কিংফিশারকে স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপি ঘোষণার কথা ভাবছে ইউকো ব্যাঙ্ক

কিংফিশার এয়ারলাইন্সকে এ বার স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপি (উইলফুল ডিফল্টার) হিসেবে ঘোষণার কথা ভাবনাচিন্তা করছে ইউকো ব্যাঙ্কও। ইতিমধ্যেই কিংফিশার এয়ারলাইন্স, তার কর্ণধার বিজয় মাল্য এবং সংস্থার তিন ডিরেক্টরকে স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপি হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক। কেন এই তকমা সংস্থাকে দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। একই পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, আইডিবিআই ব্যাঙ্ক, ফেডারেল ব্যাঙ্ক এবং অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক। এ বার ইউকো ব্যাঙ্কও জানিয়ে দিল, কিংফিশারকে স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপি হিসেবে ঘোষণার কথা ভাবছে তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৭
Share:

বিজয় মাল্য

কিংফিশার এয়ারলাইন্সকে এ বার স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপি (উইলফুল ডিফল্টার) হিসেবে ঘোষণার কথা ভাবনাচিন্তা করছে ইউকো ব্যাঙ্কও।

Advertisement

ইতিমধ্যেই কিংফিশার এয়ারলাইন্স, তার কর্ণধার বিজয় মাল্য এবং সংস্থার তিন ডিরেক্টরকে স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপি হিসেবে ঘোষণা করেছে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক। কেন এই তকমা সংস্থাকে দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। একই পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, আইডিবিআই ব্যাঙ্ক, ফেডারেল ব্যাঙ্ক এবং অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক। এ বার ইউকো ব্যাঙ্কও জানিয়ে দিল, কিংফিশারকে স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপি হিসেবে ঘোষণার কথা ভাবছে তারা।

শুক্রবার বণিকসভা সিআইআই আয়োজিত ব্যাঙ্কিং কলোকিয়াম অনুষ্ঠানের ফাঁকে ইউকো ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান-ম্যানেজিং ডিরেক্টর অরুণ কল জানান, কিংফিশারকে ঋণ- খেলাপি ঘোষণার বিষয়টি নিয়ে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। সংস্থাটির কাছে তাদের পাওনা ৩২০ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, ১৭টি ব্যাঙ্কের কনসোর্টিয়ামের কাছে কিংফিশারের ধার বাকি প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকা। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি (১,৬০০ কোটি) ধার স্টেট ব্যাঙ্কের কাছে।

Advertisement

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী, উইলফুল ডিফল্টার কথাটির অর্থ স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপি। অর্থাৎ, ধার শোধের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃত ভাবে তা মেটাচ্ছেন না। এর অনেক রকম কারণ হতে পারে। যেমন, কেউ হয়তো প্রাথমিক ভাবে যে জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ধার নিয়েছেন, সেই খাতে টাকা ব্যবহার করেননি। তার বদলে তা খাটিয়েছেন অন্যত্র কিংবা সরিয়েছেন অন্য কোনও কাজে। কেউ আবার ঋণ পাওয়ার জন্য মুনাফা ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়ে থাকতে পারেন। উল্লেখ্য, কিংফিশার ও মাল্যকে ঋণ-খেলাপির তকমা দিতে গিয়ে ঋণ নেওয়া টাকা একাধিক অ্যাকাউন্টে সরানোর অভিযোগই এনেছিল ইউবিআই। যদিও সেই ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কিংফিশারের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মূল নির্দেশিকা অনুসারে এ ভাবে সংস্থা, তার কর্ণধার ও ডিরেক্টরদের ঋণ-খেলাপি বলে ঘোষণা করা যায় না। মাল্যের দাবি, এর বিরুদ্ধে আইনি পথে যাবেন তাঁরা।

উল্লেখ্য, দেশে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির অনুৎপাদক সম্পদ কমাতে সম্প্রতি স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপিদের তালিকায় সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের গ্যারান্টর-কেও আনার কথা বলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যে সব গ্যারান্টর যথেষ্ট আর্থিক ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের প্রতি দায় মেটাতে অস্বীকার করবেন, তাঁদের ওই তকমা দেওয়া হবে। তা ছাড়া, ইচ্ছাকৃত ভাবে ঋণ বাকি রাখা ব্যক্তি বা সংস্থাকে ঋণ-খেলাপির তকমা দেওয়া ব্যাঙ্কের বড় হাতিয়ার বলেও মনে করেন খোদ শীর্ষ ব্যাঙ্ক গভর্নর রঘুরাম রাজন।

এ দিকে সংবাদ সংস্থার খবর, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কঠোর পদক্ষেপের চাপে থাকা মাল্যর চিন্তা এ দিন আরও বাড়িয়েছে উপদেষ্টা সংস্থা ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টর অ্যাডভাইসরি সার্ভিসেস (আই আই এ এস)। তাদের মতে, যত দিন কিংফিশার এয়ারলাইন্স নিয়ে সমস্যা না-মেটে, তত দিন মাল্যর ইউনাইটেড স্পিরিটসের পরিচালন পর্ষদে থাকা উচিত নয়। এমনকী আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সংস্থার বার্ষিক সাধারণ সভায় মাল্যর নির্বাচনের বিরুদ্ধে রায় দিতে শেয়ারহোল্ডারদের কাছে আর্জিও জানিয়েছে তারা। উপদেষ্টা সংস্থাটির দাবি, মাল্য পর্ষদে থাকলে, ঋণ পেতে সমস্যায় পড়তে পারে ইউনাইটেড স্পিরিটস। কারণ, নিয়ম অনুসারে স্বেচ্ছায় ঋণ-খেলাপিদের নতুন করে আর ধার দেবে না কোনও ব্যাঙ্ক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন