টোকিওয় সফট-ব্যাঙ্কের বিপণি। ছবি: এএফপি
ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে ১০০০ কোটি ডলার (৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি) ঢালার প্রতিশ্রুতি সোমবারই দিয়েছিল জাপানের টেলিকম সংস্থা সফট-ব্যাঙ্ক। মঙ্গলবার আরও এক কদম এগিয়ে সংস্থা জানাল, এ দিনই ভারতের ইন্টারনেটে কেনাকাটার সংস্থা স্ন্যাপডিল ডট কমের বড়সড় অংশীদারি কিনেছে তারা। কতটা শেয়ার নেওয়া হয়েছে তা অবশ্য বলা হয়নি। তবে লগ্নির পরিমাণ ৬২.৭০ কোটি ডলার বা ৩,৮৮৭.৪০ কোটি টাকা। যা ভারতে দ্রুত বাড়তে থাকা ই-কমার্স ব্যবসায় এখনও পর্যন্ত কোনও একটি সংস্থার বৃহত্তম বিনিয়োগ। সফট-ব্যাঙ্কের দাবি, এই শেয়ার হস্তান্তরের হাত ধরে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম অনলাইন বাজার স্ন্যাপডিলের একক বৃহত্তম অংশীদার হল তারাই।
সফট-ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান-সিইও মাসায়োশি সন সোমবারই বলেছিলেন, লগ্নির ক্ষেত্রে ভারতকেই তাঁরা সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ৯২০০ কোটি ডলার শেয়ার মূল্যের ওই সংস্থার কর্তা সন ভারতের ই-কমার্স ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রভূত প্রশংসা করেন। প্রসঙ্গত, সোমবার টেলিকম মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের সঙ্গে এক বৈঠকে জাপানের সব থেকে ধনী ব্যবসায়ী সন ভারতে ১০০০ কোটি ডলার লগ্নির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জাপান সফরের পরে এটাই কোনও জাপানি সংস্থার তরফে আসা অন্যতম বৃহৎ লগ্নি-প্রস্তাব।
মঙ্গলবার সফ্ট-ব্যাঙ্কের ভাইস চেয়ারম্যান নিকেশ আরোরা বলেন, “নেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার বিচারে ভারত বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম। কিন্তু ততটা বাড়েনি অনলাইনে কেনাকাটার ব্যবসা। যার মানে উন্নত, দ্রুত ও সস্তার নেট পরিষেবা পাওয়ার সুবিধা করে দিয়ে এ দেশে অনলাইন বাজার বিস্তারের সুযোগ অপরিসীম।” আর এই কারণেই স্ন্যাপডিলের সঙ্গে জোট বাঁধার মাধ্যমে তারা ভারতে নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে চায় বলে জানিয়েছে সফ্ট-ব্যাঙ্ক গোষ্ঠী।
বর্তমানে নয়াদিল্লি ভিত্তিক স্ন্যাপডিলের ক্রেতা-সংখ্যা ২ কোটি ৩৫ লক্ষ। আর সংস্থার মাধ্যমে বিক্রেতার সংখ্যা ৫০ হাজার। পাশাপাশি মোবাইল প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন পা রাখা সংস্থাগুলি যাতে আরও ডালপালা মেলে এগোনোর সুযোগ পায়, সে জন্য ৬ মাসের মধ্যে উদ্ভাবনী কেন্দ্র বা বিশেষ পরিকাঠামো গড়ার পরিকল্পনাও করেছে স্ন্যাপডিল। মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে কেনাকাটার প্রবণতা দ্রুত বাড়তে থাকাই যার কারণ। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ব্যবসা সম্প্রসারণের পাশাপাশি লগ্নির ওই অর্থ দিয়েই কয়েক মাসের মধ্যে মোবাইল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সংস্থা অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
স্ন্যাপডিলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কুণাল বহেল-ও এ দিন বলেন, “আমরা ১০ লক্ষ ডলারের কম থেকে শুরু করে ১০ কোটি ডলার পর্যন্ত, বিভিন্ন আয়তনের সংস্থাকে অধিগ্রহণ করার কথা ভাবছি।” ইতিমধ্যেই তিন-চারটি সংস্থাকে তাঁরা নিশানা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এ বছরেই যে ১০০ কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছে তারা, তা এই সব খাতে লাগানো হবে বলেও জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।