সরাসরি পণ্য-পরিষেবা কেনাবেচা নিয়ে ফের আলাদা আইনের দাবি

সরাসরি পণ্য-পরিষেবা কেনাবেচা বা ‘ডিরেক্ট সেলিং’ -এর ব্যবসার ক্ষেত্রে ভারতে কোনও পৃথক আইন নেই। ফলে এ দেশে ব্যবসা চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের। দ্রুত সেই আইন প্রণয়নের দাবিতে রাজ্য সরকারগুলির কাছে দাবি জানিয়েছে বণিকসভা ফিকি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৪ ০২:৩৮
Share:

সরাসরি পণ্য-পরিষেবা কেনাবেচা বা ‘ডিরেক্ট সেলিং’ -এর ব্যবসার ক্ষেত্রে ভারতে কোনও পৃথক আইন নেই। ফলে এ দেশে ব্যবসা চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের। দ্রুত সেই আইন প্রণয়নের দাবিতে রাজ্য সরকারগুলির কাছে দাবি জানিয়েছে বণিকসভা ফিকি। এ রাজ্যেও একই আর্জি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে-সহ আমলাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন এ বিষয়ে ফিকির টাস্ক ফোর্সের উপদেষ্টা বিজন মিশ্র। তাঁর দাবি, শুধু শিল্পের জন্য নয়, ক্রেতাদের স্বার্থেও এই আইন জরুরি।

Advertisement

অ্যামওয়ে, ওরিফ্লেম, টাপারওয়্যার-এর মতো সংস্থা ভারতে এই ব্যবসায় যুক্ত। এ ক্ষেত্রে মূলত উৎপাদক সংস্থার পণ্য বা পরিষেবা সরাসরি কোনও ব্যক্তি আর এক ব্যক্তিকে বিক্রি করে থাকেন। খুচরো বিপণনের মতো মাঝে কোনও আলাদা পরিকাঠামো থাকে না। কিন্তু ওই সব সংস্থার অভিযোগ, নির্দিষ্ট আইন না-থাকায় অনেকেই তাদের বেআইনি অর্থ লগ্নি বা ভুঁইফোঁড় সংস্থার সঙ্গে তুলনা করে। অথচ ‘ডিরেক্ট সেলিং’ ব্যবসায় যুক্ত সংস্থাগুলির কার্যকলাপ সম্পূর্ণ স্বচ্ছ্ব। যাঁরা ওই সব সংস্থার পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করেন, তাঁদের দেওয়া হয় না কোনও অবাস্তব পাওনার প্রতিশ্রুতিও। ব্যবসার নিয়ম মেনেই পাওনা নির্দিষ্ট হয়। আলাদা আইন তৈরি হলে এই সংস্থাগুলির রক্ষাকবচ মিলবে, দাবি সংশ্লিষ্ট শিল্পের। পিএইচডি চেম্বারের হিসেবে, ভারতে এই ব্যবসার অঙ্ক প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে যুক্ত প্রায় ৫৮ লক্ষ মানুষ। আইনি রক্ষাকবচ না-থাকায় কয়েকটি সংস্থা এ দেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়েও নিয়েছে।

রাজস্থান ও কেরলে এই ব্যবসার জন্য নির্দেশিকা তৈরি হয়েছে। বিহারও আগ্রহী। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই আইন চালু করেছে, দাবি ফিকি-র উপদেষ্টার। বিজনবাবুর দাবি, রাজ্যের বিষয় বলে রাজ্যগুলিকেই এ জন্য আইন তৈরি করতে হবে। সেই লক্ষ্যে বিজনবাবু ক্রেতা সুরক্ষা সচিব এ সুব্বাইয়া, শিল্প সচিব সি এম বাচাওয়াত ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যমল সেনের সঙ্গে বেঠক করেন। রাজ্যের কাছে একটি খসড়া আইনও পেশ করেন। ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে ফিকি-র দাবি, নির্বাচন হয়ে গেলে তাঁরা ফের আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বিজনবাবু বলেন, “ক্রেতা সুরক্ষার প্রশ্নেও এই ব্যবসার আইনি রক্ষাকবচ জরুরি। কারণ সংস্থাগুলি ব্যবসা গুটিয়ে নিলে বঞ্চিত হবেন ক্রেতাই। এই সংস্থাগুলি নিয়ম মেনে গুণগত মান বজায় রেখে পণ্য তৈরি করে। ফলে ক্রেতার অধিকার সুরক্ষিত থাকে। তা ছাড়া এ ধরনের ব্যবসায় মধ্যস্থতাকারী নেই। ক্রেতা সুরক্ষা সংগঠন হিসেবে আমরা চাই মধ্যস্থতাকারীর সংখ্যা কমুক। তাতে পণ্যের দামও কমে।” তাঁর দাবি, বিশ্বে কোনও পণ্যের দামের মধ্যে ১৫-২০% যেখানে মধ্যস্থতাকারীর অংশ, ভারতে তা প্রায় ৬০%।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন