পূজা উপান্তে শেষ আশ্বিনের অপরাহ্নে কলকাতার রেড রোডে শারদ শোভাযাত্রার যে আয়োজন দেখা গেল, তা শুধু অভিনবই নয়, স্বীকার করা প্রয়োজন, নতুন সম্ভাবনার দ্বার খোলার পটভূমি হিসাবেও ইতিহাসে স্থান পাওয়ার যোগ্য।
সরকারি খরচে শোভাযাত্রা কেন, এ প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে এই প্রশ্নে যাথার্থ আছে, অন্তত ভাবনার উপাদান বহন করে। সরকারি তরফের যুক্তিটিও ফেলে দেওয়ার নয়, বরং বাস্তবের নিরিখে প্রাসঙ্গিকও। কলকাতা তথা রাজ্যের দুর্গাপূজাকে ঘিরে এই যে বৃহত্ কর্মযজ্ঞ, উত্সবের বিপুল সমারোহ, আনন্দের কল্লোলিত বহিঃপ্রকাশ— এ সবই আমাদের কাছে বড় আপনার। কিন্তু তা যেন নিজেরই প্রাঙ্গণে নিজের মতো করে নিজেদের মধ্যেই। বহির্জগতের কাছে, বহির্বিশ্বের প্রাঙ্গণে তার যথাযথ বিপণন কি করতে পেরেছি আমরা? পেরেছি দুর্গাপূজাকে পর্যটন গন্তব্যে পরিণত করতে? গোয়া যদি বর্ষশেষের উত্সবকে পর্যটনের উত্সবে রূপান্তরিত করতে পারে, পারে যদি রিওর কার্নিভাল, এই রাজ্যের দুর্গাপূজার মতো এই বিরাট মাপের উত্সব কেন পারবে না?
শুক্রবারের এই কার্নিভাল সেই পথটার যেন ইঙ্গিত দিল। ইঙ্গিত দিল নতুন দিগন্ত খোলার। কতটা কী হবে, তা বলবে ভবিষ্যত্। তবে এক উজ্জ্বল ইতিহাসের সম্ভাবনাময় পথের যে আজ রেড রোডে সমাপতন হল, তা অনস্বীকার্য।
ইতিহাসের রেড রোড নতুন ইতিহাস লিখবে কি?