Editorial News

অসংবেদনশীল এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন

কেন প্রশ্ন ফাঁস হল? বছরের পর বছর ধরে একটা পরীক্ষা ব্যবস্থা চলছে। সে ব্যবস্থার একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার সুবাদে সেই পদ্ধতি তো নিশ্ছিদ্র হয়ে ওঠা উচিত। কিন্তু এখনও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০০:৫৩
Share:

ছবি: পিটিআই।

স্বপ্নভঙ্গ তো হলই। অকারণে, অপ্রয়োজনে খুব বড় ধাক্কা খেল লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া। দুর্নীতির অস্তিত্ব অত্যন্ত রূঢ় এক বাস্তব আমাদের দেশে। প্রশ্ন ফাঁসের মতো দুর্নীতি সে বাস্তবতায় নতুন কিছু নয়। কিন্তু জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষাটা যারা দিচ্ছে বা যারা সাবালকত্বে পা দেওয়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাদের বিষয়ে আরও অনেক যত্নবান এবং সংবেদনশীল হওয়া জরুরি ছিল কর্তৃপক্ষের। যে চূড়ান্ত অপেশাদারিত্ব, অসতর্কতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতা দেখালেন সিবিএসই কর্তৃপক্ষ, তা ক্ষমার অযোগ্য।

Advertisement

প্রথম প্রশ্ন, কেন প্রশ্ন ফাঁস হল? বছরের পর বছর ধরে একটা পরীক্ষা ব্যবস্থা চলছে। সে ব্যবস্থার একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার সুবাদে সেই পদ্ধতি তো নিশ্ছিদ্র হয়ে ওঠা উচিত। কিন্তু এখনও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ এত বছরেও পরীক্ষা ব্যবস্থাটাকে নিশ্ছিদ্র করে তোলা যায়নি। হাতের কাছে নানা রকম আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও সিবিএসই-র পরীক্ষা ব্যবস্থা এত অনিরাপদ কেন?

দ্বিতীয় প্রশ্ন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার অনেক আগেই প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কথা জানতে পারা সত্ত্বেও সিবিএসই কর্তৃপক্ষ কেন নিষ্ক্রিয় রইলেন? প্রাথমিক তদন্ত বলছে, দ্বাদশ শ্রেণির অর্থনীতির প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার খবর পরীক্ষার দু’দিন আগে পেয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। আর দশম শ্রেণির অঙ্কের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার খবর সিবিএসই-র কাছে পৌঁছেছিল পরীক্ষা শুরু হওয়ার ন’ঘণ্টা আগে। তা সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ না করে, কারও কে কিছু জানতে না দিয়ে ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্নপত্রেই পরীক্ষা নেওয়া হল কেন?

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

প্রশ্নগুলোর কোনও সদুত্তর নেই সিবিএসই কর্তৃপক্ষের কাছে। অনিয়মের জবাবদিহি করতে সিবিএসই যে বাধ্য, কর্তৃপক্ষের আচরণে তা একেবারেই মনে হচ্ছে না।

আরও পড়ুন: ফের অর্থনীতি, অনিশ্চিত অঙ্ক

আরও পড়ুন: আবার পরীক্ষা? একটু ধৈর্য ধরো, পারবে নিশ্চয়ই

লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া পরীক্ষায় বসল। তাদের জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। এই পরীক্ষাকে ঘিরে নানা রকমের আশা, আশঙ্কা, দোলাচল, উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, ভাবাবেগ, পরিকল্পনা থাকে পড়ুয়াদের। পরীক্ষা দেওয়ার পর যদি জানা যায়, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছিল, তাই পরীক্ষা ফের দিতে হতে পারে, তা হলে পড়ুয়াদের মধ্যে পরীক্ষা সংক্রান্ত মানসিক প্রস্তুতির পরিসরটা অনেকটাই এলোমেলো হয়ে যায়। প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তাই অত্যন্ত সংবেদনশীল ভঙ্গিতে পদক্ষেপ করা উচিত ছিল সিবিএসই কর্তৃপক্ষের। কিন্তু সিবিএসই যে ভাবে গোটা বিষয়টা নিয়ে ছেলেখেলার ভঙ্গিতে পা ফেলল, যে ভাবে একরাশ ধোঁয়াশার জন্ম দিল, তাতে অসংবেদনশীলতা অত্যন্ত প্রকট। আবার বলি, এই অসংবেদনশীলতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ক্ষমার অযোগ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন