National news

আদিম বর্বরতা স্বর খোঁজার চেষ্টা করল যাজকের কণ্ঠে

নতুন একটা বোতলে আবার সেই পুরনো মদ। নারীর বিরুদ্ধে যা কিছু অপরাধ, সে সবের জন্য নারীই দায়ী— বহু ব্যবহারে জীর্ণ, ক্লিশে এবং প্রত্যাখ্যাত অস্ত্রটা আবার তুণীর থেকে বার করল পুরুষতন্ত্র।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০২:৪০
Share:

ফাইল চিত্র।

নতুন একটা বোতলে আবার সেই পুরনো মদ। নারীর বিরুদ্ধে যা কিছু অপরাধ, সে সবের জন্য নারীই দায়ী— বহু ব্যবহারে জীর্ণ, ক্লিশে এবং প্রত্যাখ্যাত অস্ত্রটা আবার তুণীর থেকে বার করল পুরুষতন্ত্র। আর এ বার সেই কট্টরবাদী পুরুষতন্ত্রের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠলেন কেরলের এক ক্যাথলিক যাজক। জিন্স, শার্ট, টি-শার্ট পরিহিত মেয়েদের গায়ে পাথর বেঁধে তাঁদের জলে ডুবিয়ে দেওয়ার নিদানও দিলেন।

Advertisement

অপরিসীম বিদ্বেষে ঠাসা একটা মানসিকতা। নতুন কিছু নয়। বার বার নিন্দিত হয় মন্তব্যগুলো, বৃহত্তর সমাজ বার বার প্রত্যাখ্যান করে এই তত্ত্বগুলোকে, অবর্জনার স্তূপে নিক্ষিপ্ত হয় অশালীন শব্দগুলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, বার বার ফিরেও আসে তারা।

ঠিক কতটা মূঢ়তা থাকলে এক জন বলতে পারেন যে পুরুষকে ধর্ষক বানানোর কারিগর নারীই, তার পরিমাপ অত্যন্ত দুরূহ। তাই নিন্দার শব্দ কতটা কর্কশ হওয়া উচিত, সে বিচার এখানে অর্থহীন। তবে এই মূঢ়তা যে আদিমতম বর্বরতা থেকেই জাত, সে নিয়ে সংশয় নেই।

Advertisement

গলদের শিকড়টা সমাজেরই কোনও না কোনও অন্ধকার প্রান্তে নিহিত। সভ্যতা অভূতপূর্ব মোড়ে পৌঁছে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু সামাজিক অন্ধকারগুলো নিঃশেষে মুছে যায়নি এখনও। সেই অন্ধকারগুলোই মাঝেমধ্যে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়, অযাচিত ভাবে মাথা তোলে। কখনও নেতা সেজে, কখনও সমাজের উদ্ধারকর্তা সেজে, কখনও যাজক সেজে, কখনও ধর্মগুরু সেজে। বার বার প্রয়োগে হাতিয়ার তার ধার হারিয়েছে, ভারও হারিয়েছে। এই বিদ্বেষ কোনও আলোকপ্রাপ্তের উপরেই আর প্রভাব ফেলতে পারে না। কিন্তু আদিম অন্ধকারের দাসানুদাসরা অসহায়, এই বিদ্বেষ বিষ ছাড়া আর কোনও অস্ত্র তাঁদের অস্ত্রাগারে নেই। কোণঠাসা হতে হতে সভ্যতার দেওয়ালে এক দিন মিশে যেতে হবে এই অন্ধকার-পীড়িতদের। কিন্তু যত দিন না সেই সন্ধিক্ষণ আসছে, তত দিন নিজেদের অমোঘ ভবিতব্যকে রোখার নিষ্ফল প্রয়াস এঁরা চালিয়ে যাবেনই। কেরলের ক্যাথলিক যাজক সেটাই আরও এক বার প্রমাণ করলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন