Anubrata Mandal

আলো কি ক্রমশ নিভে যাচ্ছে?

ইতিহাস বলে, এই লোককে জীবন সময়ে সময়ে সঙ্কেত পাঠায়— ওহে, সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছ! সময় থাকতে সামলে যাও। যে কোনও অনাচারীকে যেমন পাঠায়।

Advertisement

অনিন্দ্য জানা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২২ ০৭:৩৭
Share:

বঙ্গীয় রাজনীতিতে অনুব্রত মণ্ডলের মতো চরিত্র বিরল। বিরলতমও বলা যায়।

নমস্কার। অনুব্রত মণ্ডল বলছেন?

Advertisement

—বলছি। আপনি কে বলছেন?

আমার নাম অনিন্দ্য জানা। কলকাতার খবরের কাগজ থেকে বলছি। আপনার সঙ্গে একটু কথা বলতে চাইছিলাম।

Advertisement

কটাস! লাইন কেটে গেল। কেটে গেল নাকি কেটে দেওয়া হল বুঝতে পারিনি। তার পরেও কয়েক বার ফোন করেছি। বেজে গিয়েছে। অতএব ধরে নিচ্ছি, বছর দুয়েক আগের সেই দুপুরে লাইনটা কেটেই দেওয়া হয়েছিল। কেন, তা অবশ্য জানতে পারিনি। এখনও পারিনি। কারণ, তার পরে অনুব্রতের সঙ্গে আমার আর কোনও যোগাযোগ হয়নি। কিন্তু তাঁকে নিয়ে আমার বেজায় কৌতূহল ছিল। কারণ, বঙ্গীয় রাজনীতিতে এমন চরিত্র বিরল। বিরলতমও বলা যায়।

সেই কৌতূহল এখনও আছে। বরং বেড়েছে। বেড়েছে কারণ, এক তো তিনি সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। দ্বিতীয়ত, ওই যে, বাংলার রাজনীতিতে এমন নেতা আর নেই।

ওজনদার এবং সতত দোদুল্যমান চেহারা। কখনও ঢুলুঢুলু আবার কখনও গুলিভাঁটার মতো চোখ। হাতের দশ আঙুলে সম্ভবত খানদশেক (বুড়ো আঙুলে পরা যায় না। তবু মনে হয় খানদশেকই। কারণ, ছবিতে ঠাহর করে দেখেছি, কোনও কোনও আঙুলে একাধিক) পাথর-বসানো আংটি। ঢিলেঢালা হাফহাতা কুর্তা আর পাজামা। মাথার কদমছাঁট চুল, ঝুঁপো গোঁফ, ঘন মোটা ভ্রূ, গলায় একাধিক হার-মালা-চেন, ডানহাতের কব্জিতে বাঁধা হরেক কিসিমের মন্ত্রপূত (?) তাগা, তার পাশেই ঝকঝকে রিস্টলেট, বাঁ-হাতের মণিবন্ধে মেটাল স্ট্র্যাপের দামি ঘড়ি— সব মিলিয়ে অনুব্রতের একটা বাঘা উপস্থিতি আছে। সামনে দাঁড়ালে স্নায়ু নিজের বশে থাকে না। কাপড়চোপড় নষ্ট হওয়ার অবস্থা হয়। মেরুদণ্ড বেয়ে একটা তিরতিরে ভয়ের স্রোত নামতে থাকে।

মনে হয়, এই লোকটাই অপরিচিত সাংবাদিকের নাম শুনে বিনা ভূমিকায় ঝপ করে ফোন রেখে দিতে পারে এবং তার পরে আর ফোন ধরে না। এই লোকটাই আগুপিছু না-ভেবে প্রকাশ্য সভায় বিনাদ্বিধায় বলতে পারে, ‘‘পুলিশের গাড়িতে বম্ (‘বোম’ নয়, ‘বোমা’ও নয়। গ্রামীণ হাটুরে ভাষায় ‘বম্’) মারুন! আমি বলছি, বম্ মারুন!’’ বলতে পারে, ‘‘শুঁটিয়ে লাল করে দেব!’’ বলতে পারে, ‘‘ওরা (বিরোধীরা) ইঁদুরের বাচ্চা। শান্তিতে থাকতে হলে ওদের বিষ দিয়ে মারুন!’’ অথবা, ‘‘চোখ রাঙাবেন না। চোখ তুলে নেব!’’ বলতে পারে, ‘‘কব্জি কেটে নেব!’’

এই লোকই প্রকাশ্য সভায় বলতে পারে, ‘‘প্রশাসন আমাদের প্রতি অবিচার করেছে। কোনও নির্দল প্রার্থীকে ভোট দেবেন না। কোনও নির্দল প্রার্থী হুমকি দিলে তার বাড়িটা ভেঙে, জ্বালিয়ে দিন!’’ দলীয় বৈঠকে বলতে পারে, ‘‘ওই বিজেপির মেয়েটা তো? ওকে একটা গাঁজা কেস দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে দে!’’ এক দঙ্গল লোকের মাঝে দাঁড়িয়ে পুলিশ অফিসারকে কব্জির ঘড়ি দেখিয়ে বলতে পারে, ‘‘এখন আমার ঘড়িতে সওয়া ৪টে বাজে। ৮টার মধ্যে ওরা যদি অ্যারেস্ট না হয়, আমি ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়ে দেব! কোনও কাহিনি শুনব না। ভয়ঙ্কর খেলা খেলে দিয়ে যাব! সব জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেব!’’

ওহ্, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগের বিখ্যাত ‘খেলা হবে’ স্লোগানের কপিরাইটও নাকি বীরভূমের এই বাহুবলীর। তার পর তা ছড়িয়ে পড়ে দিগ্‌দিগন্তে। এমনকি, মমতাও নিয়মিত ব্যবহার করতে থাকেন সেই ‘কেষ্ট-বাণী’।

আবার সেই লোকটাই মঞ্চে দুলতে দুলতে, সুর করে বলে, ‘‘শঙ্খ কবি, এ তুমি কেমন কবি? কে তোমার নাম রেখেছিল শঙ্খ? এ তো শঙ্খের অপমান!’’ আবার সেই লোকটাকেই যখন সিবিআই পাকড়াও করে নিয়ে আসে, তখন তার চোখে জল দেখা যায়!

অধুনা দু’জনেই প্রয়াত। কিন্তু মনে আছে, সুব্রত মুখোপাধ্যায় একবার খুব সিরিয়াসলি বলেছিলেন, ‘‘সোমেনকে লোকে যে কেন এত ভয় পায়! কেন যে লোকে ওকে গুন্ডা বলে! ও কিন্তু অসম্ভব ভীতু। একটা পিঁপড়েও মারতে পারবে না।’’ পরে সোমেন মিত্রকে কথাটা জিজ্ঞাসা করায় বিনা জবাবে মুচকি হেসেছিলেন। জরুরি যেটা, প্রতিবাদ-টতিবাদ করেননি। অবশ্য কে-ই বা নিজমুখে বলবেন যে, তিনি ‘গুন্ডা’। কিন্তু সোমেনের মাথার মাঝামাঝি সিঁথি-কাটা তেল চুপচুপে চুল, গলায় সোনার চেন, হাতের আংটি, সোনার রিস্টলেট, বোতাম-খোলা পাঞ্জাবি, কেয়ারি করা গোঁফ মিলে ওইরকম একটা ছবি তৈরি করত বৈকি। তার সঙ্গে ওই ভাঁটার মতো এবং অপলকে চোখে চোখ রাখলে পেট গুড়গুড় করা দৃষ্টি। এই লোককে ভীতু বললে কি চট করে মেনে নেওয়া যায়?

অনুব্রতের ছলছলে চোখ দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল, এই লোকটাও কি ভিতরে ভিতরে আসলে ভীতুর ডিম? ওই ধমকচমক, ওই রোয়াব, ওই বারফট্টাই কি আসলে একটা নির্মোক? ভিতরে এত ভয় আছে বলেই কি কাউকে বাইরে নিজেকে এত ভয়ঙ্কর দেখাতে হয়? নইলে যে লোকটা ওইরকম হুমকি দেয়, তাকে সর্বদা দু’পাশে দুটো লোক দিয়ে টেনেটুনে বা ঠেলেঠুলে নিয়ে যেতে হয় কেন? সবসময় অক্সিজেন-নেবুলাইজার সাপোর্ট দিয়ে রাখতে হয় কেন? যে লোকটা কব্জি কাটার হুমকি দেয়, সে আবার ফাঁদে পড়ে কাঁদে কেন! কেন সিবিআই বারবার ডাকলেও যায় না? উল্টে ফিশচুলা-জাতীয় বিজাতীয় সব অসুখের নাম করে সরকারি হাসপাতালের কেবিনে সেঁধিয়ে যায়? কেন্দ্রীয় বাহিনী যখন বাড়ি ঘিরে ফেলেছে, তখন সে ঠাকুরঘরে গিয়ে দোর দেয় কেন?

নিজের সঙ্গে লোকজন না-নিয়ে অনুব্রত সাধারণত কোথাওই যান না। একা থাকেনও না। ভয়েই কি?

নিকষ্যি ভয় পায় বলে? হয়তো তাই। ইতিহাস তো বলে, একদা কাজল শেখের ভয়ে দীর্ঘদিন নানুরে যাননি অনুব্রত। বস্তুত, সঙ্গে লোকজন না-নিয়ে তিনি সাধারণত কোথাওই যান না। একা থাকেনও না। ভয়েই কি? অনুজপ্রতিম এবং অনুব্রতকে দীর্ঘদিন দেখা সাংবাদিক বলছিলেন, ‘‘সিবিআই হেফাজতে গিয়ে এই প্রথম সম্ভবত উনি একা একা থাকছেন।’’

গ্রাম্য, হেটোমেঠো এবং অতিকথন দোষে দুষ্ট। জিহ্বার উপর লেশমাত্র নিয়ন্ত্রণ নেই। পারিবারিক মশলাপাতির ব্যবসা ছিল। তিন ভাইয়ের মধ্যে মধ্যমকে সেই দোকানে (চাল-ডাল-মশলার মণিহারি দোকান। বীরভূমের স্থানীয় ভাষায় ‘লটকন’-এর দোকান) বসতে দিয়েছিলেন বাবা। বোলপুরের নিচুপট্টিতে তাঁদের পারিবারিক ভদ্রাসনটি একদা নাকি ‘মশলাবাড়ি’ বলে পরিচিত ছিল। লেখাপড়া কম (জনশ্রুতি, ক্লাস এইট পাস)। একটা সময়ে মাছ কেনাবেচার ব্যবসা করতেন (নিজের হাতে আঁশবঁটিতে মাছ কেটেছেন, এমন তথ্য পেলাম না। সেটা আমার অপারগতাই হবে)। আর জমির দালালি। একদা এই ছিল অনুব্রতের আয়।

নিরীক্ষণ বলে, এই লোক সামনাসামনি খুব ‘ডেয়ারিং’ (কৃতজ্ঞতা: রাজকুমার হিরানি এবং ‘মুন্নাভাই’ সিরিজ) হবে। দরকারে উল্টোদিকের লোকটার কলার চেপে ধরবে বা সটান ঠাটিয়ে একটা চড় মেরে দেবে। এই লোকের আপনি-তুমির জ্ঞানগম্যি থাকবে না। সেই কারণেই সে রাজ্যসভার সাংসদ হতে চাইবে না (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উবাচ), ভোটেও দাঁড়াতে চাইবে না। কারণ, লোকটা আসলে রাজনীতিক নয়। নেতা নয়। নেতা বা রাজনীতিকের মতো সাবধানী নয়। এই লোক মেপে কথা বলবে না। এই লোক ঠাকুরদেবতায় অপার বিশ্বাসী থাকবে। স্ত্রীবিয়োগে ভেঙে পড়বে। কন্যার ব্যাপারে অসম্ভব স্নেহপ্রবণ থাকবে। মুখের কথাটি খসাতে না খসাতে মেয়ের কাছে তার ঈপ্সিত বস্তু পৌঁছে দেবে। এই লোককে গ্রামের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে বলা যাবে, বিপদে পড়েছি। একটু সাহায্য করে দিন কেষ্ট’দা।

বলা যাবে না। এখন আর বলা যায় না। যেত। অতীতকাল। পরিচিতরা বলেন, আগের অনুব্রত আর পরের অনুব্রতের ফারাক যোজন যোজন। বীরভূম জেলা তৃণমূলের প্রথম সভাপতি ছিলেন সম্প্রতি প্রয়াত সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দায়িত্ব ছাড়ার পর সেই পদে গিয়ে বসেন অনুব্রত। সেই যে বসেছিলেন, এখনও বসেই আছেন সেখানে। সেই থেকেই তাঁর ‘বদল’ শুরু। প্রথম থেকেই তিনি ‘দিদিভক্ত হনুমান’। যত না ‘দল’ করেন, তার চেয়ে বেশি ‘দিদি’ করেন। মমতা যদি বলেন সাত তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়তে, অনুব্রত চোখের পলক না-ফেলে সেটাই করবেন। কারণ, কেষ্টর স্থির বিশ্বাস, দিদি নীচে জাল পেতে রেখেছেন!

সেই দিদি-সঞ্জীবনীতে ভরসা করেই চলেন অনুব্রত। এখনও। ওই একটি খোঁটাতেই চিরকাল বাঁধা তিনি। খোঁটা বদলায়নি। খুঁটিও বদলায়নি। এই ঘোর দুর্বিপাকেও মমতা প্রকাশ্যে কেষ্টর পাশে দাঁড়িয়েছেন।

বরাবরই হাঁকের লোক, ডাকের লোক, দাপের লোক ছিলেন। রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর পর থেকে অনুব্রত ঠাটেরও লোক হলেন। যিনি জানেন, কী ভাবে নিরঙ্কুশ ভোট জিততে হয়। কী ভাবে সংগঠন হাতের মুঠোয় রাখতে হয়, কী ভাবে দলের অন্দরে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীকে দাবিয়ে রাখতে হয়, সময় বুঝে কোথায় কোথায় গুড়-বাতাসা বা নকুলদানা বিলি করতে হয়।

আশ্চর্য নয় যে, রাজ্যে তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পর লাফিয়ে লাফিয়ে অনুব্রতের সম্পত্তি বেড়েছে। সবই বিচার এবং প্রমাণসাপেক্ষ। কিন্তু সিবিআই তাঁর সম্পর্কে সরাসরি অভিযোগ এনেছে, বীরভূম জেলায় যত বেআইনি বালিঘাট, পাথরখাদান আছে, তার আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ সহগল-লতিফরা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গরুপাচারের সঙ্গেও তাঁকে জড়িয়ে দিয়েছে। এই অনুব্রত বদলে-যাওয়া অনুব্রত। এই অনুব্রত কানে বেশি দেখেন। চোখে বেশি শোনেন। এই অনুব্রতের জীবনে এসেছিল দাপট এবং প্রতিপত্তি বৃদ্ধির নির্ভূল সূচক— নিজের ফোনটি পার্শ্ববর্তী টেনিয়াদের হাতে দিয়ে রাখা। ব্যস্ত ‘দাদা’ কি আর সব ফোন ধরবেন! অনুব্রতও ব্যস্ত হলেন। তাঁর ফোন ধরতে শুরু করল হয় নিরাপত্তারক্ষী বা আমচা-চামচারা। তারা লোক বুঝে ‘দাদা’-কে ফোন দিত।

ইতিহাস বলে, এই লোক আপাতদৃষ্টিতে ভীতিজনক হলেও একটু কাছা-আলগা হবে। চারপাশের লোকের উপর বিশ্বাস করবে। কাউকে বিশ্বাস করবে নথিপত্র সামলে-সুমলে দেওয়ার জন্য। কাউকে বিশ্বাস করবে আর্থিক লেনদেনের জন্য। আর বিকারগ্রস্তের মতো সম্পত্তি বাড়িয়ে যাবে। বাড়িয়েই যাবে।

ইতিহাস এ-ও বলে যে, এই লোকেরা কখনও ‘নেতা’ হন না। তাঁরা আসলে ‘দলপতি’ হন। যে দলপতির জন্য তাঁর চারপাশের লোকজন বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে, তাঁর জন্যই রোজ চন্দ্র-সূর্য নিয়ম করে ওঠে এবং ডোবে। গরমকালে গরম পড়ে। বর্ষাকালে বৃষ্টি হয়। শীতকালে ন্যাপথালিন দেওয়া লেপ-কম্বল বার করতে হয়।

ইতিহাস বলে, এই ধরনের লোককে জীবন সময়ে সময়ে সঙ্কেত পাঠায়— ওহে, সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছ! সময় থাকতে সামলে যাও। যে কোনও অনাচারীকে যেমন পাঠায়। কিন্তু যে একবার শাসনকে কাঁচকলা দেখিয়ে ফেলেছে বলে ভেবেছে, সে সেই সিগন্যাল পড়তে পারে না। আসলে পড়তে চায় না। সে ভুলে যায়, জীবনের ব্যালান্সশিটে শেষপর্যন্ত ডাইনে-বাঁয়ে কোনও গরমিল থাকে না। যা যা হিসেবনিকেশ, সব জীবনই কষে রাখে।

তাই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার চোখের কোলে জলের রেখা দেখা যায়। তখন তাকে খুব সাধারণ মনে হয়। নেতা থেকে তাঁরা নিছক দলপতিতে রূপান্তরিত হন।

শুরুতে কী লিখেছিলাম? বাংলার রাজনীতিতে এমন নেতা আর নেই? ভুল লিখেছিলাম। আমরা যাঁদের ‘নেতা’ বলে মনে করি, তাঁদের উপর শ্রদ্ধা, সম্ভ্রম এবং ভয়ের আলো ফেলি। সেই আলোর বিচ্ছুরণে তাঁদের ঘিরে একটা জ্যোর্তিবলয় তৈরি হয়। যাঁরা নেতা হন, তাঁদের সেই আলোকবৃত্তটি যত্নভরে লালন করতে হয়। জীবনের ‘ডু-জ অ্যান্ড ডোন্টস’ মেনে চলতে হয়। নিজেকে কঠোর অনুশাসন এবং সাধনায় বাঁধতে হয়।

অনুব্রত ‘নেতা’ ছিলেন না। অনুব্রত ছিলেন একজন ‘দলপতি’। গোষ্ঠীপতি। যখন তাঁর মতো কোনও দলপতি বিপাকে পড়েন, তখন তাঁর চারপাশের আলোগুলো একে একে নিভে যেতে থাকে। তখন তাঁদের খুব ম্যাড়ম্যাড়ে মনে হতে থাকে। কারণ, সেটাই সত্য। আর কে না জানে যে, বেশিরভাগ সত্যই ম্যাড়ম্যাড়ে, অনুজ্জ্বল এবং সাধারণ হয়।

দলপতি অনুব্রতকে ঘিরে সেই বিচ্ছুরণটা দেখতে পাচ্ছি না। আলোগুলো কি নিভে যাচ্ছে?

(গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন