গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
শাহরুখ খানের উচ্চতা কত? সম্ভবত পাঁচ-আট। তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র তাঁর চেয়ে ইঞ্চিদুয়েক বেশিই হবেন। কথা বলা, হাঁটাচলার মধ্যে বাবার জিন খেলা করে। দেখতেও মন্দ নন। বাবার মতো সংলাপে রসবোধ গুঁজে দেওয়ার মুনশিয়ানাও আছে।
এমন ক্ষেত্রে সাধারণত তারকাসন্তানেরা হিরো-টিরোই হতে চান। যেমন অভিষেক বচ্চন ইত্যাদিরা হয়েছেন। বা হতে চেয়েছেন। কিন্তু আরিয়ান খান ওপথে গেলেন না। উল্টে তিনি হলেন পরিচালক। তা-ও নয়, নির্মাতা এবং পরিচালক। ক্রিয়েটর অ্যান্ড ডিরেক্টর। এবং নিজের পরিচালিত প্রথম ওয়েবসিরিজ় ‘ব্যাডস অফ বলিউড’-কে নিয়ে এসে ফেললেন নেটফ্লিক্সের তুলনামূলক নিরাপদ জমিতে। নিরাপদ, কারণ পৃথিবীর ১৯০টি দেশে নেটফ্লিক্স দেখা যায়। নিরাপদ, কারণ ওটিটি-র ডিজিটাল মঞ্চ প্রতিটি দর্শকের কাছে তার ব্যক্তিগত সিঙ্গল স্ক্রিন হয়ে আবির্ভূত হয়। নিরাপদ, কারণ নামমাত্র ব্যয়ে এবং বিন্দুমাত্র গতর না-নাড়িয়ে এই সিরিজ় দেখে ফেলা যায়।
এবং চমকিত হওয়া যায়! কারণ, ‘নিরাপদ’ শব্দটি সেখানেই থেমে গিয়েছে।
ভারতীয় বিনোদনের জগতে তাঁর পুত্রের প্রথম সৃষ্টি মুক্তি পাওয়ার আগে শাহরুখ নেটফ্লিক্সে যে ‘টিজ়ার’ করেছিলেন, সেখানে তিনি প্রকাশিতব্য সিরিজ়টি সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘‘দ্য বিগেস্ট, দ্য ব্যাডেস্ট, দ্য ব্রেভেস্ট, হোয়্যাকিয়েস্ট, ফানিয়েস্ট, চিকিয়েস্ট, ম্যাডেস্ট, ফিল্মিয়েস্ট শো অন আর্থ!’’
ভুল বলেননি।
শাহরুখ যা যা বলেছিলেন, আরিয়ানের সিরিজ় (যাকে খান পরিবার ‘শো’ বলে অভিহিত করছে) হুবহু তা-ই। কিন্তু সেই সাড়ে বত্রিশ ভাজার মধ্যে একটা ঝাঁকুনি আছে। বলিউডের নড়া ধরে সেই রামঝাঁকুনিতে সকলে নড়েচড়ে বসেছেন।
বলিউড মানে বিগ বাজেট। বলিউড মানে ‘আইটেম সং’। বলিউড মানে চেনাছকের গল্প। বলিউড মানে দারুণ দারুণ গান। অন্তত গত বেশ কয়েক বছরের কাহিনি তেমনই। সেই ছকেই কিছুদিন আগে ৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা করা ‘সাইয়ারা’ দেখতে গিয়েছিলাম। খানিকটা কৌতূহলও ছিল। ইন্টারভ্যালের সময় পালিয়ে বেঁচেছি। মনে হচ্ছিল, এই ছবি ৬০০ কোটির ব্যবসা করল কী করে? পরে ভেবে দেখলাম, এই ছবি অধুনা পৃথিবীর কোনায় কোনায় সমুজ্জ্বল ‘জ়েন জি’র জন্য বানানো। মধ্যপঞ্চাশের সিনিয়র সিটিজ়েনের জন্য নয়। ‘সাইয়ারা’ আমার মতো দর্শকের ভাল লাগলে এই ছবির নির্মাতাদের কপালে দুঃখ ছিল। তাঁরা যাদের জন্য ছবি বানিয়েছেন, তারা হল ভরিয়ে দিয়েছে। কৌতূহল মিটে গিয়েছে।
