আগামী মাসেই ইন্টারনেটে কেনাকাটার ক্ষেত্রে বিদেশি সংস্থাগুলির উপর বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করতে পারে কেন্দ্র।
এ দেশে বর্তমানে বিদেশি সংস্থাগুলি উৎপাদকদের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য কিনে নিজেদের ওয়েবসাইট মারফত বিক্রি করতে পারে না। পণ্য জোগানোর জন্য তাদের তৃতীয় কোনও বিক্রেতার উপর নির্ভর করতে হয়। ওই সংস্থাগুলি শুধুমাত্র সেই সব বিক্রেতার পণ্য বিক্রির মাধ্যম (‘মার্কেটপ্লেস’) হিসেবে কাজ করতে পারে। এ বার কেন্দ্রীয় বাজেটের আগে-পরে বা বাজেট পেশের সময়ে এই নিষেধাজ্ঞাই শিথিল করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর। যার ফলে তারা সরাসরি পণ্য কিনে বিক্রি করার অধিকার পাবে।
শিল্পমহলের মতে, নতুন নিয়ম চালু হলেও পণ্য জোগাড় করতে বিদেশি সংস্থাগুলিকে দেশীয় ব্যবসায়ী এবং উৎপাদনকারীদের উপরেই নির্ভর করতে হবে। ফলে তাঁরা আরও বেশি ক্রেতার কাছে পৌঁছতে পারবেন। আবার বিদেশি সংস্থাগুলি সরাসরি পণ্য কিনলে পরিবহণ, পণ্য মজুত করা ও মধ্যস্থতাকারী বাবদ খরচ কমবে। সে কারণে সব মিলিয়ে এই ব্যবস্থায় ক্রেতার কাছে কম দামে আরও বেশি পণ্যের পসরা নিয়ে হাজির হওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধিতে ই-রিটেল ক্ষেত্রের অবদান মাত্র ১%। সেখানে ২০২০-র মধ্যে তা ৪ শতাংশে পৌঁছতে পারে বলেও মনে করছে তারা।
গত এক বছরে দেশের ই-রিটেল ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বেড়েছে। প্রত্যাশার তুলনায় নিজেদের ব্যবসা অনেকটাই বাড়িয়ে নিয়েছে মার্কিন সংস্থা অ্যামাজন। আবার প্রতিযোগিতার বাজার ধরতে সম্প্রতি মিন্ত্রা ফ্যাশনকে কিনে নিয়েছে ই-রিটেল সংস্থা ফ্লিপকার্ট। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ২০২১ সালে ই-কমার্স ক্ষেত্রের ব্যবসা দাঁড়াতে পারে ৭,৬০০ কোটি ডলারে। প্রতি বছরই যা ৩৪% হারে বাড়ছে। এই অবস্থায় বিদেশি সংস্থাগুলিকে সরাসরি পণ্য কিনে বিক্রির সুবিধা দিলে, প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে এবং পরিষেবার মান উন্নত হবে বলেও ধারণা তাঁদের।
উল্লেখ্য, এ দেশে বহু পণ্যের খুচরো বিপণন ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি নিয়ে টালবাহানা চলছে বহু দিন ধরেই। নিয়ম শিথিল করার পরেও এক মাত্র ব্রিটিশ সংস্থা টেস্কো ছাড়া কোনও বিদেশি সংস্থা সে ভাবে এই ক্ষেত্রে লগ্নিতে এগিয়ে আসেনি। ব্যবসা মার খাওয়ার সম্ভাবনায় ক্ষুদ্র ও ছোট ব্যবসায়ীরাও এর বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু এ বার ই-রিটেল ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির পথ প্রশস্ত করতে চায় কেন্দ্র। সম্প্রতি ফ্লিপকার্ট-এর মতো দেশীয় ই-রিটেল সংস্থা এবং বিদেশি অ্যামাজন, ই-বে ইত্যাদির সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা। তার পরেই এ ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির দরজা পুরোপুরি খুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানান বাণিজ্য মন্ত্রকের এক কর্তা। তবে সরকারি ভাবে বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।