একদিনেই মুছে গেল লগ্নিকারীদের ৩ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ। গত সাড়ে ৫ বছরের মধ্যে মঙ্গলবার সবচেয়ে বড় পতনের মুখোমুখি হল সেনসেক্স। লাগামছাড়া বিক্রির জেরে শেয়ার বাজারের এই ধসে সূচক এক ধাক্কায় পড়ল প্রায় ৩% বা ৮৫৫ পয়েন্ট। ২৭ হাজার ভেঙে নেমে গেল ২৬ হাজারের ঘরে।
এ দিন বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স ছিল ২৬,৯৮৭.৪৬ পয়েন্টে, যদিও এক সময়ে তা তলিয়ে গিয়েছিল আরও নীচে, ২৬,৯৩৭.০৬ অঙ্কে। সেনসেক্সের আওতায় থাকা ৩০টি শেয়ারের ২৯টির দরই পড়েছে এ দিন। সবচেয়ে বেশি পড়েছে ওএনজিসি (৬%)। শুধু হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের দর ছিল ঊর্ধ্বমুখী। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্টিও ৩% বা ২৫১.০৫ পয়েন্ট পড়ে ছুঁয়েছে ৮১২৭.৩৫ অঙ্ক।
মূলত বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে দুশ্চিন্তাতেই এ দিন লগ্নিকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে। বিশেষজ্ঞরা যে-দু’টি কারণের দিকে আঙুল তুলেছেন, সেগুলি হল:
• আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেল ৫০ ডলারের নীচে নেমে আসা
• গ্রিসে আর্থিক সঙ্কট ও রাজনৈতিক পালাবদলের সম্ভাবনা ঘিরে অনিশ্চয়তা
গত সাড়ে পাঁচ বছরের বেশি সময়ে তেল এত নীচে নামেনি বলে বাজার সূত্রের খবর। মার্কিন বাজারে এ দিন তা ব্যারেল প্রতি ৫০ ডলারেরও নীচে নেমে যাওয়ায় সারা বিশ্বের আর্থিক উন্নয়ন নিয়ে আতঙ্ক বাড়ে শেয়ার বাজারের লগ্নিকারীদের মধ্যে।
অন্য দিকে, আর্থিক সঙ্কটে নাজেহাল ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্র গ্রিসে সাধারণ নির্বাচন ২৫ জানুয়ারি। সেখানে বামপন্থী ‘সাইরিজা পার্টি’ ক্ষমতায় আসতে পারে বলে ইঙ্গিত প্রাক্ নির্বাচনী সমীক্ষায়। তারা আর্থিক ত্রাণ প্রকল্পের বিরোধী। বরং এর জেরে ঋণ মেটাতে গিয়ে বসানো চড়া কর, বেতন-পেনশন ছাঁটাই, সরকারি খরচে কোপের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে দলটি। সে ক্ষেত্রে গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলে তাকে ঋণ দেওয়া অন্য রাষ্ট্রগুলিও বিপুল আর্থিক চাপে পড়বে। এই আশঙ্কাও কালো ছায়া ফেলে ভারত-সহ এশীয় বাজারে।