সুদ অপরিবর্তিত, বাড়ল সূচক, কিছুটা হতাশ শিল্প

ঘুরপথে বাড়ল ব্যাঙ্কের তহবিল সংগ্রহের খরচ

সুদ অপরিবর্তিত রেখেও ঘুরপথে ব্যাঙ্কের তহবিল সংগ্রহের খরচ বাড়িয়ে দিলেন রঘুরাম রাজন। শিল্পমহল অবশ্য জানিয়েছে, সুদ কমলে আরও ভাল হত, যদিও মাসিক ঋণের কিস্তি বাড়ছে না বলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে আবাসন ও গাড়ি শিল্প। প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় শেয়ার বাজার পড়লেও, পরে ঘুরে দাঁড়ায় সেনসেক্স। কারণ রাজন যে সুদ অপরিবর্তিত রাখবেন, তা তাঁদের কাছে কিছুটা প্রত্যাশিতই ছিল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৪ ০২:২৮
Share:

ডেপুটি গভর্নর ঊর্জিৎ পটেলের সঙ্গে রাজন।

সুদ অপরিবর্তিত রেখেও ঘুরপথে ব্যাঙ্কের তহবিল সংগ্রহের খরচ বাড়িয়ে দিলেন রঘুরাম রাজন। শিল্পমহল অবশ্য জানিয়েছে, সুদ কমলে আরও ভাল হত, যদিও মাসিক ঋণের কিস্তি বাড়ছে না বলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে আবাসন ও গাড়ি শিল্প। প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় শেয়ার বাজার পড়লেও, পরে ঘুরে দাঁড়ায় সেনসেক্স। কারণ রাজন যে সুদ অপরিবর্তিত রাখবেন, তা তাঁদের কাছে কিছুটা প্রত্যাশিতই ছিল।এই প্রথম দু’মাস অন্তর ঋণনীতি পর্যালোচনা শুরু করে মঙ্গলবার ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর জানালেন, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক যে-হারে আরবিআইয়ের থেকে ঋণ নেয় (রেপো রেট), আরবিআই যে-হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ নেয় (রিভার্স রেপো রেট) ও নগদ জমার অনুপাত অপরিবর্তিত রাখা হবে। কিন্তু অতি স্বল্প মেয়াদে এই ব্যবস্থায় বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের ঋণ নেওয়ার উপর রাশ টানলেন রাজন। ব্যাঙ্কগুলি আরবিআইয়ের কাছ থেকে দৈনিক ভিত্তিতে (‘ওভারনাইট’) যে-ঋণ নেয় (‘কল মানি’), তা তাদের আমানতের ০.৫০% থেকে কমিয়ে করা হল ০.২৫%। অন্য দিকে, ৭ দিন এবং ১৪ দিনের জন্য আরবিআইয়ের থেকে বেশি ঋণ নিতে পারবে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক। আমানতের ০.৫০% থেকে বাড়িয়ে তা করা হল ০.৭৫%। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনের এই সিদ্ধান্তের অর্থ, আর সব কিছু অপরিবর্তিত থাকলেও শীর্ষ ব্যাঙ্কের থেকে ব্যাঙ্কগুলির তহবিল সংগ্রহের খরচ কার্যত ১০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে যাওয়া। তার কারণ, দৈনিক ঋণের সুদই সবচেয়ে কম, আর তার পরিমাণই অর্ধেক করা হয়েছে। সে কারণে রেপো রেট ৮ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকলেও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে গড়ে তার চেয়ে বেশি হারেই শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ধার নিতে হবে। ডয়েশ ব্যাঙ্কের হিসাব, মেয়াদ অনুযায়ী গড়ে তা হবে ৮.২৫%।

Advertisement

সুদের হারের ভবিষ্যৎ গতিপথও এ দিন বাতলে দেন রাজন। তিনি বলেন, খুচরো বাজারে খাদ্য ও জ্বালানির দাম মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিলেও সাধারণ ভাবে ওই মূল্যবৃদ্ধি ৮ শতাংশের উপরেই রয়েছে। তাই ২০১৫-র জানুয়ারিতে ৮% ছুঁলে ও তার এক বছর পরে ৬ শতাংশে নামলে তিনি যে সুদ বাড়ানোর পথে হাঁটবেন না, সে ব্যাপারে কথা দিয়েছেন রাজন।

এ দিকে, বৃদ্ধির হারকে টেনে তুলতে রাজনের সুদ কমানোর পথে হাঁটা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। একই মত ফিকি প্রেসিডেন্ট সিদ্ধার্থ বিড়লা ও অ্যাসোচ্যাম প্রেসিডেন্ট রানা কপূরেরও। ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেন বলেন, “পরবর্তী ত্রৈমাসিকে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি নামতে পারে। সে ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্কও সুদ কমানোর পথে হাঁটবে। তবে গত অর্থবর্ষে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে-ভাবে নীতি স্থির করেছে, তাতে নগদ জোগানে টান পড়েনি। অর্থাৎ লিক্যুইডিটি ম্যানেজমেন্ট ভাল হয়েছে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন