Gujarat

বিদ্বেষীরা এত সাহস পাচ্ছে কোথা থেকে!

একে হোলির মরসুম, তায়ে নির্বাচন সামনে। এই রকম পরিস্থিতিতেও দলিত নিগ্রহের এত বড় অভিযোগ সামনে আসায় গুজরাতের শাসকদের নিঃসন্দেহে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯ ০০:১৮
Share:

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

আবার সেই একই লজ্জাজনক পরিস্থিতির সাক্ষী হলাম আমরা। জাতপাতের বিভাজনের শিকার হল গুজরাতের এক দলিত কিশোর। এতটাই উদ্বেগজনক ভাবে ঘটল ঘটনাটা যে, দলিত নেতা জিগ্নেশ মেবাণী গোটা উত্তর গুজরাত অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন।

Advertisement

উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি দলিত ছাত্রটিকে। অন্যান্য পরীক্ষাগুলোয় বসার চেষ্টা করলে আরও বড় বিপদের মুখে পড়তে হবে বলে হুমকি দিয়ে গিয়েছে আক্রমণকারীরা। দলিত কিশোরের অপরাধ? দলিত হওয়া সত্ত্বেও তথাকথিত উচ্চবর্ণের এক কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আক্রমণ করা হয়েছে ওই কিশোরকে। গাছে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।

একে হোলির মরসুম, তায়ে নির্বাচন সামনে। এই রকম পরিস্থিতিতেও দলিত নিগ্রহের এত বড় অভিযোগ সামনে আসায় গুজরাতের শাসকদের নিঃসন্দেহে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। বডগামের নির্দল বিধায়ক তথা দলিত নেতা জিগ্নেশ মোবাণী মাঠে নেমেছেন অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারি চেয়ে। তবে রাজনীতির এই টানাপড়েনের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর এবং উদ্বেগজনক নিগ্রহের ঘটনাটা।

Advertisement

দলিত নিগ্রহের ঘটনা সাম্প্রতিক কালে প্রথমবার ঘটল, এমন নয়। কখনও গুজরাত, কখনও রাজস্থান, কখনও উত্তরপ্রদেশ, কখনও মহারাষ্ট্র— দেশের নানা প্রান্ত থেকে দলিতদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ সামনে এসেছে গত কয়েক বছরে। প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই বিক্ষোভ বড়সড় আকার নিয়েছে। এই সামাজিক লজ্জার বিরুদ্ধে তীব্র কণ্ঠস্বর উঠে এসেছে রাজনৈতিক পরিসর থেকে। কিন্তু দলিত নিগ্রহ বা জাতপাতের বিভাজনে পূর্ণচ্ছেদ টানা যায়নি। গুজরাতের সাম্প্রতিকতম ঘটনাটা আরও এক বার সেই লজ্জার মুখোমুখি দাঁড় করাল গোটা দেশকে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

উচ্চবর্ণের কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগে গুজরাতে দলিত ছাত্রকে গাছে বেঁধে বেধড়ক মার

ভারত আজ আবার সেই প্রশ্নচিহ্নের সামনে? কেন ক্রমশ লম্বা হচ্ছে দলিতদের উপর অত্যাচারের অভিযোগের তালিকাটা? কেন ইতি টানা যাচ্ছে না এই বিদ্বেষে? বার বার যে ভাবে এই সব ঘটনার সাক্ষী হতে হচ্ছে দেশকে, তাতে একটা ধারণা জন্মাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক সময়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বিদ্বেষীরা। দেশের বর্তমান শাসকদের ভাবধারা সম্পর্কে যে ধারণা রয়েছে জনমানসে, সেই ধারণাই কী সাহস জোগাচ্ছে এই দুষ্কৃতীদের? খুব বড় প্রশ্নচিহ্ন এখন এটা।

শাসকের পঞ্চবার্ষিকী মেয়াদ শেষ হওয়ার মুখে। নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে দেশে। শাসক চাইছেন মেয়াদের আরও এক দফা পুনর্নবীকরণ। কিন্তু এই রকম সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না দলিত বিদ্বেষীদের। পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগজনক, শাসক কি বুঝতে পারছেন? শুধু বুঝতে পেরে অবশ্য লাভ নেই। এই জঘন্য বিদ্বেষে ইতি টানা যাচ্ছে কিনা, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন সেটাই। এ প্রশ্নের জবাব দেশের নিয়ন্ত্রকদের কাছে রয়েছে কিনা, জানতে চাইছে গোটা ভারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন