Editorial News

দুর্নীতির ‘ঝাড়ুদার’ এখন নিজেই স্বচ্ছতার পরীক্ষায়

ঠিক যেন ধূমকেতু। আশপাশকে চমকে দিয়ে হঠাৎ আসা, আলোকছটায় চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়া এবং আকস্মিক ধ্বংসের অনিবার্য পরিণতির পথে যাত্রা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মূর্ত প্রতিবাদ হিসেবেই রাজনীতির অঙ্গনে আবির্ভাব হয়েছিল অরবিন্দ কেজরীবালের।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৭ ০৫:১৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

ঠিক যেন ধূমকেতু। আশপাশকে চমকে দিয়ে হঠাৎ আসা, আলোকছটায় চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়া এবং আকস্মিক ধ্বংসের অনিবার্য পরিণতির পথে যাত্রা।

Advertisement

দুর্নীতির বিরুদ্ধে মূর্ত প্রতিবাদ হিসেবেই রাজনীতির অঙ্গনে আবির্ভাব হয়েছিল অরবিন্দ কেজরীবালের।

বিপুল কলরোল, তুমুল জনসমর্থন, হঠাৎ আলোর ঝলকানির সেই পর্বগুলো মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানেই এখন সুদূর অতীত। সাম্প্রতিক নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর কোণঠাসা আপ শিবির যখন অন্তর্কোন্দল সামলাতে হিমসিম, তখনই বোমাটা এল নিজেদের শিবির থেকেই। এ বার অভিযোগ মারাত্মক। বরখাস্ত হওয়া আপ মন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বললেন, অরবিন্দ কেজরীবাল নগদে ২ কোটি টাকা নিয়েছেন।

Advertisement

এই অভিযোগের সত্যাসত্য এখনও প্রমাণসাপেক্ষ। কিন্তু রাজনীতি শুধুমাত্র প্রমাণের উপরেই চলে, এমনটা নয়। রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে যেহেতু সাধারণ মানুষ, অতএব তাঁদের ভাবনা-চিন্তা-চেতনা-ধারণা-বিশ্বাস-অবিশ্বাস সবচেয়ে মূল্যবান। রাজধানীর বীতশ্রদ্ধ মানুষ ইতিমধ্যেই আপের থেকে মুখ ঘুরিয়েছেন। এখন দুর্নীতির হাতিয়ারটুকুও যদি কেজরীবালের হাত থেকে বেরিয়ে যায়, তা হলে অবশিষ্ট বলতে আর কিছুই থাকবে না।

দুর্নীতিকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করার ঘোষণাটাকে সামনে রেখেই ‘ঝাড়ু’ প্রতীককে বেছে নিয়েছিলেন কেজরীবাল। সেই ‘ঝাড়ু’-র নৈতিক অধিকারটুকুও যদি হারান কেজরীবাল, তা হলে তাঁর সমূহ বিপদ। কেজরীবাল তথা আপের উত্থান এবং এই ক্রম অবনমনের বিবরণ রাজনীতির ইতিহাসের ছাত্রদের জন্য অবশ্যপাঠ্য অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত থাকবে। অবশ্যপাঠ্য অধ্যায় হোক রাজনীতির কারবারিদের জন্যও। সব কিছুর কেন্দ্রে যে মানুষ এবং একমাত্র মানুষই আছেন, এই সত্যটাকে ভুললে স্বর্গ থেকে আস্তাকুঁড়ের যাত্রা খুব বেশি দীর্ঘ হয় না। এই কথাটা আরও একবার স্মরণ করার দরকার পড়ল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement