বাংলার রসমালাইয়ের বদলি দিল্লি কা লাড্ডু
বীরপুরুষ: রাজনাথের বাড়ির দেওয়ালে রানা প্রতাপ-শিবাজি, টেবিলে বিবেকানন্দ
পায়ের গোড়ালি ভেঙে এখন ঘরবন্দি রাজনাথ সিংহ। বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। ভাঙা পা চেয়ারের উপরে তুলে রাখতে হয়। হুইলচেয়ারে ঘরের মধ্যে ঘোরেন। দীর্ঘ দিন হাঁটার অভ্যেস, সেই হাঁটাই এখন বারণ। বাড়িতে অফিসঘরেই চিনা ঘাসের একটা ছোট লন লাগিয়েছেন। রাজনাথের ড্রয়িংরুমে বড় একটা ছবি। তাতে রানাপ্রতাপ সিংহ আর শিবাজি। রাজনাথ নিজে রাজপুত, আর বিশ্বাস করেন, এই দুই বীর যোদ্ধাই মুঘল সেনাকে হারিয়েছিলেন। টেবিলের উপর স্বামী বিবেকানন্দের ছোট একটি মূর্তি। এই ঘরেই অনেকটা সময় কাটান, যাঁরা দেখতে আসেন, কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি দিল্লি এসেছিলেন, দেখা করে গেছেন। রসমালাই নিয়ে গিয়েছিলেন, রাজনাথ চেটেপুটে খেলেন বাংলার রসমালাই। আর মমতাকেও উপহার দিলেন, বুন্দির লাড্ডু!
কেচ্ছা
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে কর্নাটক বিজেপিতে নতুন ঝঞ্ঝাট। শোভা নামের ৪৫ বছর বয়সি এক মহিলাকে দলের সাধারণ সম্পাদিকা করায় রাজ্য বিজেপি নেতারা মহা চটে গেছেন। ইয়েদুরাপ্পার বয়স প্রায় ৭৭। এই বয়সে তিনি নাকি শোভার প্রতি খুব দুর্বল। সামনের বছর কর্নাটকে ভোট, তাই দল ইয়েদুরাপ্পাকে দায়িত্ব দিচ্ছে আবার। কারণ তাঁর সঙ্গে আছে বিরাট লিঙ্গায়েত ভোট। তা বলে এখন এই উদ্ভট কেচ্ছা! বিজেপি বুঝতে পারছে না, গিলবে না ওগরাবে!
বিস্মৃতপ্রায়
দিল্লিতে বেশ কয়েক জন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা আজ যেন থেকেও নেই। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি এখনও হাসপাতালে, কোমায়। অটলবিহারী বাজপেয়ী আছেন, কিন্তু কাউকে চিনতে পারেন না। কথা বলতে পারেন না। যশোবন্ত সিংহ মাথার আঘাতে কোমায়। জর্জ ফার্নান্ডেজ দক্ষিণ দিল্লিতে লায়লা কবীরের কাছে। লায়লা নিয়মিত এখন তাঁর শুশ্রূষা করেন। কিন্তু তিনিও কাউকে চিনতে পারেন না। শিলচরের প্রাক্তন সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহন দেব দিল্লিতে। স্ত্রী-কন্যা পাশে থাকেন, কিন্তু তিনি যেন থেকেও নেই।
জেএনইউ-তে স্বামীজি
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বার প্রবেশ করলেন স্বামী বিবেকানন্দ। অনেকের মূর্তি আছে সেখানে, অথচ এত দিন স্বামীজিই ছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এ এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। জেএনইউ-এর কার্যকর পরিষদের কাছে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এ প্রস্তাব দেয়, পরিষদ মেনে নেয়। স্বামীজির মূর্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জেএনইউ-তে শাসকবন্ধু সংঘ পরিবার হিন্দুত্ববাদকেও প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে, আবার এসএফআই-এবিভিপি কোনও পক্ষই বিরোধিতা করেনি। করবেই বা কেন? এর আগে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন এবিভিপি দাবি তুলেছিল, জেএনইউ-এর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের নাম রাখা হোক অম্বেডকরের নামে, গ্রন্থাগারের সামনে প্রতিষ্ঠিত হোক অম্বেডকরের মূর্তি। সেই প্রস্তাবে কর্তৃপক্ষ সাড়া না দিলেও এ বার বিবেকানন্দকে আনলেন জেএনইউ প্রাঙ্গণে।
জোট-সেলাই
সংসদ ভবনে বিরোধী নেতাদের বৈঠকে সনিয়া গাঁধীর নজরে পড়ল, ডেরেক ও’ব্রায়েনের জামার বোতাম ছেঁড়া। এত সুন্দর মসলিনের জামা, বোতাম ছেঁড়া কেন? সনিয়া পাশে বসা গুলাম নবি আজাদকে জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের দফতরে সুচ-সুতো নেই? তক্ষুনি দৌড়ঝাঁপ শুরু হল অফিসের কর্মীদের। নিমেষে এসেও গেল সুচ-সুতো। সনিয়া বললেন, ‘‘ওঁর বোতাম সেলাই করে দাও।’’ রাজ্যসভার কংগ্রেস দলনেতা গুলাম নবি আজাদ ডেরেকের বোতাম সেলাই করে দিলেন। জনৈক বামপন্থী নেতা সে দৃশ্য দেখে ফুট কাটলেন— নয়া জোটের সেলাই?
মহর্ষি গুঞ্জন
দায়িত্ববান: রাজীব মহর্ষি
তাঁর হাতেই কি ২০১৯-এর ভোটের ভার? মোদী সরকারের বিদায়ী স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব মহর্ষিকে নিয়ে দিল্লির অলিন্দে তেমনই গুঞ্জন। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল কে হবেন, এখনও ঠিক হয়নি। রাজীবকে নিয়ে সেখানে টানাটানি। এখন শোনা যাচ্ছে, মহর্ষি সে দৌড়ে নেই। তাঁকে পাঠানো হবে নির্বাচন কমিশনের লাল বাড়িতে। সেখানে একটি নির্বাচন কমিশনারের পদ খালি পড়ে। তার তাৎপর্যও আলাদা। কারণ বর্তমান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার অচল কুমার জ্যোতি ও নির্বাচন কমিশনার ওমপ্রকাশ রাওয়াত, দু’জনেই আগামী লোকসভা ভোটের আগে অবসর নেবেন। সে ক্ষেত্রে মহর্ষিই ২০১৯-এ মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার হিসেবে লোকসভা ভোট পরিচালনা করবেন। স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবে কাজের ফাঁকেই মহর্ষি আইএএস পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে ‘ইন্ডিয়া ২০১৭’ নামের বই লিখেছেন। নির্বাচন কমিশনার হলে তাঁর কলম থেকে কী বের হয়, মহর্ষির আইএএস বন্ধুরা সেটাই দেখতে চান।
জয়ন্ত ঘোষাল, অগ্নি রায়,
অনমিত্র সেনগুপ্ত, দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেমাংশু চৌধুরী