নিজেদের মতো করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পথে ইতিমধ্যেই হাঁটতে শুরু করেছে বেশ কিছু ছোট-বড় শিল্প সংস্থা। এ বার সেই উদ্যোগে সামিল হচ্ছে বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বারও। বিশেষজ্ঞ সংস্থার সাহায্য নিয়ে রীতিমতো বিদ্যুৎ ‘অডিট’ করানোর পথে পা ফেলেছে তারা। পুরোদস্তুর পরিকল্পনা করেছে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের। বণিকসভাটির দাবি, এটি কার্যকর হলে তাদের বিদ্যুৎ ব্যবহার অর্ধেকেরও বেশি কমবে। একই সঙ্গে, এর মাধ্যমে সার্বিক ভাবে শিল্পমহলকেও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে উদ্যোগী হতে বার্তা দিতে চাইছে ওই বণিকসভা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, বিদ্যুৎ অডিটের জন্য এনফ্রেজি নামে একটি সংস্থাকে নিয়োগ করে বেঙ্গল চেম্বার। এই প্রাচীন বণিকসভাটির দফতর যে বাড়িতে, সেটি হেরিটেজ ভবন হিসেবে স্বীকৃত। আপাতত তাদের কার্যালয়ের একাংশে আলো ও পাখায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বেঙ্গল চেম্বারের দাবি, অডিট সংস্থাটির মতে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে ওই অংশের বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে অর্ধেকেরও বেশি। বছরে খরচ বাঁচবে প্রায় তিন লক্ষ টাকা। পুরো পরিকল্পনাটি রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের চার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে নিয়ে গঠিত পৃথক সংস্থা এনার্জি এফিশিয়েন্সি সার্ভিসেস। বেঙ্গল চেম্বার কর্তাদের দাবি, কোনও বণিকসভার এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। দক্ষতার সঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়ে কাজকর্মের জন্য অবশ্য আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, ইউরোপিয়ান বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টার ইত্যাদির সঙ্গে আলাদা ভাবে গাঁটছড়া বেঁধেছে তারা।
মূলত দু’টি কারণে প্রথাগত বিদ্যুতের (বিশেষত তাপবিদ্যুতের) ব্যবহার কমাতে উদ্যোগ শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। প্রথমত, এর জেরে দূষণ বাড়ে। আর দ্বিতীয়ত, সারা দুনিয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে সীমিত কয়লা ভাণ্ডার দিয়ে তার উৎপাদন বজায় রাখা কতটা সম্ভব হবে, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে শিল্প সংস্থার মতো বড় গ্রাহকদের বিদ্যুৎ অডিট করাতে উৎসাহ দিচ্ছে সিইএসসি। গত নভেম্বরে বেঙ্গল চেম্বারকে এই প্রস্তাব দেওয়ার পরই এ বিষয়ে উদ্যোগী হয় তারা। বণিকসভাটির ডিরেক্টর জেনারেল পি রায় বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পথ খোঁজা। যাতে কার্বন নির্গমণ কমে। ভারসাম্য বজায় থাকে পরিবেশেরও।”