আরিয়ান খানের ‘ব্যাডস অফ বলিউড’ নিয়েও কৌতূহলীই ছিলাম। হাজার হোক, শাহরুখের ছেলে তো। দেখা গেল, সে ছেলে এই মধ্যবয়সিকেও টানা পর পর সাতটি পর্ব দেখতে (বিজ্ঞজনেরা যাকে বলেন ‘বিঞ্জওয়াচ’) বাধ্য করে ছেড়েছে! এমনই কড়া তার অভিঘাত। এমনই দুরন্ত তার গতি। শাহরুখ-তনয় আগেই ঘোষণা করেছিলেন, বলিউডকে লোকে ভালবেসেছে। আহতও করেছে। তিনি বলিউডকে ভালবাসেন। কিন্তু বলিউডের উপর তিনি খানিক আঘাতও হানবেন। সে ঠিকই ছিল। সৃষ্টিবিক্রয়ের বিপণিতে এমন বিপণনী কথা অনেকেই বলে থাকেন। কিন্তু দেখতে বসে ভোম্বল হয়ে গেলাম। আরিয়ানের হামলা যে এত ভয়াবহ তীব্র হবে, তা বুঝতে পারিনি। এবং তা এতটাই আচম্বিতে যে, ভ্যাবাচাকা খাওয়ার মতো। না কি শাহরুখের-পুত্র বলেই মারটা আরও আকস্মিক লাগছিল? কে জানে! সম্ভবত তা-ই।
আরিয়ান বলিউডকে মহিমান্বিত করেননি। বরং গরম তেলে ফেলে এপাশে-ওপাশে ভেজেছেন। এক নবীন পরিচালক যে এই সাহস দেখাতে পেরেছেন, সেটাই অনেক। বিশেষত, তাঁর জন্মপরিচয়ের নিরিখে। আরিয়ান এমন একজন, যিনি জন্ম থেকেই বলিউড নামক একটি বুদ্বুদের মধ্যে বাস করেছেন। এখনও করছেন। ভবিষ্যতেও করবেন। সেই বাস্তুতন্ত্রের বাসিন্দা হিসাবেই তিনি খ্যাতি দেখেছেন। অখ্যাতি দেখেছেন। বস্তুত, তিনি জন্মেছেনই রিংয়ের একেবারে কাছের সিটের টিকিটটি পকেটে নিয়ে। যে বলিউড তাঁর পরিবারের ক্ষুন্নিবৃত্তি করে, তাঁকে এবং তাঁর পরিজনদের খ্যাতনামী বানায়, যেখানে আকাশে একটা ঢিল ছুড়লে নীচে যাঁর মাথাতেই পড়বে, তিনিই তাঁর বাবার বন্ধু বা সহকর্মী, সেই ইন্ডাস্ট্রিকে নিয়ে যে হাসিঠাট্টা এবং চড়াদাগের রং-তামাশা তাঁর সিরিজ়ে রয়েছে, তা অভূতপূর্ব এবং অভাবনীয়।
পরিচালক আরিয়ানের সিরিজ় খানিক উচ্চকিত, খানিক অবাস্তব, খানিক ছটফটে, খানিক বালখিল্যও বটে। কিন্তু এই সিরিজ় দর্শককে কোথাও থামতে দেয় না। গল্পে যে বিশেষ মৌলিকতা আছে, তা নয়। দিল্লির ছেলের বলিউডে এসে পায়ের তলার জমি খোঁজার চেষ্টার মধ্যে স্বয়ং শাহরুখের জীবনের ছায়া স্পষ্ট। হিরোর ভঙ্গুর মা, অসুস্থ বাবা, ‘কমিক রিলিফ’ কাকা— বলিউডের পরিচিত লাইন মেনেই এই সিরিজ় জন্ম নিয়েছে। আবার নেয়ওনি। এই সিরিজ়ে ‘নেপোটিজ়ম’ আছে। লুড়লুড়ে এবং লোলুপ প্রযোজক আছে। প্রযোজনা সংস্থার ‘কন্ট্রাক্ট’-এর জাঁতাকলে পড়ে কেরিয়ার শেষ হয়ে-যাওয়া ব্যর্থ অভিনেতা আছে। দিল্লি থেকে মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ভাগ্যান্বেষণে আসা মধ্যবিত্ত পরিবারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী নায়কের জন্য জানকবুল বন্ধু আছে। নায়কের দেখভালের জন্য এক বাস্তববাদী ম্যানেজার আছে। নায়কের প্রেমিকা তথা তার আগামী ছবির নায়িকার অসম্ভব দাপুটে, ষড়যন্ত্রী বাবা আছে। যে নিজেও একজন প্রভাবশালী বলিউড নক্ষত্র। আন্ডারওয়ার্ল্ড আছে। সেই অন্ধকার জগতের বাসিন্দা এবং ছবি তৈরিতে উৎসুক (চিত্রনাট্য তার কন্যার) ‘ডন’ আছে।
এই সিরিজ়ে একটি কাহিনিও আছে। কিন্তু সেই কাহিনিকে সামনে রেখে বলিউডকে কড়া চাবুক মেরেছেন আরিয়ান। এর আগে ফারহা খান, জ়োয়া আখতার বা কর্ণ জোহর বলিউডের নেপথ্যের কাহিনি নিয়ে ছবি বানিয়েছেন। আরিয়ানও কাহিনির সমান্তরালে সেটিই করেছেন। কিন্তু তাঁর দেখার এবং দেখানোর চোখ অসম্ভব তির্যক। আরিয়ানের সিরিজ়ে ব্যঙ্গ আছে। আছে অতিনাটকীয়তাও। বস্তুত, কাহিনির শেষে তিনি এমন একটি মেলোড্রামাটিক এবং আপাত-অভাবনীয় মোচড় দিয়েছেন যে, অনেকে বলছেন, হিন্দি ছবিতে অতিনাটকীয়তার জনক স্বয়ং মনমোহন দেশাইও লজ্জা পেতেন! কিন্তু ছবির মারাত্মক গতির সঙ্গে সেটা খাপছাড়া হয়নি।
ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু ইতিহাস বলে, প্রায় সমস্ত সফল ঔপন্যাসিকেরই জীবনের প্রথম উপন্যাসটি আত্মজৈবনিক হয়ে থাকে। চেনা প্লটের তো একটা স্বাচ্ছন্দ্য আছে। সেটা কে ছাড়তে চায়! আরিয়ানও তাঁর পরিচালিত এবং নির্মিত প্রথম ওয়েবসিরিজ়কে তাঁর চেনা দুনিয়ায় বেঁধেছেন। যার অলিগলি এবং অন্ধিসন্ধি তাঁর নিজের হাতের তালুর মতো পরিচিত। সেই কারণেই তিনি সেই বলিউডকে জনসমক্ষে পেশ করেননি, যাকে বাইরে থেকে দেখা যায়। তিনি ঢুকে পড়েছেন বলিউডের অন্ধকার তলপেটে। যেখানে পরিচালক কর্ণ জোহর (নিজের ভূমিকাতেই এই সিরিজ়ে অভিনয় করেছেন) জানাচ্ছেন, তিনি পাপারাৎজ়িদের পেমেন্ট করে দিয়েছেন। যাতে মওকা বুঝে তাঁর পরের ছবির নায়ক-নায়িকার ছবিটা তারা তুলতে পারে। আবার সেই কর্ণ জোহরই রুক্ষ, কঠিন গলায় নবাগত নায়কের থুতনিটা বজ্রআঁটুনিতে ধরে বলছেন, তিনি কী ভাবে তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দিতে পারেন। বলছেন, তাঁর চেয়ে সফল ছবি-করিয়ে বলিউডে নেই। অথবা প্রবল পরাক্রমশালী প্রযোজক, যিনি দর্পভরে নবাগতকে বলছেন, ‘‘আমিই তোমায় হিরো বানিয়েছি। আমিই তোমায় জ়িরো বানিয়ে ছেড়ে দেব।’’
গোটা বলিউডকেই আয়নার সামনে দাঁড় করিয়েছেন সাতাশ বছরের যুবা। বাবার সতীর্থদের পুজো তো করেনইনি, উল্টে তাঁদের নিয়েই মশকরা করেছেন। তবে সেটা তাঁর নাম আরিয়ান খান না হলে এবং তাঁর সিরিজ়ের প্রযোজকের নাম গৌরী খান না হলে কতটা সম্ভবপর হত, তা নিয়ে গভীর সন্দেহ আছে।
কারণ, সেই কারণেই তাঁর সিরিজ়ে নিজেদেরই ভূমিকায় ছুটপুট মুখ দেখিয়ে গিয়েছেন আমির খান থেকে শুরু করে সলমন খান, রণবীর কপূর, রণবীর সিংহ, ইমরান হাশমি বা এসএস রাজামৌলিরা। গুনে দেখছি, মোট ২৬ জন ‘খ্যাতনামী’র প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার রয়েছে। সিরিজ়ের অভিনয় করেছেন ববি দেওল, আরশাদ ওয়ারসি, মোনা সিংহের মতো পরিচিত তারকা অভিনেতারা। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন একঝাঁক তরুণ এবং আপাত অপরিচিত অভিনেতা। যাঁরা অসামান্য অভিনয়ক্ষমতার অধিকারী। এঁদেরই বাজি ধরে ধারালো ব্যঙ্গের অস্ত্রে বলিউডকে ফালাফালা করেছেন আরিয়ান। চার বছর ধরে চিত্রনাট্য লিখেছেন। ঘষামাজা করেছেন। তার পরে আবির্ভূত হয়েছেন বাবা-কাকাদের দুনিয়ার শল্যচিকিৎসা করতে।
শুধুই কি বলিউড? নাহ্, তা-ও নয়। আরিয়ান আয়না ধরেছেন দেশবাসীর সামনেও। মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়ে ২০২১ সালে টানা কুড়িদিন হাজতে থাকতে হয়েছিল তাঁকে। সেসব অভিযোগ থেকে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন। উল্টে তাঁকে গ্রেফতারকারী অফিসারই এখন দুর্নীতির দায়ে কাঠগড়ায়। সমীর ওয়াংখেড়ে নামের সেই অফিসারের একটি ভাঁড়প্রতিম চরিত্র আরিয়ানের সিরিজে থাকবে না, তা তো হয় না। রয়েছে। তাতে বাস্তবের সমীর বেজায় চটেছিলেন এবং আরিয়ান-শাহরুখের নামে বিশাল অঙ্কের মানহানির মামলা ঠুকেছিলেন। দিল্লি হাই কোর্ট অবশ্য সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। জীবনের পাশা পাল্টে গিয়েছে। শাহরুখ-পুত্রের কলার ধরে প্রিজ়ন ভ্যানে তুলে সমীর গোটা দেশের কাছে যে হিরোর মর্যাদা পেয়েছিলেন, এখন সেই শাহরুখই জাতীয় পুরস্কারজয়ী অভিনেতা। দেশ অন্য ‘খলনায়ক’ পেয়ে গিয়েছে।
যুগে যুগে, কালে কালে সিনেমার অন্যতম অস্ত্র হয়ে থেকেছে তির্যক ব্যঙ্গ এবং কটাক্ষ। যুগে যুগে, কালে কালে সৃষ্টির অন্তর্লীন ব্যঙ্গ বা স্যাটায়ার ক্ষমতাকে আঘাত করেছে। প্রতিষ্ঠানের প্রতিস্পর্ধ্বী ভূমিকায় উপনীত হয়েছে। সে কটাক্ষ যেমন কৌতুক তৈরি করেছে, তেমনই ভিতরে ভিতরে কোথাও একটা খচখচে অস্বস্তিরও জন্ম দিয়েছে (বাংলা ছবিতে যার অন্যতম উদাহরণ হয়ে থাকবে অনীক দত্তের ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’)। ইতিহাস তেমনই বলে।
এবং সেই ব্যঙ্গের তির জলবিছুটির মতো গায়ে বেঁধে, যখন তা নিক্ষিপ্ত হয় পরিচিত তূণীর থেকে। যাঁরা সামাজিক ভাবে পরিচিত, তথাকথিত ‘এলিট’ শ্রেণির মানুষ, তাঁদের পক্ষে এটা করা কঠিন। কারণ, তাঁদের আলমারিও কঙ্কালে ঠাসা। কিন্তু আরিয়ান সেটা করেছেন। তাতে কে কী ভাবল বা না-ভাবল, তার তোয়াক্কা করেননি। তাঁর কাজ দেখতে দেখতে সেই মায়াজগতের বাসিন্দাদের জন্য করুণা হয়, অনুকম্পা হয়। হাসিও পায়। তবে ধরে নেওয়া যায়, তাঁর পিতৃপরিচয়ের কারণে সেটা তাঁর পক্ষে সহজ হয়েছে। বলিউডের রাজাগজারা তাঁকে খানিকটা স্নেহসুলভ প্রশ্রয়ের দৃষ্টিতেই দেখেছেন।
কিন্তু আরিয়ানের সিরিজ় কি শুধু বলিউডেই সীমাবদ্ধ থেকেছে? সম্ভবত না। তাঁর সিরিজ়ে ছাপার অযোগ্য চার অক্ষরের যত্রতত্র এবং অনায়াস ব্যবহার যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে হিন্দি মেশানো ইংরেজি (অথবা ইংরেজি মেশানো হিন্দি) সংলাপ। যা সভ্য, মধ্যবিত্ত এবং তথাকথিত শালীন সমাজে সাধারণত ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু আশ্চর্যের হল, সেই সংলাপ কানে ফোটে না। কেন, কৌতূহল হচ্ছিল। তখনই একটি ইংরেজি নিবন্ধ নজরে পড়ল। নিবন্ধকার লিখেছেন (ঠিকই লিখেছেন), আরিয়ানের সিরিজ়ে যে ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে, সেটাই আসলে নব্যভারতের ভাষা। যে ভারতে ‘কুল’ হতে গেলে এই ‘হিংলিশ’ ভাষা বলা জরুরি। আবশ্যক। প্রয়োজনীয়। কারণ, এই নব্যভারতে ইংরেজি উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতীক। হিন্দি গালিগালাজের। আর ‘হিংলিশ’ অস্তিত্বরক্ষার। এই ভাষা রপ্ত করতে না পারলে আপনি যুগপোযোগী হবেন না। সাফল্যের শেয়ারবাজারে হু-হু করে আপনার দর পড়বে এবং আপনি নাগরিক সভ্যতায় প্রান্তবাসী হয়ে চৌকাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবেন।
কৌতূহল মিটেছে! আরিয়ান খান আসলে বলিউডের মোড়কে সেই নব্যভারতের উপরেই সার্চলাইট ফেলেছেন। সেই জোরালো রশ্মির তেজে রাংতা উঠে গিয়ে বেরিয়ে আসছে ভিতরের ময়লা মাটি। আরিয়ান খান চাঁদের বিভাকে টপকে তার কলঙ্কের দিকে আমাদের নজর ঘুরিয়ে দিয়েছেন। আয়না ধরেছেন নব্যভারতের সামনে। সেই দর্পণে বিসর্জন যাচ্ছে ‘কুল’ ভারতের প্রতিমা।
আরিয়ান খান কি তাঁর বিখ্যাত বাবার কাঁধে চড়েই আরও কয়েক ইঞ্চি উচ্চতা বাড়িয়ে ফেললেন?