ফের ২৫ হাজারের ঘরে সেনসেক্স, পড়ল টাকাও

এক ধাক্কায় প্রায় ৩৫০ পয়েন্ট পড়ে গেল সেনসেক্স। এবং বেশ কিছু দিন পরে বাজার আবার নেমে এল ২৫ হাজারের ঘরে। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে সূচক থিতু হয়েছে ২৫,৯৯৯.৩৪ অঙ্কে। এ দিন ডলারে টাকার দামও পড়ে গিয়েছে ৪২ পয়সা। বাজার বন্ধের সময়ে এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬১.৮৩ টাকায়। গত সাত মাসেরও বেশি সময়ে এ দিনই টাকার দাম ছিল সব থেকে কম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:২২
Share:

এক ধাক্কায় প্রায় ৩৫০ পয়েন্ট পড়ে গেল সেনসেক্স। এবং বেশ কিছু দিন পরে বাজার আবার নেমে এল ২৫ হাজারের ঘরে। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে সূচক থিতু হয়েছে ২৫,৯৯৯.৩৪ অঙ্কে।

Advertisement

এ দিন ডলারে টাকার দামও পড়ে গিয়েছে ৪২ পয়সা। বাজার বন্ধের সময়ে এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬১.৮৩ টাকায়। গত সাত মাসেরও বেশি সময়ে এ দিনই টাকার দাম ছিল সব থেকে কম।

মাঝে-মধ্যে উঠলেও গত বেশ কিছু দিন ধরেই কম-বেশি পড়তে দেখা যাচ্ছে শেয়ার বাজারকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই পতনকে বাজারের খারাপ লক্ষণ বলে মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতে সূচক অনেকটা উঁচুতে পৌঁছে যাওয়ার পরে লেনদেনের স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই এটা সংশোধন ছাড়া আর কিছু নয়। ওই মহলের এখনও স্থির বিশ্বাস, কিছু দিনের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াবে বাজার। বরং এই পতনকে শেয়ার কেনার ভাল সুযোগ বলেই মনে করছেন তাঁরা।

Advertisement

এ দিন অবশ্য ভারতে বাজার পড়ার মূল কারণ ছিল আন্তর্জাতিক দুনিয়ার পরিস্থিতি। বিশ্ব জুড়ে আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মার্কিন মুলুকে বৃদ্ধির হারও হতাশ করেছে সকলকে। এর জেরে বিশ্বের বহু বাজারের পাশাপাশি নেমেছে ভারতের সূচকও। এশিয়া এবং ইউরোপের শেয়ার বাজারগুলিতে এই দিন সূচকের মুখ ছিল নীচের দিকেই।

ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিক বলেন, “বাজার শুধু বাড়তেই থাকবে, তা হয় না। লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই সূচক উঠছে। দৌড়ের গতি বাড়ে কেন্দ্রে বিজেপির নেতৃত্বে স্থায়ী সরকার গঠিত হওয়ায়। তাতেই এখন কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে। যে-হারে বাজার বাজার আগে বেড়েছে, তাতে এখন সেনসেক্স ২৫ হাজারে নামলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যেই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।”

কীসের ভিত্তিতে এই কথা বলছেন? উত্তরে কৌশিক জানান, “দেশে অন্তত শেয়ার বাজার তেমন ভাবে পড়ার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি। বাজারের মৌলিক উপাদানগুলি ক্রমশ ভাল হতে শুরু করেছে। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমছে। ফলে কমছে বাণিজ্য ঘাটতি। যা দেশের অর্থনীতির পক্ষে ভাল লক্ষণ।”

কৌশিক যে-বিষয়টির উপর ভিত্তি করে আশার কথা শোনাচ্ছেন তা হল, ভারতে এখনও বৃদ্ধির যা হার, তা বিশ্বের অন্য দেশগুলির তুলনায় বেশি। তাই বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলির পক্ষে আপাতত ভারত ছাড়া বিকল্প ভাল বাজার নেই।

অবশ্য কৌশিক ওই কথা বললেও বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি কিন্তু কিছু দিন যাবৎ টানা শেয়ার বেচে চলেছে। সংবাদ সংস্থার খবর, গত মঙ্গলবারও ওই সব সংস্থা ভারতের বাজারে ৬৯৪.৬৭ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।

শুধু কৌশিকই নন, বিশেষজ্ঞদের প্রায় সকলেই একমত যে, লগ্নিকারীরা সুযোগ বুঝে মুনাফার টাকা তুলবেনই। শেয়ার দর যে-মাত্রায় উঠেছে, তাতে এখন শেয়ার বিক্রি করে ভাল মুনাফা করার সুযোগ হাতে এসেছে ওই সব বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার। পাশপাশি এই পতনকে শেয়ার কেনার ভাল সুযোগ বলে মন্তব্য করেছেন কৌশিক। তিনি বলেন, “পতনের ফলে অনেক ভাল শেয়ার আগের থেকে তুলনায় কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। তবে আমার ধারণা, দ্রুত বাড়বে ছোট ও মাঝারি মূলধনের ভাল সংস্থার শেয়ারের দাম। এই সুযোগ সাধারণ ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের কাজে লাগানো উচিত বলে আমি মনে করি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন