তুর্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে জাপানি ঋণ চায় রাজ্য

পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে তুর্গা পাম্প স্টোরেজ নামে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই প্রকল্পের জন্য জাপানের ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-র কাছ থেকে সহজ শর্তে ঋণ নেওয়া হবে। ১,০০০ মেগাওয়াটের এই প্রকল্পের জন্য কমপক্ষে ৩,৫০০ কোটি টাকা দরকার। এর ৭০% অর্থ জাইকার কাছ থেকে ঋণ পেতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। বাকি টাকা সংস্থা নিজেই দেবে।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৪
Share:

পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে তুর্গা পাম্প স্টোরেজ নামে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ওই প্রকল্পের জন্য জাপানের ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-র কাছ থেকে সহজ শর্তে ঋণ নেওয়া হবে। ১,০০০ মেগাওয়াটের এই প্রকল্পের জন্য কমপক্ষে ৩,৫০০ কোটি টাকা দরকার। এর ৭০% অর্থ জাইকার কাছ থেকে ঋণ পেতে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। বাকি টাকা সংস্থা নিজেই দেবে।

Advertisement

রাজ্যে প্রথম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি হয় ২০০৭-’০৮ সালে, বাম আমলে। সেটি গড়ে ওঠে এক অভিনব পদ্ধতিতে। বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্তা জানান, প্রকল্পের জন্য অযোধ্যা পাহাড়ের উপরে ও নীচে দু’টি জলাধার তৈরি করা হয়। উপরের জলাধার থেকে নীচেরটিতে জল ছাড়া হয় ও সেই সময়েই টারবাইনের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। ৯০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নামে ওই প্রকল্পও তৈরি হয়েছিল জাইকা থেকে ঋণ নিয়ে। গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লে পুরুলিয়ার জলবিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে তা সাহায্য করে। গত গ্রীষ্মেও এই কেন্দ্র থেকে দৈনিক গড়ে ৮৫০-৮৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া গিয়েছে।

তুর্গা প্রকল্পটি ওই একই ভাবে তৈরি হবে। বিদ্যুৎ-কর্তাদের দাবি, ২০২০-’২১ সালের পর থেকে গ্রীষ্মে প্রায় ১,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি হতে পারে রাজ্যে (যদিও রাজ্যে এখন বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত)। তা মেটাতে পারে তুর্গা প্রকল্প, যে কারণে ২০১৬-এর মধ্যেই আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দিয়ে প্রকল্প-নির্মাণের কাজ শুরু করতে চাইছে বণ্টন সংস্থা। এই ধরনের প্রকল্প গড়তে কমপক্ষে ৫-৬ বছর সময় লাগে। ওই কর্তা জানান, তুর্গার বিদ্যুৎ পেলে গ্রিড থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ কিনতে হবে না। এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সংস্থা ওয়েবকস-এর সঙ্গে চিনা সংস্থা জে পাওয়ারকেও যুক্ত করা হয়েছে।

Advertisement

ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থার সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করে রাজ্য। এর কয়েকটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে (প্রায় ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি বাতিল)। রাজ্যের যুক্তি, চুক্তি বাতিল না-করলে, ভবিষ্যতে প্রয়োজন না-হলেও বিদ্যুৎ কিনতে হত। এতে অর্থের অপচয় হত, লোকসান হত বণ্টন সংস্থার। কিন্তু নিজেদের নয়া বিদ্যুৎ প্রকল্প দ্রুত তৈরি করতে পারলে সমস্যা থাকবে না। তাই তুর্গা প্রকল্পটি সময়ের মধ্যে শেষ করতে চাইছেন বণ্টন কর্তৃপক্ষ।

সংস্থার চেয়ারম্যান নারায়ণস্বরুপ নিগম জানান, এ বছরের মাঝামাঝি বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট হাতে আসার কথা। তা হলেই ঋণ ও পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্রের জন্য চূড়ান্ত আবেদন করা হবে। তিনি বলেন, “তুর্গার পাশাপাশি ওই একই জায়গায় বন্দু পাম্প স্টোরেজ প্রকল্প নামে আর একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র (৯০০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ) তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement