দিল্লি ডায়েরি

দিল্লি আইআইটি-র ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ‘ফার্স্ট বয়’-এর বায়োডেটায় আসল চমক হল, তিনি ক্যারাটেতে ব্ল্যাক বেল্ট।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী ও অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৩
Share:

ব্ল্যাক বেল্ট আর বিজয়কুমার

Advertisement

এক বছর আগের ঘটনা। দিল্লিতে আম আদমি পার্টির বিধায়করা মিলে নাকি চড়াও হয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যসচিব অংশু প্রকাশের উপরে। আর সে ঘটনা ঘটেছিল মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের সামনেই। অভিযোগ ছিল, মুখ্যসচিব দিল্লি সরকারের কথা শুনছেন না, মোদী সরকারের হাতের পুতুল হয়ে নাচছেন। সেই ঘটনা নিয়ে রাজধানীতে কম জলঘোলা হয়নি। নতুন বছরে দিল্লির নতুন মুখ্যসচিব নিযুক্ত হয়েছেন বিজয়কুমার দেব। দিল্লি আইআইটি-র ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ‘ফার্স্ট বয়’-এর বায়োডেটায় আসল চমক হল, তিনি ক্যারাটেতে ব্ল্যাক বেল্ট। আইএএস মহলে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, আম আদমি পার্টির বিধায়করা ফের চড়াও হলে মুখ্যসচিবও যাতে পাল্টা দিতে পারেন, সেই জন্যই কি বেছে বেছে বিজয়কে বাছাই!

খবরে: প্রাক্তন ও বর্তমান। অংশু প্রকাশ ও বিজয়কুমার দেব

Advertisement

অমিত-আহার

মাঠে নামার আগে খেলোয়াড়দের মধ্যে ‘বন্ডিং’ বাড়ানোর দাওয়াই দেন কোচেরা। বিরাট কোহালিদের দেখা যায়, সিরিজ়ের মধ্যেই দলের সবাইকে নিয়ে কোনও রেস্তরাঁয় খেতে যাচ্ছেন। ক্রিকেট বাদ দিয়ে নিছক গল্পগুজবই হয় সেখানে। বিজেপি সাংসদদের জন্যও কি সেই পথ নিচ্ছেন অমিত শাহ? মঙ্গলবার লোকসভায় গরিবদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিল পাশ হয়েছিল। রাজ্যসভায় তা পাশ হয় বুধবার। বুধবারের সেই মহাযুদ্ধের আগে, মঙ্গলবার রাতে রাজ্যসভার সাংসদদের নিয়ে খেতে বার হন অমিত শাহ। সংসদীয় মন্ত্রী বিজয় গোয়েলের পৈতৃক ভিটে সংস্কার করে তৈরি হয়েছে পুরনো দিল্লির চাঁদনি চকের হাভেলি ধরমপুরা রেস্তরাঁ, যাওয়া হয় সেখানেই। খাওয়াদাওয়া তো ছিলই, রাজনীতির কথা বাদ দিয়ে খোলামেলা আড্ডাই বেশি হল।

বৈষম্য

দিল্লির হাওয়ায় দূষণ বাড়ছে, আর মন্ত্রী-সান্ত্রিদের ঘরে ঘরে নতুন একটি যন্ত্রেরও আবির্ভাব হয়েছে। নর্থ ব্লক থেকে সাউথ ব্লক, শাস্ত্রী ভবন থেকে উদ্যোগ ভবন, মন্ত্রীদের ঘরে ‘এয়ার পিউরিফায়ার’-এর ছড়াছড়ি। শুধু মন্ত্রীদের দফতর কেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিদের আসনের পিছনেও এখন বায়ু শোধন যন্ত্র। বিজ্ঞান ভবনে জিএসটি পরিষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেও চার-চারটি ‘এয়ার পিউরিফায়ার’। মন্ত্রীদের ঘরের বাইরে খোলা বারান্দায় বসে-থাকা আর্দালিরা রাগে গজগজ করেন। তাঁদের নাকে যে রুমাল ছাড়া বাতাসের বিষ আটকানোর আর কোনও উপায় নেই!

ফের উদয়

মনমোহন সিংহ নীল পাগড়ি পরতেন। তাঁর পছন্দের এই মানুষটিকেও সর্বদা নীল পাগড়িতেই দেখা যেত। মনমোহন-জমানায় তিনিই ছিলেন যোজনা কমিশনের উপাধ্যক্ষ। মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এসে যোজনা কমিশন তুলে দেন। গত ক’বছরে মন্টেককেও টিভির পর্দায় বিশেষ দেখা যায়নি। এখন কী করছেন, প্রশ্নে হেসে বলেছিলেন, বই লিখছি। স্মৃতিকথা। ২০১৯-এ ফের উদয় হচ্ছেন মন্টেক। লোকসভা ভোটের বছরেই তাঁর বই মন্টেক রিমেমবারস প্রকাশিত হচ্ছে। তাঁকে অনেকে ভুলে গেলেও, তিনি ভোলেননি কিছুই।

সাইকেলে সংসদ

পার্কিং: সংসদ ভবনের বাইরে রাখা আছে সাংসদদের সাইকেল

মোদী সরকারের সড়ক পরিবহণ, জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়া দিল্লির রাস্তায় সাইকেল চেপে ঘুরে বেড়ান। সংসদেও আসেন সাইকেলে চেপে। গুজরাতের সাংসদ মনসুখ, অর্জুন রাম মেঘওয়াল ও অনিলমাধব দাভে— বিজেপির এই তিন সাংসদের এক সময় প্রায় একটা ‘সাইক্লিস্ট ক্লাব’ই ছিল। দাভে প্রয়াত। প্রবীণ সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী মেঘওয়াল এখনও মাথায় রাজস্থানি পাগড়ি চাপিয়ে সাইকেল চাপেন। আর সাইক্লিস্ট ক্লাবে নতুন নাম লিখিয়েছেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি সাংসদ বিকাশ মহাত্মে। পেশায় ডাক্তার বিকাশের বয়স ৬১ হলেও সাইকেল ছোটানোয় এনার্জির অভাব নেই।

কার স্বাস্থ্য কেমন

সেন্ট্রাল হলে দু’জনে মুখোমুখি। ফিল্মপ্রেমী লালকৃষ্ণ আডবাণী জানালেন কন্যাকে, তাঁর মায়ের ছবি বড় প্রিয় ছিল। এখনও নিয়মিত ছবি দেখার অভ্যাস। আরও জানালেন, দেশভাগের আগে করাচিতে তাঁর বাবার একাধিক সিনেমা হল ছিল। তাই ছোটবেলা থেকেই এই নেশা তাঁর। তাঁর স্বাস্থ্য এখন কেমন, মুনমুনের প্রশ্নে মুচকি হেসে প্রবীণ রাজনীতিবিদের উত্তর, ‘‘আমার স্বাস্থ্য তো ভালই। কিন্তু সংসদের স্বাস্থ্য আপাতত ভাল যাচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন