ভোডাফোনের পর এ বার হোন্ডা, নিসান, জেনারেল মোটরস। লাল ফিতের ফাঁসের কারণে ভারতে ব্যবসা করা এখনও যথেষ্ট সমস্যার বলে অভিযোগ জানাল ওই সব বিদেশি গাড়ি সংস্থা।
তাদের দাবি, অনুমোদন পাওয়া থেকে শুরু করে জটিল কর ব্যবস্থা কিংবা পরিকাঠামোর অভাব ভারতে ব্যবসার ক্ষেত্রে এ রকম বাধার অন্ত নেই। সংস্থাগুলির মতে, আগামী দিনে প্রায় সব পণ্যের গায়ে ‘ভারতে তৈরি’ (মেড ইন ইন্ডিয়া) তকমা দেখতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তা বাস্তবায়িত করতে আগে লাল ফিতের ফাঁস আলগা করে গড়তে হবে সহায়ক পরিবেশ। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই ভারতে ভোডোফনের প্রধান মার্টেন পিটার্স বলেছিলেন, প্রায় যে কোনও বিদেশি সংস্থার পক্ষেই এ দেশে ব্যবসা করা কঠিন। লাল ফিতের ফাঁসের সমস্যা নিয়ে আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্কও।
ভারতে গাড়ি সংস্থাগুলির সংগঠন সিয়াম-এর ৫৪তম বার্ষিক সভায় যোগ দিতে সম্প্রতি এ দেশে এসেছেন বিশ্বের প্রথম সারির সংস্থার কর্তারা। সেখানেই জাপানি গাড়ি সংস্থা হোন্ডা-র চেয়ারম্যান ফুমিহিকো ইকে বলেন, “এ দেশে ব্যবসা করার প্রচুর বাধা রয়েছে। যেমন অনেক জাপানি যন্ত্রাংশ সংস্থাই এ দেশে কারখানা গড়তে উদ্বেগে থাকে। তারা এবং গাড়ি সংস্থাগুলি ব্যবসার অনুমোদন পেতে বা অধিগ্রহণের কাজ শেষ করতে প্রায়ই সমস্যায় পড়ে। বিশেষত কারখানা গড়ার অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টি এতই জটিল যে, কিছু ক্ষেত্রে তা বাধা হয়ে দাঁড়ায় ব্যবসা পরিকল্পনায়।”
ইকের মতে, এর সঙ্গে আবার রয়েছে জটিল কর-কাঠামোর বিষয়টি। তাঁর বক্তব্য, এক এক রাজ্যে তা এক এক রকম। এই কর-কাঠামো আন্তর্জাতিক মাপকাঠির তুলনায় অনেক বেশি জটিল। তাই সেই সমস্যা মেটাতে দ্রুত পণ্য-পরিষেবা কর চালুর পক্ষে সওয়াল করেছেন তাঁরা।
নিসান মোটরের অন্যতম কর্তা তাকাশি হাতা-র কথায়, কর ব্যবস্থা কিছু ক্ষেত্রে বেশ জটিল। রাজ্য ও জাতীয় স্তরে কর-কাঠামোর আমূল সংস্কারের দাবি তুলেছেন জেনারেল মোটরসের অন্যতম কর্তা স্টিফেন জ্যাকবিও। তবে একই সঙ্গে এঁরা আশাবাদী, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সেই সব বাধা দূর হবে।
সভায় উপস্থিত দুই মন্ত্রী নীতিন গডকড়ি ও অনন্ত গঙ্গারাম গীত অবশ্য গাড়ি শিল্পকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। গডকড়ি জানান, রাস্তা-জাতীয় সড়ক-সেতু নির্মাণে এক লক্ষ কোটির লগ্নি অনুমোদন করেছে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক। নয়া মোটর ভেহিকল্স আইনের খসড়াও প্রকাশ করছে কেন্দ্র। অন্য দিকে, নীতের দাবি, আগামী পাঁচ বছর এই শিল্পের স্বর্ণযুগ হবে।