামী দিনে সুদ কমাতে পারে আরবিআই। সেটা হলে সুদ কমতে পারে ব্যাঙ্ক জমাতেও।
২০১৮ সাল অবশ্য নতুন ইস্যুর দিক থেকে তেমন ভাল কাটেনি। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮-তে লক্ষ্যের অর্ধেকও ঘরে তোলা যায়নি। শেয়ার বাজার অস্থির থাকায় বছরের শেষ চার মাসে ঝিমিয়ে পড়েছে আইপিও বাজার। ভোট না মেটা পর্যন্ত এই ছবি একই রকম থাকতে পারে। তবু এই পরিস্থিতিতে প্রথম বার শেয়ার ছেড়ে কিছু কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাকে শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার।
(মতামত ব্যক্তিগত)