গান্ধিকে নিয়ে আলোচনা করবার মতো সাবালক হয়ে উঠতে পারিনি

গাঁধীজির এই ‘সত্য’ রচনাটি দিয়ে সঙ্কলনের শুরু, এমনই আরও রচনা আছে তাঁর।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০ ০০:০১
Share:

গান্ধিচর্চা/ এক সত্যের অন্বেষণ
সম্পাদক: রণজিৎ অধিকারী
৪৫০.০০
পূর্ব

Advertisement

বাঙালির গাঁধীচর্চার ধারা শুধু অপ্রতুলই নয়, তার রীতিপদ্ধতিও বেশ গোলমেলে। সাধারণত স্বাধীনতা আন্দোলন, হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক, বা দেশভাগে তাঁর ভূমিকা প্রায়ই বাঙালির আলোচনায় এসে পড়ে, আর কিছু ক্ষণ পরেই আলোচনা গড়িয়ে যায় গাঁধীজি-নেতাজি বিরোধের আলোচনায়। ‘‘প্রকৃতপক্ষে গান্ধিকে নিয়ে আলোচনা করবার মতো আজও যেন আমরা যথেষ্ট সাবালক হয়ে উঠতে পারিনি।’’ সম্পাদকের এই মন্তব্যে সঙ্কলনটি তৈরির হেতু স্পষ্ট হয়ে আসে, তবে তিনি বাঙালিকে গাঁধী-দীক্ষিত করার কারণ বা তাঁর অভিপ্রায় স্পষ্ট করেছেন আরও: ‘‘গান্ধি মহান ছিলেন কি না তা প্রধান বিচার্য নয়— তবে দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারতবর্ষ জুড়ে ছড়ানো যে তাঁর বিপুল কর্মকাণ্ড— হোক সে ঠিক বা ভ্রান্ত— তাতে যে উদ্যম, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, কিংবা নির্ভীক লড়াকু জেদি এক মানুষের দেখা পাই— তার তুলনা বিশ্বের ইতিহাসে পাওয়া ভার। অন্নদাশঙ্কর রায় যথার্থই বলেছিলেন— ‘ভবিষ্যতে যখন মহাকাব্য রচিত হবে তখন ভারতের মহাকবি সত্যকেই শীর্ষস্থান দেবেন, নায়ক করবেন গান্ধীজিকে।’ এই সঙ্গে এও ভাবুন যে, সত্যবাদী যুধিষ্ঠিরেরও কি ত্রুটি ভ্রান্তি ছিল না?’’ এর আগে পূর্ব থেকে কিন্নর রায় সম্পাদিত ‘গান্ধিচর্চা’ শিরোনামে যে সঙ্কলনটি বেরোয়, তার রচনাদি যেমন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এ-সঙ্কলনে, তেমনই যুক্ত হয়েছে আরও অনেক রচনাই, এমন এক বড় পরিসরেই গাঁধীজিকে নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার ছিল, সে প্রয়োজন মেটাবে সঙ্কলনটি।

‘‘সত্য যেখানে, সেখানে জ্ঞানও। কারণ জ্ঞান সত্য। যেখানে যথার্থ সত্য নেই, সেখানে খাঁটি জ্ঞানও থাকতে পারে না।... এই সত্যের প্রতি নিষ্ঠাই আমাদের অস্তিত্বের এককের যৌক্তিকতা। আমাদের যাবতীয় কাজকর্ম সত্য-কেন্দ্রিক হওয়া উচিত। সত্য যেন আমাদের জীবনের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমান হয়।’’— গাঁধীজির এই ‘সত্য’ রচনাটি দিয়ে সঙ্কলনের শুরু, এমনই আরও রচনা আছে তাঁর। তাঁর নির্বাচিত রচনা, পত্রাবলি, বক্তৃতামালার সঙ্গে আছে তাঁকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের গভীর মূল্যায়ন: ‘‘সাহসের অন্ত নেই তাঁর; মৃত্যুকে তিনি তুচ্ছ করেছেন। কঠিন কারাগার, তাঁর সমস্ত লোহার শিকল নিয়ে তাঁর ইচ্ছাকে ঠেকাতে পারেনি। সেই তিনি এসেছেন আজ আমাদের মাঝখানে। আমরা যদি ভয়ে পিছিয়ে পড়ি, তবে লজ্জা রাখবার ঠাঁই থাকবে না। তিনি আজ মৃত্যুব্রত গ্রহণ করেছেন ছোটো-বড়োকে এক করবার জন্যে। তাঁর সেই সাহস, তাঁর সেই শক্তি, আসুক আমাদের বুদ্ধিতে, আমাদের কাজে।’’ আছে বিশিষ্টদের রচনা সংবলিত সাম্প্রতিক মূল্যায়নও। তাঁকে নিয়ে কবিতা নাটক কার্টুন। তাঁকে নিয়ে গ্রন্থপঞ্জি। আছে গাঁধীজি ও এই সময় নিয়ে সৌরীন ভট্টাচার্যের সঙ্গে সম্পাদকের কথোপকথন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন