বাজেটে শেয়ার বাজার চাঙ্গা হওয়ার রসদ যে-যথেষ্টই ছিল, ক্রমশ তার প্রমাণ মিলছে। বাজেটের পরে পতনের মুখ দেখলেও অল্প কিছু দিন বাদেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বাজার। টানা বেড়েছে গত সাত দিনের লেনদেনে। ওই ক’দিনে সেনসেক্স বেড়েছে মোট ১১৪০ পয়েন্ট। বুধবারও সূচকের উত্থান হয়েছে ১২১.৫৩ পয়েন্ট।
দিনের শেষে এ দিন সূচক দাঁড়ায় ২৬,১৪৭.৩৩ অঙ্কে। বাজার বন্ধের সময়ে এর আগে সূচক এত উঁচুতে ওঠেনি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। বাজারে টাটা কনসালট্যান্সি সার্ভিসেস (টিসিএস)-এর মোট শেয়ার মূল্য এ দিন ৫ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। ২০০৪ সালে বাজারে সংস্থার শেয়ার নথিভুক্তির পর থেকে তা এত বেশি হয়নি।
এ দিন ডলারে টাকার দামও বেড়েছে ১৫ পয়সা। যার ফলে বিদেশি মুদ্রার বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়িয়েছে ৬০.০৯ টাকা। রফতানি -কারীরা ডলার বিক্রি করতে থাকলে তার জোগান বেড়ে দাম পড়ে যায় বলে বাজার সূত্রের খবর।
এক দিকে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে তথ্যপ্রযুক্তি-সহ বিভিন্ন সংস্থার ভাল আর্থিক ফলাফল, অন্য দিকে বিদেশি সংস্থার বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও বিশ্ব বাজার তেজী হওয়ার খবর ভারতের শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা করে তুলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
মার্কিন আর্থিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার খবরে এ দিন তথ্যপ্রযুক্তি শেয়ারের চাহিদা বাড়ায় চড়েছে তার দামও। উল্লেখযোগ্য ভাবে উঠেছে ইনফোসিস ও টিসিএসের শেয়ার দর। ইনফোসিস শেয়ারের দাম বেড়ে গিয়েছে ৩.৪৬%। পাশাপাশি টিসিএস বেড়েছে ২.২১%। বাজারে তার মোট শেয়ার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫,০৬,৭০,৩৩৪ কোটি টাকা।
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার শেয়ারের পরেই এ দিন চাহিদা বেশি ছিল ব্যাঙ্ক শেয়ারের। বাজেটে দেশের শিল্পোন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এতে এক দিকে পরিকাঠামে ক্ষেত্রে লগ্নি বাড়বে। ফলে বাড়বে ব্যাঙ্কের ব্যবসা। অন্য দিকে, কেন্দ্র ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে যে-সব প্রকল্প সরকারি অনুমোদন বা জমি জটে আটকে রয়েছে, সেগুলি রূপায়ণে পদক্ষেপ করা হবে। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে বর্তমানে যত অনুৎপাদক সম্পদ সৃষ্টি হয়েছে, তার একটা বড় অংশ এই সব থমকে থাকা প্রকল্পে আটকে রয়েছে। ফের সেগুলি চালু হলে অনাদায়ী ঋণের একটা বড় অংশ ফেরত পাবে ব্যাঙ্ক। এ সব কারণেই ব্যাঙ্ক শেয়ারের চাহিদা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।